আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥ ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে, মরি হায়, হায় রে— ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥ কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো— কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে। মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো, মরি হায়, হায় রে— মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি॥ তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিলে রে, তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি। তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে, মরি হায়, হায় রে— তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি॥ ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে, সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে, তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে, মরি হায়, হায় রে— ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি॥ ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে— দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে। ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে, মরি হায়, হায় রে— আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ ব’লে গলার ফাঁসি॥ আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। Lyrics by: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর Music by: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Saturday, October 29, 2011

ত্রিমাত্রিক স্থানাঙ্কে হারানো মন

আমি বাস করি আলো আর অন্ধকারে
ভূগোলের প্রথাগত সীমারেখা ছাড়িয়ে
উপস্থিতির সঠিক সংবেদনশীলতার বর্ণনা
শব্দেরাও আর দিতে পারে না
ত্রিমাত্রিক স্থানাঙ্ক শরীরকে চিহ্নিত করতে পারে;
কিন্তু হৃদয়ের হদিস যন্ত্র থেকে দূরে, বহুদূরে।।

আজ আলোতে একা নই, একা নই অন্ধকারেও
আলোর কায়া আমায় ছায়া সঙ্গী দেয়
আলো উবে গেলে ছায়াও নিভে যায়
কিন্তু এক অস্পৃশ্য বোধ
মাথার ভেতর মাথা নাড়ে
হৃদয়ে নিরন্তর পায়চারি করে
আলোতে আর অন্ধকারে।

হাতে সে হাত রাখে
আমি আমার অতীত ভুলে যাই
বর্তমান আমার কাছে ম্লান হয়ে আসে
আর ভবিষ্যত প্রচণ্ড অর্থহীন মনে হয়।

চারপাশের পৃথিবীর ব্যস্ততা বৃথা মনে হয়
স্থবির হয়ে বসে থেকেও অনেকটা পথ পাড়ি দেই কল্পনায়
মননের স্বপ্ন করতলে পরস্পরের সান্নিধ্যে উষ্ণ হই
সে উষ্ণতায় প্রেম নেই; ব্যাখ্যাতীত এক বোধ মিশে থাকে।

সে স্পর্শ আমাকে পালটে দেয়
আমার ভেতরে তুমুল ঝড় বইয়ে দেয়
আমার ভেতরটা লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবার উপক্রম হয়
আমি নিজেকে চিনতে পারি না
আমি আমার চারদিককে নতুন বলে আবিষ্কার করি।

মানুষে-মানুষে সহজ সম্পর্ককে আমার মেকি বলে মনে হতে থাকে
প্রেমকে আমার শরীরের স্বাদ-আস্বাদন বলে মনে হয়
স্নেহকে প্রাণের অনন্ত আহ্লাদ হয়।।

নিজেকে এই পৃথিবীর মাটি-জল-সংগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন
এক সত্ত্বা বলে মনে করা আমি বোধের কাছে আত্মসমর্পিত হই।

বদলে দিতে থাকা এই দূর্বোধ্য বোধ এর সঙ্গ অসহ্য বোধ হয়
আমি তার হাত ধীরে ছেড়ে দেই
দ্রুতলয়ে হাঁটতে থাকি তাকে পেছনে রেখে
আমি তাকে মেরে ফেলতে চাই গলা টিপে
মড়ার খুলির মতো ধরে আছাড় মারার ভয় দেখাই
সে বিচলিত হয় না
আমার পিছু নেয় নাছোড়বান্দার মতো
আমার ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে আমাকে অনুসরণ করে
ক্লান্ত আমি একসময় তাকে সামনে যেতে বলি
সে আমাকে পাশ কাটায় না
সে আমাকে অতিক্রম করে না
সে আমার পিছু পিছু হাঁটে, আমি থামলে সে-ও থেমে যায়
পরাজিত আমি তার কাছে আত্মসমর্পিত হই
তাকে পেছনে রেখে পথ পাড়ি দিতে আমার অস্বস্তি লাগতে থাকে
পুনরায় আমি তার হাত ধরে পাশাপাশি হাঁটতে থাকি
আমি আবার আলো আর অন্ধকারের পথে হাটি
একলা আমি
মৃত আমি
সে মৃতের আলো-অন্ধকারের অনুভব থাকে না।

2 comments:

  1. এটা তো কুহক দা এর কবিতা। আপনার অন্তত কবিদের নাম গুলো দেয়া উচিৎ ছিল। আপনাকে শেষ বারের মোট বলছি। নইলে প্রথম আলো ব্লগ মোডারেটর কে বলে আপনার ব্লগের বিরুদ্ধে অ্যাকশন এ যাব।

    ReplyDelete