আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥ ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে, মরি হায়, হায় রে— ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥ কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো— কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে। মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো, মরি হায়, হায় রে— মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি॥ তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিলে রে, তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি। তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে, মরি হায়, হায় রে— তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি॥ ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে, সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে, তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে, মরি হায়, হায় রে— ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি॥ ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে— দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে। ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে, মরি হায়, হায় রে— আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ ব’লে গলার ফাঁসি॥ আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। Lyrics by: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর Music by: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Saturday, November 5, 2011

পাথরের পরকীয়া পাপ


বুকের জ্বলন নেভে না ক’ফোট নয়না-সারে
স্মৃতির দুয়ারে মাথা-কুটে ভাঙ্গে সব আগর
অ-সন্মানের ধৃষ্টতার দেয়াল ভাঙ্গে না,

স্বর্গের কপাট খুলেছি, দেবী
স্বেচ্ছাচারী বেভুল বসন্তের ছায়ে
গায়ে জড়িয়েছি আজ রঙিন কাফন,

দেহের উষ্ণতা যদি মনের বাহুডোর ডাকে
বুক ভরা অবোধ্য আবেগ যদি উদ্বাহ নৃত্য করে
তবে আর কাব্য লিখে শব্দের অপচয় করবো না

তার চাইতে লাইসেন্স বিহীন দোনলা বন্দুক হবো
আগুন ঝরাবো লিবিয়া, ইরাক কিংবা আফগানিস্তানে
তখন সে শব্দ-গুলো দিয়ে মানবতার গুলি বানিয়ে নিবো,

যে শব্দে বলতাম ভালোবাসি
হর্ষ-বিষাদকে আজ দিয়ে দিলাম ছুটি
কারণ, তুমি আর আমায় ভালো বাসো না।

দুরন্তপনার শিখরে আজ আমি পথভ্রষ্ট লম্পট
আমি দ্যা ভিঞ্চির অসমাপ্ত লেখচিত্র
মেরিলিন মনরোর কামনার হাসি
হোমারের অসমাপ্ত পর্ণো-কাব্য
রুশদির ঈশ্বর ব্যাঙ্গর দোলনা,

আমার কুশপুত্তলিকায় আগুন দিতে আসো
স্বৈরাচারী শাসক উল্লাসে স্মিত হাসুক
নজরুলের বিদ্রোহী উপহাস করুক
রুদ্রের দ্রোহ মুক্ত ফুটপাথে হাটুক
রশিদ ভাইতো আর স্থির চিত্র তুলবে না
ভয় নেই
চলে আসো
একদলা থুতু দিতে
আমি ঘেন্না নিয়ে সুখী হবো।

আমি জেনেছি
উনুনে ক্ষুধার জঠর অঙ্গার হয়
কঙ্কালসার বাদামী-ত্বক ছড়ায় ছিবড়ের শুষ্কতা
বঞ্চিতের বিপ্লব হোক কাব্য শ্লোগানের হাতিয়ার
শোষকের চোখে ছুড়ে দিবো দ্বিধাহীন বিষমাখা শব্দ-তীর

কেনো জানো? আমি
ক্লিওপেট্রার হাবশি ক্রীতদাস হবোনা
ডায়ানার মতো পাপারাৎজির দানো হবো না
ফিদা হুসেনের নারীশিল্প দেখে বাহ সুন্দর বলবো না
বনস্পতি ঘ্রাণে সুস্নিগ্ধ আগুনে দেহের ভাঁজ খুঁজবো না
ভর দুপুরের তুমুল যৌবনে সঙ্গমের হাহাকার করবো না
পুংশক-ধর্মে প্লেটোনিক প্রেমের উন্মেষ তুমি’তো আর বোঝো না।

তবু সব ভুলে
আজ যদি স্পস্ট বলি
গেরস্থালীর খুনসুটি থাকুক তোলা
চলো রাধাচূড়া ফাল্গুনের সাথে দেহাতী পথে
নি:সঙ্গ ঘুঘু’রা কান্না করুক ডাহুক কণ্ঠের গানে
প্রেমাষ্পদ রুপোলী চাঁদ নিদারুণ অভিমানী হয়ে যাক
ময়ঙ্ক-বানে মুক্তোদানা জোঁনাকগুলো আজ অন্ধ হয়ে যাক

তুমি কি আসবে?
জানি তুমি আর সাহসী হবে না
তাই, আমার স্বরূপটা’ই বলবত থাক
আমি’তো সৎকার’হীন উঠে আসা চণ্ডাল
অঙ্গে থাকুক মাৎসর্য দাহনের নিপতিত দর্পক
এ সব আজ তোমার কাছে রহস্যের পরকীয়া পাপ
তবে থাক তা যতনে, পাথর হয়ে বহ্নিমান গাত্র দাগ।।

No comments:

Post a Comment