আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥ ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে, মরি হায়, হায় রে— ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥ কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো— কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে। মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো, মরি হায়, হায় রে— মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি॥ তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিলে রে, তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি। তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে, মরি হায়, হায় রে— তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি॥ ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে, সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে, তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে, মরি হায়, হায় রে— ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি॥ ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে— দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে। ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে, মরি হায়, হায় রে— আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ ব’লে গলার ফাঁসি॥ আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। Lyrics by: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর Music by: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Thursday, December 29, 2011

প্রস্তাব

undefined
সেদিন পথে মুখোমুখি চোখাচোখি
বুকের মাঝে ধুপধাপ দাপাদাপি,
হঠা৭ থমকে তাকে দিলাম চমকে
বলেই ফেললাম বড্ড সাহস নিয়ে-
"Excuse me"
কিছু কি বলবেন নাকি?
আমি অতোটা সাহসি নই যে
আপনাকে কিছু বলতে পারি।
তাতো বুঝতেই পেরেছি ক'মাসে
শুধুই যে দেখেছেন চুপিসারে!
তা জনাব,জানতে কি পারি কারন খানা
নাকি জনাবের ঐ কারন টাও অজানা।
বলবো কি আর দেখলেই অবস্থা শেষ
বুঝে নেননা হৃদয়ের টান যে অশেষ!
এতোই যদি লেগেছে টান
দূরে দূরে কেন বোকারাম;
পিছে কেন আসুন না পাশে
ভীরুতা কি পুরুষের সাজে?

ভালো আছি.....

ভালো আছি.....

undefined

প্রতিদিন তোমাকে একটু একটু করে চিনছি আমি .......
একটু একটু করে ভালবাসছি....
কোনো স্বপ্ন রচনা করার আশা আমার নেই.....
তোমার আশা,যাওয়ার কোনো সময় নাই.....তোমার ইচ্ছেমতন ই তুমি আস আর যাও ......
আমাকে দোলা দিয়ে দিয়ে যাও.......
দোল খেতে আমার কিন্তু খারাপ লাগেনা....
আমি ছুটে যাই অনেক দূরে ....দূর দূরান্তে....তোমার হাত ধরে......
নিঃশব্দ কথামালা দিয়ে তৈরী আমাদের ভালবাসার ঘর.....
যে ঘর নিজেদের হাতে আমরা সাজাই..............
যখন আমাদের বরাদ্দকৃত সময় শেষ হয়ে যায়......
আমরা ফিরে যাই আমাদের অভিনয়ের জগতে.....
রয়ে যায় রেশটুকু.......অফুরন্ত ভালোলাগার......
আমি ভালই আছি তোমার সাথে........
তুমিও ভালো থেকো.......


_____________
মেঘলা_দুপুর

তোমার জন্য কবিতা

তোমার জন্য কবিতা



তোমার জন্য কবিতা-
আমি আমাকে ভুল করে কবি ভাবি
যখন তখন লিখতে বসি
যৎসামান্য ভাব এলেই।

সে মেয়ে যে পৃথিবীর মুখ দেখেনি
আমি তার কন্ঠে ভালোবাসার কথা শুনি।
যে ফুল আজো ফোটেনি
তার মনের ভাব পড়ে ফেলি অনায়াসেই।

সে গাছ যার এখনো ভ্রুন জন্মেনি
আমি তার অজস্র ডালপালার
ঝিকিমিকি রোদের সাথে প্রেম করতে দেখি;
ছায়া দেয়ার সহানুভূতি অনুভব করি।

যে আগুন আজো বিরাট আকার ধারন করেনি-
সে আগুন পুড়িয়ে ফেলেছে
নগর, জনপদ, বনজঙ্গল
এই আমি ভাবি।

আমি প্রেমান্ধ ছিলাম না বলেই
আমার ভাব সংক্ষিপ্ত
তারপরও তোমাকে ভাবি।
সে মানুষ যাকে আমি ভালোবাসি
স্বপ্নে তার ছবি আঁকি।



_____________রিয়া হাবিব

এসোনা আর...প্রেম

প্রেম প্রেম প্রেম; ভুলেও এসোনা আর
উঁকি দিওনা নড়বড়ে দোচালা টিনের ফাঁকে
হা-ভাতের মতো এসে বসোনা বৈশাখী ঝড়ের থাবায়
পড়পড় বাঁশের খুটির গোড়ায়;
কালো মাটি কামড়ে পড়ে থেকোনা বেহায়ার মতো
পাপিষ্টের হাসি হেসোনা অমায়িকের ছদ্মবেশে
আসতে পারবোনা আর অনাবিল হেসে...

মুমূর্ষ পিতা আমার বিনা চিকিৎসায় দু'চোখ
বুজেছিল এই খুটির গোঁড়ায় ;
নরপশুর হাতে ছিন্নভিন্ন ফুটেফুটে অবুঝ
কিশোরী বোন আমার চিরআশ্রয় ভেবেছিল একে
সঙ্গে করে কেবল প্রিয় খেলার দড়ি;
অসহায় মা আজো নীরব অশ্রুতে ভিজিয়ে
আকুল সিজদায় নত হয়;
জননেতার ফসকে যাওয়া গুলিতে
পা হারানো সোমত্ত ভাই; অযথাই অশ্রাব্য
গালি ছোঁড়ে ক্রমাগত...
নিত্যদিনের সংগ্রামে ব্যর্থ সময়ের সর্বংসহা
অক্ষম আমার সমস্ত অব্যক্ত আক্রোশ
জ্বলন্ত চোখে ভস্বীভূত করে শতবার স্বভাবত...

এসোনা প্রেম ,এসোনা আর
বেবুশ্যে নর্তকীর নিক্বণ শোরে
নারীখেকো নিশাচরের অর্থের ঘোরে
ছয় ঋতুর ছয় সঙ সেজে
এসোনা আর...প্রেতাত্মার কেষ্ট হেসে
আসতে পারবোনা আমি আর অনাবিল হেসে...।।


_______________পাহাড়ী

তোর জন্য কাব্য

এবারের শীতের হিমেল হাওয়া অতিথি পাখীর সাথে-
তোকেও নিয়ে এলো আমার একঘেয়ে জীবনে।
তুই আমার জন্য সবুজ হ, আমি ঘাস ফড়িং হবো
কুয়াশা আর ধুয়াশা কোনটাই আমার ভাল লাগে না,
আমি আলো চাই, চাই স্বচ্ছতা..
যদি চাস তো শিশিরে স্নান করতে পারি।
যাপিত জীবনের কষ্ট ভুলে যা, হাসির শব্দ শুনিনি অনেক দিন
একটু হাস তো প্রাণ খুলে আমার জন্য, শুধু আমার জন্য কিন্তু!
তোর চা আর মুড়ির নিমন্ত্রণ আমি লকারে রাখলাম
দেখিস ঠিক এসে একদিন তোর দরজায় কড়া নাড়বো।
শোন তোকে আর ভাঙ্গা কাঁচের গ্লাস জোড়া লাগাতে হবে না।
কাঁচ একবার ভেঙ্গে গেলে যতো ভাল আঠা দিয়েই-
লাগানো হোক না কেন তার দাগ থেকেই যায়।
ফেলে দে ভাঙ্গা কাঁচের গ্লাস।
এবার আমার মতো একটা ইস্টিলের গ্লাস ব্যবহার কর
হয়তো দাম নিয়ে গর্ব করতে পারবি না;
তবে যত্ন করলে সারা জীবন ব্যবহার করতে পারবি,
পরে গেলেও ভাঙ্গবে না।
একটু রোমান্টিক হয়ে গেলো নাকি? হোক ॥তাতে কি?


____________সৈয়দ মাজারুল ইসলাম(রুবেল)

ভালোলাগা,ভালোবাসা

কখনও কখনও জীবনটাকে ভীষন বিষণ্ণ মনে হয়,
হারিয়ে যায় সব ভালোবাসা, ভালোলাগা।
নীল আকাশে কালো মেঘের আনাগোনা।
অসহনীয় এক একাতীত্ব।

কখনও কখনও জীবন ভারী রহস্যময়,
ভাললাগার তরুলতায় ঘেরা, এক অজানা পুরী।
আঙুরলতার আনাগোনা,
ভালোবাসার ছোঁয়া।

সেই ভালোলাগা, ভালোবাসা।
মনের কুঠিরে তার আনাগোনা,
আবারও হারিয়ে যাওয়া,
ভালোলাগা, ভালোবাসা।


____________রোদেলা কাব্য

Monday, December 26, 2011

ধ্রুব বেদনা

undefined

আধঘুমে পৃথিবীর সব প্রানী তন্ময়
শিশির কুয়াশায় ,কিছু ভুল সময়
আজো তার পাশে , ঘুমন্ত ভুল সময় !
লোভহীন শ্বাপদের মত যে নিশাচর
টুকরো টুকরো করে শুভ্র জোছনার ছায়া ,
কেউ কি দেখে তার বেদনা ?
নাবিকের কম্পাসের মত ধ্রুব বেদনা ...।

কতদিন ঢেউ এসে ছুঁয়ে গেছে তার,
না ভেজা কাপড়ের যে তীব্র আকাঙ্ক্ষা ,
কি করে বোঝাই তারে ?
সবাই কি পায় ছুঁতে শীতল অনুভূতি !
এই পৃথিবীতে ?



__________মীরের লেখা

জেগে উঠো

প্রিয়তমা সুন্দরী, তোমার বিন্দু বিন্দু চোখের জল
বহমান স্রোত, মেঘনার ঢেউয়ের মত অবিরল
কোন দূর্যোগের ঘনঘটায় তোমার বিমর্ষ বদন?
কোন মোহনার বুকে ঝড়ে পড়ে তোমার করুণ রোদন?
কোন স্মৃতি? কোন বিপদে তুমি এত বিমর্ষ?
কোন দুঃখের অপঘাতে তোমার হৃদয় পুড়ে ভস্ম?
বলো কেন তুমি কাঁদো? কেন অশ্রুবর্ষণ অঝোরধারায়?
এ কোন অশনি সংকেত তোমার দু চোখের তারায়?
এ কেমন অভিমান? এ কী সূচনা কোন বহ্নিশিখার?
এ কী পূর্বাভাস কোন দাবানলের কিংবা প্রলয়শিখার?
এ কান্না কী অজস্র ক্ষুধিতের? অজস্র ব্যথিতের সুকরুণ সুর?
নাকি টর্নেডো ঝড়ের রাত্রিগত কোন ভোর?
কেন প্রিয়া? কেন তুমি হও নি এখনও ক্ষান্ত?
বন্ধ কর কান্না, হও এবার শান্ত

বলল সে আমায় `কেন আমরা আজ শ্রান্ত-ক্লান্ত?
কেন আমরা প্রতিনিয়ত হচ্ছি দিকভ্রান্ত?
কেন দিনে দিনে ইসলামের রবি বিমলিন?
কেন আমরা ফিরে পাচ্ছি না সোনালী সেদিন?
কেন আমরা আজ দিশেহারা?
কেন আমরা বিচ্ছিন্ন, ছন্নছাড়া?`

কোথায় আজ ফররুখ আহমদের সাত সাগরের মাঝি?
আমাদের বিপদ ঘনায়ে আসিছে, জাগিতে হবে আজি
সকলে মিলে সংগ্রাম কর, ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে ছুট
হে মুসলিম জাতি! জেগে উঠো, জেগে উঠো

১৬।০৪।০৫, পাবলিক লাইব্রেরী, ফেনী।

মেঘের ছায়া…

undefined

আমি হয়েছিলাম তোর
সবটুকুই তোর,
তুই হোসনি কখনোই আমার
আমাদের তাই এক আকাশে উড়া হয়নি।

পুড়িয়েছিলাম আমার মন
অনন্ত অনলে,
সেই আগুনে পুড়াসনি তুই
তোর জলে ভেজা মন
তাই জ্বলেনি দাবানল।

গহীন অধরে ডুব দিতে চেয়েছিলাম কতবার
তুই চাসনি ডুবতে
আমাদের জলে ভাসা হয়নি,
যুগল পদ্ম হয়ে উঠা হয়নি আমাদের।

আমার কিছুই তোর হয়নি কোনদিন
আমার কিছুই তুই তোর নিজের করে নিসনি
তাইতো পুর্বসম একা আমি
অনন্ত আধাঁরে
নিরুদ্দেশের পথযাত্রী।

মায়াবতী মেঘের ছায়া
সরে গেছে সেই কবে কোন দূরে
আমার আসমানে এখন
একলা চিল শুধু উড়ে।

______নীলসাধু

তুমি যেন এমন না হও!!!

undefined
তুমি যেন এমন না হও
যাকে দেখে আমি সোনালী ভোরের কমলতা
ভুলে তার দাবদাহে জ্বলি!

তুমি যেন এমন না হও
যার রূপ দেখে আমি পূর্ণিমার সৌন্দর্য ভুলে
রাতের নিরঙ্কুশ কালোকে দেখি!

তুমি যেন এমন না হও
যার জন্য বসন্তের আবেশকে মারিয়ে
শীতের তীব্রতায় কাঁপি!

তুমি যেন এমনও না হও
যাকে দেখার আশায় আমি অম্বর পানে চেয়ে
ধ্রুবজ্যোতির বিপরীতে শুধু অন্ধকার দেখি!

তুমি যেন এমন না হও
যার জন্য আমি প্রান্তর পর প্রান্তর চলে
দেখি শুধু রুক্ষতার সমাদ্রি!

তুমি যেন এমনও না হও
যার জন্য আমি আমার অসীম চাওয়ার আদলে
দেখি নিঃস্বতার ছড়াছড়ি!

তুমি যেন এমন না হও
যাকে ভেবে আমি প্রমোদিত হওয়ার বদলে
বিষাদে মুখ বাঁকিয়ে থাকি!

তুমি যেন এমনও না হও
যাকে আমি ভুলে গিয়ে নতুন স্বপ্নে
বাঁচার সাধ করি!

তুমি যেন এমন না হও
যাকে দেখে আমি ভালোবাসার কথা
ভুলে মনে অনুশোচনার ঝড় তুলি।

________দীঘি

নিষিদ্ধ কাব্য

undefined
অদ্ভূত ভালোবাসা সেই বৃষ্টির রুপোলী ফোঁটায়
কদমের ঘ্রাণ তুলেছিলো অনায়াসে
তড়িত স্ফূলিংগের আকস্মিক রঙের ঝালর,ঝিলিক
স্পর্শে পুরো প্রান্তর জ্বলেছিল অপ্রয়োজনে
কি ভীষন বিরক্তি;হঠাৎ স্পর্শ ছিন্ন স্বর্ণ হাতে
অস্বস্তির আসর;আঁধারসন্ধ্যার প্রেম সময়ে
বনজোৎস্ন্যার সুরের মূর্ছনার মাতাল ছোঁয়ার
অভিমান ভাঙা ব্যঞ্জনায়...

ধ্রুবতারা ঝরলো হঠাৎ খেয়ালের হেলায়
শরতের ধূসর মেঘ অনুভূতিহীন অগোচরে
হৈমন্তীর আঁচল উড়েনি উত্তরী হাওায়ায়
নবান্নের রঙের আয়োজনে...

পৌষের কাঁচশিশির কষ্ট সুখের আভায়
সুর তুললো গাঢ় কুয়াশার আস্তরণে
প্রচন্ড অনিচ্ছায়;সূচালো আঁচড়ে রক্ত ফোটে
লুকোনো সুপ্ত বিরহের আতিশয্যে;
এখন...কুয়াশার অভেদী আস্তরে পুরো প্রান্তর
আঁধার সন্ধ্যার অহেতুক আগমনে
একটু ওমের জন্য উত্তাপহীন আগুন জ্বালি
আলোর তৃষ্ণায় একাকী রাত্রিজাগা চাদরে॥

______পাহাড়ী

সাদা প্রজাপতি!

মেয়ে, তুমি কি জান? তোমাকে একটা কথা আমি বলতে চেয়েছিলাম। চিত্তের চিত্তাস্থলের অভ্যন্তরীণ ঠিক মধ্যবিন্দু থেকে বলতে চেয়েছিলাম। জান কি তুমি?

বিকেলের নরম শুভ্রালোয় তুমি দেখতে অপূর্ব-অপরূপা; .. না , এই কথাটা নয়।

এলোমেলো এলোকেশে নিদারুণ সৌন্দর্যে উচ্ছল উদ্বেল তুমি; ...আমি না এটাও বলতে চাইনি।

একটুখানি মজার কথা শুনে সহজেই ফিক করে হেসে ফেলতে তুমি, তখন যে কি পবিত্রই না লাগতো তোমায়.. আমি কিন্তু এটাও তোমাকে বলতে চাইনি।

যখন তুমি চোখ বন্ধ করতে চোখের পাপড়িতে যেন হঠাৎই আড়াআড়ি স্বপ্ন আর আশা খেলা করতো.. কি আশ্চর্য! এটাও আমি তোমাকে বলতে চাই নি।

তোমার নিমিত্তে সহচার্য পাবার সময়টুকু আমার কাছে যেন ছিল স্রষ্টার আশীর্বাদ এর নামান্তর .. এই অনুভূতিও তোমার কাছে আমি ব্যক্ত করতে চাইনি।

তোমার হাতের এক মুহূর্তের স্পর্শটুকু আমি অনুভব করতে পারতাম সহস্র মুহূর্ত ধরে.. এটাও কিন্তু আমি তোমাকে জানাতে চাই নি।

সাগরের নীলজলের মাঝে স্বপ্নস্নাণ করতাম আর ভাবনা করতাম হয়তোবা তোমার স্বপ্নও আমার সাথে মিলে যাবে,মিলেমিশে একাকার হবে.. স্বপ্নের কথা তোমার পানে আমি আনতে চাইনি।

তোমার তনুর উত্তাপ কাছ থেকে অনুভব করতে পেতাম, ঐ সময়টুকুতে চিন্তা খেলা করতো-আমিও যদি উষ্ণ হতে পারতাম তোমার মতো? .. আমার এই চিন্তাভাবনার খোরাকে তোমাকে চিন্তিত করতে চাই নি।

বাহ্যিক সৌন্দর্যের সাথে তোমার মনের সৌন্দর্যও অনন্য, অসাধারণ চিন্তাধারায় তুমি অতুলনীয়, অভাবনীয় মানবতায় তুমি মমতাময়ী, চিত্তে চিত্তে মানবের নিমিত্তে তোমার সকল চিন্তা আর আশার পরিণতি.. এই কথাটি আমি তোমাকে জানাতে উৎসুক হতে চাইনি।

মনে আছে, একদিন বলেছিলে তুমি.. আমাকে একটা প্রজাপতি এনে দিবে?সাদা প্রজাপতি!! আমি জানতে চেয়েছিলাম- কেন?
তুমি বলেছিলে- আমি না সাদা প্রজাপতি অনেক ভালোবাসি।
তখন শুধু একটি বারের মতো বলতে চেয়েছিলাম, আর আমি তোমাকে ভালোবাসি॥ অনেক ভালোবাসি!!



______নিঝুম অরণ্য

থরথর কাঁপুনি

দুটি ঠোট একেবারে কালো রং হয়েছে
সারা শরীর কেমন যেন অনুভূতি
ভয়, লজ্জা, সংকোচ
ক্ষুধা, পিপাসা, ব্যথা
এসব কিছু না ।

কেমন যেন কষ্ট
কোথাও কোন ক্ষত নেই
কোন জ্বর বা অসুখ নেই
কোন অভাব বা কোন বেদনা নেই
এমন কষ্ট, বুঝানো যাবেনা মুখে বলে
দেখানো যাবেনা কোথায় ব্যাথা
কিন্তু শরীরের হাড় পর্যন্ত কি যেন কষ্ট
অনেক বড় কষ্ট
ঠান্ডার কষ্ট
অনুভূতিতে যন্ত্রনা
কাঁপুনিতে থরথর সারা অঙ্গ
তাইতো কষ্ট
তাইতো শিতলতার বেদনা
বলা যায়না
দেখা যায়না
শুনা যায়না
শুধু অনুভবে এ যন্ত্রনা ।

সত্ত্বার দ্রোহিনী

কঙ্কন বিদ্রোহিনী, ওগো আত্মার দ্রোহিনী!
সহস্র আশা আর বিস্তৃত ভালোবাসা
বুকে জড়িয়ে বিশ্বাসের আদর মেখেছিলাম প্রেয়সিনী
তুমি সেই বিশ্বাসের প্রাচীর ভঙ্গকারিনী!!

ধিক্কার তোমায় ধিক্কার!
কি আছে আর অধিকার-
তোমায় ফের জড়িয়ে নেবার?

বিশ্বাস সেতো পবিত্র এক স্বত্তিয় অনুভূতি,
ভাঙবেনা ভাঙবেনা – গেয়েছিলাম তোমার স্তুতি
সত্য-মিথ্যার ভেদাভেদ ভুলে কতশত মাতামাতি
ছি! আজ সব পাল্টে গেলো রাতারাতি!!

সময়ে সময়ে অসময় মেনে না নিয়ে
দু’জনে চড়ে বেড়িয়েছি জগৎ বিঁভুয়ে,
আজ শুধু কষ্টের মিলনমেলা,
বিশ্বাস ভেঙ্গে চুরে একাকার-হায়রে ছেলে খেলা!!

মনে মনে আঁকিবুঁকি, তোমায় নিয়ে আশা
ছলকে ছলকে উঠে আজ নিঃস্ব ভালোবাসা!
পাল্টে পাল্টে নিয়েছ তুমি পুরানো বেশভূসা
আমায় নিয়ে ভাবনা কর কি তুমি, একটুখানি তৃষা?

উন্নাসিক তুমি, তুমি পরম ছলনাময়ী
শেষবধি হয়েছ তুমি মোর আত্মাক্ষয়ী
সমাপ্তি তাই সমাপ্তি টানছি, নিস্তার হল তোমার!
মুক্তি দিলাম তোমায় আজ, দিলাম কৃপা বিধাতার!

__________ নিঝুম অরণ্য

Wednesday, December 21, 2011

আঁধার রাতের দীর্ঘশ্বাস হাওয়া বয়ে বেড়ায়

এই তো সেদিন
তোমাকে দেখতে দেখতে, অবেলায় দিনটা শেষ হল
সনাতন নিয়মে দুপুর গরিয়ে সাঁঝ হল।

তোমাকে দেখবে বলে
হ্যামিলনের বাঁ‍শিওয়ালা মত পিছনে ছুটতে লাগলো
রাতের হরেক রকম পোকামাকড়;
আর ঝাঁক ঝাঁক জোনাক বাতি জ্বেলে,তোমাকে ‍ঘিরে রাখল,
নিয়ন আলোর মত করে!
সখীরা মিলে নওবত সানাই বাজায় ঝিঁঝির;
এদিকে জ্যোত্স্না তার,
যৌ‍বন উন্মাদনা বিভাস পাতার ফাঁ‍ক দিয়ে
তোমার উচ্ছ্বল চোখ মুখে ঝিলিক পরছিল; যেন উন্মুখ রাজহংসী
কপোত বিরহে উদাস।

কঙ্কাল রাত পাহারায়
ঘুম নাই আঁধার চোখে, যত সামান্য আলো তাও পারলে
চুঁইয়ে পরা শিশির ফোটার মত চুমুকে নিঃশেষ করে।
এই রাত ছিল তোমার,
বিরহের কঙ্কাল খতিয়ান! জড়পদা‍র্থের স্পর্শ চুম্বন
আঁধার রাতের দীর্ঘশ্বাস হাওয়া বয়ে বেড়ায়।

আমি তোমাকে ভালবাসতে চাই

আমি তোমাকে ভালবাসতে চাই সবুজ ঘাসের মতো
হয়তো কোমলে-কিংবা শরীর ঘষে মনের মতো
রাঙিয়ে ফুলে কিংবা দেহে উষ্ণভরা স্পর্শে,
আমি তোমাকে ভালবাসতে চাই
আমি তোমাকে ভালবাসতে চাই সকালে রোদের মতো
হয়তো ভাবনায়-সরল প্রেমের মতো,
আর রাতের ঘুমে-এই বাস্তব চাঁদের চাদোয়ায় ছেয়ে
গন্ধ বিলিয়ে তনু দেহে
পৃথিবীর খেলায় খইরঙা হয়ে;
আমি তোমাকে ভালবাসতে চাই
আমি তোমাকে ভালবাসতে চাই ছিমের ফুলের মতো
যেখানে সাদা বেগুনী নীলে,
রঙের খেলা চলে-
যেখানে স্বপ্ন ভবিষ্যতের আশায় বাঁচে,
আমি তোমাকে ভালবাসতে চাই
আমি তোমায় নিয়ে বাঁচতে চাই;
এই পৃথিবীর শূন্যভূমে
কুয়াশার ধূসর-ছাইরঙা চাদরে,
আমার সংসারে যে ভালবাসা আছে
তারই অংশে তোমায় জড়াতে চাই,
আমি তোমাকে ভালবাসতে চাই।



________ কে. এম. ওমর ফারুক

"অকৃত্রিম ভালবাসা"

আমি আমার মত আছি
তুমি খুজে নিয়ো যে.,
আজ আছি ছায়া বেশে
তোমারই পাশেতে...

রাতের আকাশ সাজাও তুমি
আমার আলো নিয়ে.,
দূর থেকে দেখি আমি, তোমায়
সব তারাদের ভিড়ে।

তারা আজ সঙ্গি তোমার
কালো আকাশের মাঝে.,
ভালবাসার আলো দিয়ে, তোমায়
সাজাই সন্ধাসাঝে...



____________নীলবালক

মনের ডালপালা

আমার প্রশান্ত আত্মা ঘুমিয়ে গেছে
সে আর জাগবে না
নি:শ্বাসের নীরব শব্দে
অভিমান ভাঙ্গবে না
তবু হৃদয় আত্মসুখের বাসনায় নির্লিপ্ত নয়
কী জানি, অভিমানে হবে কী পরাজয়
সরলতার আবরণে ঢাকা অভিমানী হৃদয়
চেতনার সাথে আন্ত:সংঘাত আর নয়
মূল্যবোধের স্বাধীনতা নেই
অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা বর্তমান
তবু খুঁজে ফিরি
সুখের নীড়ের ইন্টার্নাল ট্রায়াঙ্গেল
তার অস্তিত্ব আজ দ্বিধাহীন অভিযাত্রী
নীরবে আঘাতে-বেদনায় সরল অভিমান
হৃদয়ের বিশাল জুঁড়ে প্রজ্জ্বলিত অক্ষয় মশাল
কোন রহস্য নেই, অভিমানে নির্জন চারিধার
মধ্যাহ্ন বাতাসে কনকনে শীতের ঝড়, সবকিছু ছারখার
তবু নির্লিপ্ততা নয়, স্মৃতির চাঁদরে ঢাকা সোনালী সময়
হাতছানি দিয়ে জানিয়ে দেয়
সরলতার আবরণে অভিমানী হৃদয়।


_________মোঃ মুজিব উল্লাহ

বলতে ইচ্ছে হয়

তোমার ওই স্থির চোখের
তীহ্ম অথচ সুগভীর চাহনি
যেন নীড় হারা নয়
নীড় বাঁধেনি এমন পাখি
নীড়ের সন্ধানে শশব্যস্ত।
আমার হৃদয়কে বিদীর্ণ করে
কি যেন বলতে ইচ্ছে হয়;
খুব ছোট কথা অথচ কঠিন-
তাই বলা হয়ে ওঠেনা।


বিদীর্ণ হৃদয় শুধু ছাইয়ের মতো পুড়ে
কিন্তু তার মাঝে যে চাপা আগুন আছে
তা বুঝতে দেয় না।
ওই স্থির চোখে তাকিয়ে
আমার আর স্থির থাকা হয়ে ওঠেনা;
অজান্তে চোখের জল আসতে চায়-
তোমার অলক্ষ্যে চোখের জল আড়াল করি।




___________রিয়া হাবিব

Monday, December 19, 2011

এক ফোটা বৃষ্টি দাও আমায়

এক ফোটা বৃষ্টি দাও
তোমাকে ভালবাসা দিবো এই আমি।
যতটুকু ভালবাসা চাও তুমি
তার চেয়ে বেশি ভালবাসা দিবো।
যতটুকু সুখ চাও তুমি
তার চেয়ে সুখ দিবো ঢের বেশি।

তোমার ভেতর থেকে উচ্ছ্বসিত হয়ে
এক ফোটা বৃষ্টি দাও আমায়,
বৃষ্টির পরশ দু’চোখ বুজে গভীর চুম্বনে
সেই ফোটা তুলে নিবো আমার দু’ঠোটে।

বিশ্বাস করো, তোমাকে সুখ দিবো অনায়াসে।
আমি তো নিরন্তন তোমারই পানে চেয়ে থাকি
কেবলই চেয়ে থাকি এক ফোটা বৃষ্টির অপেক্ষায়…
মেঘের আবেগ ছুঁয়ে তুমিও চাইবে শুধু ভালবাসতে!


__________ওমর জাবিন

কচুপাতা শাড়ীর প্রণাম

বিনু'নের প্রজাপতি উড়ে বেড়ায় সর্ষের হলুদে
বাতায়নে ভাসে কিশোরী, ঝুমকো জবা-নোলক দোলে
দোলে ঐ বজরার গলুই হাল, পোয়াতী পাল
আরশির আঙিনায় বাড়ে কচি পাতা পুই শাক

গোয়াল পেরিয়ে ক্ষেতের আল, এই হাট হাট
পথিকের ডুলায় তড়পায়, বইচা সরপুঁটি ঝাঁক
নাড়া পোড়া বুনকা ধোয়া মিলায়, কুয়াশার চাদরে
হিম হাসে টুপটাপ ঝড়ে পড়া, শিশিরে

প্রভাতের জিম্মায় ওঠে উল্লাস, আলিফ যবর আ
ভালোবাসা গীতিতে, আমার সোনার বাংলা
চিরায়ত সবুজে দোলে ফসলী ঘাস, ফুলের নয়নতারা

ঊষা আসে মুগ্ধতায়, পূর্বাকাশে শত রং রাঙিয়ে
লাল সবুজের বাহারে
আজ জাত-শুদ্ধির হার না মানা হারে দিলাম
প্রভাকর, তোমায় বাংলা’র কচুপাতা শাড়ীর প্রণাম।।

________________কুহক

ভাল যদি বাসতে চাও

ভাল যদি বাসতে চাও,
কস্ট পাওয়ার ঝুকি তোমাকে নিতেই হবে ,
অভিমান –অনুযোগ করতে পারবে না তুমি ।
ভাল যদি বাসতে চাও,
প্রতিদান কভু চাইতে পারবে না তুমি,
যদিও প্র্কৃতি প্রতিদান তোমায় দিবে বহু গুন বহুগুন বেশী।
তোমার ভালবাসা পদদলিত হবে,
লাঞ্ছিত হবে তোমার অনুভুতি,
বিনিময়ে তোমাকে আরো বেশী আরো বেশী ভাল বাসতে হবে ।
তোমাকে তারা কস্ট দিবে,
তোমাকে তারা কাঁদাবেও বটে,
কাঁদতে পারবে না, জ্বলতে পারবে না, জেনে রেখ তুমি ।

হেমলক সক্রেটিস কে নীল করে দিয়েছিল,
কিন্তু তার প্রেম ছিল টগবগে লাল।
যীশুর হ্রদয় বিশ্বাস ঘাতকতায় হয়েগিয়েছিল নীল,
ভালবাসা তার ছিল যত, হয়েছিল অমলিন ।
হোসাইন নিয়েছিল তেষট্টি টি ক্ষত,
ক্ষতে তার রক্ত ছিল বটে, ছিল না অভিশাপ এত টুকু ।
কবির কবিতার এক একটি শব্দ,
শব্দ গুলি শব্দ নয় জেনে নিও, হ্রদয় থেকে ঝরে পড়া এক এক ফোটা রক্ত,
তবুও তাতে অভিমান নেই কোনও , আছে বরং আরো বেশী ভালবাসা শক্ত ।

তোমাকেও হতে হবে নীল, নিতে হবে তেষট্টি টি ক্ষত,
তবেই তুমি করবে অর্জন ভালবাসা যত,
পারবে তুমি বাসতে ভাল, যত খুশি তত ।

__________বিলিভার

ঝরা পাতার শব্দে!

হয়তো ঝরা পাতার শব্দে চমকে উঠবে!

হেলানো ছায়াটা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হবে
সময়ে মিশে যাবে বুনোপথের শেষ প্রান্তে,
উঁকি দেবে আকাশে অচেনা হেমন্তের চাঁদ
আধখোলা জানালায় ভাঙ্গবে স্মৃতির বাঁধ।

জেগে থেকো অনেক অনেক রাত হালকা
শীতের ওমে। অনুভবে থেকো অনেকটুকু
সময় বিনিদ্র, ক্লান্ত হুঁতোম প্যাঁচার দমে,
আর, টিনের শেডে কুঁয়াশা যেমন জমে।

শিহরিত হয়ো একা, কলা পাতার চুমে
গভীর রাত পর পর হোকনা জাগরনে,
ঘুমে। ইথারীয় ফিস, ফিস, ফিস যাক
মিলিয়ে যাক ভূমে, এ আকুল অঘ্রানে।

ছায়া হারাবে ছায়ায়, খেয়াল খুশি মতন
ডুকরে কেঁদোনা ভেবে সব আগের কথন।
লজ্জাবতী যেমন ধীরে পেখম মেলে দাড়ায়
আগ বাড়িও ভোরে রাত পারাপার চড়ায়।

গভীর রাতের শীত চাদরে জড়িয়ে থেকো।
ভাববে তেমনটিই আছি,ছুঁয়ো দেখো যতনে,
বুকপাশটিতে হৃদকম্পনে।


_______আশরাফুল কবীর

হৃদয় দেবতা!

হৃদয় দেবতা আমার থাকো হৃদয়ে
অশ্রু হয়ে যেন ঝরো না নয়নে।
রবির আলো মত জ্বল গৌরবে
উল্কা হয়ে খসে যেও না অকালে।
ফাগুন যেভাবে জীবনে বসন্ত আনে
প্রেম দেবতা হয়ে আজন্ম বেঁচে থাক হৃদয়ে।

কোকিলের কলকাকলির মাধুরী কণ্ঠে নিয়ে
ভরায়ো জীবন যৌবন সুর সঙ্গীত কলতানে।
হৃদয় মননে কাননে ফোটা সব পদ্ম তুলে নিয়ে
মালা গেঁথো তুমি রক্ত জবার রক্তিম লাল রঙে।

গোধূলির থেকে বৈচিত্র্য কিছু আলোক ছটা নিয়ে
রঙে রঙে তুমি রাঙিয়ো জীবন তেজস্বিনীর সাত রঙে।
উদাস বেলায় কষ্টে কাতর হয়ে যখন দুচোখ জল নামে
তুমি আলত ছোঁয়ায় মুছে দিয়ো একটু সুখের সুধা দিয়ে।
আমি আজীবন তোমায় পুঁজ করে যাবো মন-দেবতা করে।



________দীঘি

ডুমুরের ফুল....

হঠাৎ করে তুমি ডুমুরের ফুল হয়ে যাও
কোথাও পড়ে না তোমার শরীরের ছাঁয়া
আমি চেয়ে থাকি পথের দিকে
তুমি আসবে বলে
কখনো কখনো বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে
সন্ধ্যা পেরিয়ে কুয়াশার রাত
রাত গাঢ় হয় চন্দ্রের অস্ততায়
নীরব হয়ে উঠে ব্যস্ততম সড়ক, হাটবাজার
ক্লান্ত-শ্রান্ত মানুষ নীড়ে ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে
অদূরে দেখা যায় সাগরের তটভূমি
শান্ত সাগরে স্রোতের মৃদু ঢেউ খেলে যায়
নিদ্রায় আলুথালু হয়ে পড়ে বনভূমি, জ্যোৎস্নার আকাশ
শুধু ঘুমায় না আমার দু চোখ
নিঃশব্দে খুঁজে বেড়াই তোমাকে

মাঝে মাঝে তুমি কোথায় উধাও হয়ে যাও?
নীরবে সন্ধ্যা নামে শীতের বিকেলে
পাখিরা আকাশে উড়ে, চলে যায় দূরের সীমানায়
পার্কে বেড়াতে আসে কপোত-কপোতীরা
আড্ডায় মেতে উঠে বিভিন্ন বয়সের মানুষ
বাজারে কেনাবেচার ধুম চলে
নাটকপাড়ায় চলে নাটকের শ্যুটিং
আস্তে আস্তে রাত নেমে আসে
খদ্দর বাড়তে থাকে বেশ্যাপাড়ায়
আজন্ম বেশ্যার দালাল হয়ে হাঁক ছাড়ে জনৈক আলাল
বনে বাদাড়ে শোনা যায় শেয়ালের ডাক
আমি বড় একা হয়ে যাই
ফিরতে পারি না আপন আলয়
ঠাঁই দাড়িয়ে থাকি তোমার বাড়ির সীমানায়
কখন শেষ হবে তোমার অজানা নির্বাসন?
কবে ফিরে আসবে তুমি?
কবে ছাঁয়া পড়বে তোমার নগরীর বুকে?



_____
মোঃ মুজিব উল্লাহ

Monday, December 12, 2011

অশ্রু হারা অশ্রু!!

স্বপ্নগুলো নিরবে অশ্রু ঝরায়
বেদনার নীল কাব্য নিরাশার বানী শোনায়।
প্রতিটা মুহূর্ত একেকটি বছর মনে হয়!
সুখের প্রত্যাশায় দুঃখগুলো ভাষা খুঁজে পায়।
তবু রেখে যায় কিছু অন্ততহীন প্রত্যাশা!
এক দিন সুখ আসবেই।
বেদনার কালো মেঘ গুলো একদিন যাবে কেটে।
প্রানের সব স্পন্দনে সুখকর স্বপ্ন হয়ে দোলা দেবে।
দুঃস্বপ্নের ঘোর কেটে যাবে।
কেটে যাবে সুনামির ভয়াল রাত্রি।
কেটে যাবে বিভীষিকাময় ভয়ার্ত ক্ষণগুলী।

একদিন ভালোবাসা এসে জড়িয়ে নেবে।
প্রানের মায়ায় বুকেতে ঠাই দেবে।
সব হায়ানার চিৎকার পেছনে ফেলে
ভালোবাসাময় ভালোবাসায় কাছে টেনে নেবে।
বিধি বড় দেরি যেন না হয় জেনো!
অপেক্ষার প্রত্যাশায়
প্রান পাখি যেন উড়ে চলে না যায়!
ছোট এ জীবনে এতটুকু চাওয়া।

Thursday, December 8, 2011

তবু পাই যেন তার সন্ধান!!!

আমি নিজের মতই বাধতে পারি গান
সাধতে পারি সুর, কিন্তু শোনানোর মানুষ কই?
আমি নিজের হৃদয়ে নিজেকেই দেখি, নিজেকেই আঁকি
....তবু যেন কার পথটি চেয়ে রই!

আমি ঐ সুর্যের দিব্যি দিয়ে বলতে পারি
আছি অনেক ভাল, আমি পূর্ণিমার ঐ চন্দ্রিমা হতে ছিনিয়ে নেই আলো-
দু'হাত পেতে মাখি সারা গায়, আমি নগ্ন-বেশে পিছন ফিরি-
...যদি কেউ অবাক হয়ে চায়!

আমি কখনও হাসিনি বর্ষার বিলাপে
কখনও কাঁদিনি বসন্তের রোদে নেয়ে,তবু তোমরা যখন কৃষ্ণচূড়ার কষ্টে রাঙ্গো-
আমি তাকে জড়াবো বলে-হারাবো বলে-তাহার কোলে-
শীতের শিশিরের বিছানায় শুয়ে,কুয়াশায় চুর হই,

আমি নিজেকে ভালবাসি, অনেক বেশি
তাহার চেয়েও! কাহার চেয়েও? ভেবে পাই না সাড়া-
শুধু শুনি বিরহী চাতকের গান, আমি নিজের বুকের সেই আমাকে গড়তে রাজি,
তাহার মত...২০৬টি হাড়ে জুড়িয়ে-মাংস বিলিয়ে-রক্ত পিয়ে-
যদি লাগে দিয়েই দেব প্রাণ...আমি তবু পাই যেন তার সন্ধান!!!


__________
বনসাই মেয়ে

একটু জায়গা দেবে?

আমার একটা পুরনো খাতা আছে;
এখনো ওটায় কিছু লেখা হয়নি
পৃষ্ঠাগুলোয় হলদেটে ছাপ পড়ছে
কলমের কালি তবু শুকিয়ে যায়নি।
নতুন করে লিখব পুরনো সুখগাঁথা
কিন্তু আজ সব অশান্তির জবরদখলে...
তোমার চিলেকোঠায় জায়গা দেবে?
শান্তিকাহন লিখব বসে তোমার টেবিলে।

আমার ঝোলায় অনেকগুলো রং আছে;
তুলি, প্যালেট আর নতুন ক্যানভাস।
দৃষ্টির সামনে সুন্দর যাকিছু খেলে যায়
মৌনসাধনায় তা ফুটিয়ে তোলা অভ্যাস।
এখন চারিদিকে কেবল স্বেচ্ছাচারিতা,
অন্ধকার সব আলোর নিয়েছে বর্গা!
আঁধার আঁকতেও আলোর প্রয়োজন-
তোমার ঝলমলে উঠোনে দেবে জায়গা?

ডুবে আছি, ভালবাসার বেনোজলে

রাতের এই মধ্যযামে
রাতের শরীরকে বিদীর্ণ করে
বসে আছি একা
নীড়হারা পাখীর মত,
জানালার ওপারে চাঁদ ডুবে যায়
রেখে যায় বেদনার শিউলী যত
তারা মন্থিত হতে হতে ভেসে যায়
সঞ্চিত জলের স্রোতে
ছোট ছোট বোধের পানসি ডুবে যায়
বুকে নিয়ে কষ্ট থোকা থোকা,
তৃষিত এ মনের দেহে
রেখে যায় স্মৃতির শিশির
বোধের অণুতে আমি ভেঙ্গে ভেঙ্গে
জল হই, প্রণয়ের জল
তোমাকে ভিজিয়ে দিতে
হৃদয়ের উষর মরুতে ।।


___________ জে এম আজাদ

অশ্রুজলে উপুর হয়ে থাকি লজ্জায়

হে আমার সুপ্রিয় নতুন প্রজন্ম,
কী বলে করবো সম্বোধন,
চল্লিশটি বছর তো গেল এই ভাবনায়
মনে তো পড়ে না -
কখনও লিখেছি তোমাদের
তাই আজ ভারী লজ্জা, তবুও লিখলাম
কোথা থেকে ছুটে এলো বিজয়ের মাস।

স্রোতের পাহাড়ে তৃষিত বক্ষ ছুয়ে
ঝাঁপিয়ে পড়ে ঝরণার অনুতে ভিজে
কঠিন পাথর ভেঙ্গে স্বাধীন করেছি দেশ
মানচিত্রখানা দিয়েছিলাম তোমাদের হাতে।

সাভার স্মৃতিসৌধে চূর্ণ হৃদয়দের কবরে
অশ্রুজলে উপুর হয়ে থাকি লজ্জায়
স্বাধীনতাটাকে দেখার সাধ ছিল বড়
সর্বনাশা আগুনের আনন্দাশ্রু সংবরণে।

আমার ধূসর স্মৃতিগুলো জেগে ওঠেছে
যদি দেখা হতো জগৎকর্তার সাথে
জড়িয়ে ধরতাম তাঁর চরণ দু'খানা
সেবা দিয়ে বলতাম মনের দু'টি কথা।

হে আমার ধর্ম সন্তান,
আমি মুক্তিযুদ্ধ করে শহীদ হয়েছি,
মনে করো না বিশাল কিছু করে ফেলেছি
যতটুকু করেছি, চিরকাল গর্ববোধ করবে
তোমার সামনে দীর্ঘ বিপ্লবের পথ
তোমাকেও হতে হবে বিপ্লবী
সবসময় থাকবে ন্যায্য দাবীর পাশে।

এমাসে আর একবার পাশে
এসে দাঁড়াবে প্রিয়তম বর্বরেরা
খিটিরমিটির করেও জ্বালা নিয়ে থাকি
মনের আগুনে সিক্ত হয়েও কবুল করি
আমার তো আর কোনও জো নেই।

এচিঠি পেলে কি না তা জানা হল না।

Monday, December 5, 2011

তুমি আমাকে কিছু বলতে চেয়েছিলে, অন্যরকম কিছু;
আমার জানাই ছিলো, অন্যরকম কিছু অন্যরকম নয়।
তুমি আমাকে তোমার প্রিয় জায়গায় নিমন্ত্রণ জানিয়েছিলে,
চিরে যাওয়া অতুল ভাবনা ঠেলে শেষবারের মতো তা গ্রহণ করেছিলাম।
হারানোর নিষ্ঠুর সুর যখন তোমার মাঝে খেলা করছিলো,
নির্মম বেদনা সয়ে অনেক কষ্টেও তখন আমি হেসেছিলাম।
ছিঁড়ে খুঁড়ে অনেক দূরে যখন তোমাকে দুমড়ে মুচড়ে ছুড়ে ফেলে দিচ্ছিলাম,
জান কি তুমি; ছিন্ন ভিন্ন হয়ে অভিন্ন কষ্টে আমিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছিলাম।
টোলপড়া হাসিমাখা মুখটা নীল বেদনায় জমাট হয়ে গিয়েছিলো,
নিভ্রিতে শুধু বলেছিলে একটা কথা, “আমি কি এখন যাবো?”
জানতাম শেষবারের মতো বলছি, তারপরেও চেয়েছিলাম শেষ না হোক;
কী নির্লিপ্তের মতো বলেছিলাম, “যাও” ।
..........................................

সময় গড়িয়ে যায়, মেশে স্রোতের মোহনায়,
বহুকাল, বহুক্ষন কেটে যায় তার প্রতীক্ষায়!!
..........................................

তুমি আর আমার জন্য অপেক্ষায় থেকো না,
আমাকে ভালোবাসতে উন্মুখ হয়ো না,
আমাকে যদি বা কখনো দেখো, তবে ঘৃণাই না হয় দিও
আমি বুঝে নিবো, এখনো আমায় তুমিই ভালোবাসো।
প্লিজ.... আর কেঁদো না।
কান্নার নোনতা জলে অবগাহন না হয় আমিই করবো নে,
তারপরেও তুমি সুখী হও, অনেক সুখী!
তোমার সুখে যেন তোমার সখীও ঈর্ষান্বিত হয়।
এই যে সুখের পরশ পাথর তোমার শিয়রে বুলিয়ে দিলাম,
চিবুকখানি উপরে তুলে দেখ,
অনেক দূরে থাকার পরও আমি এখনও তোমার পাশে,
থাকবো সারাটা জীবন; ভাবনা করোনা তুমি।
মনে করো কষ্টমাখা দুষ্টু হাসিতে তোমাকে বিদায় দিয়েছিলাম,
বিদায় তো একটা সময় নিতেই হয়, তাই না মেয়ে?
আমি না হয় একটু আগেই নিয়েছিলাম।
আজ যে অশ্রুসজল ঝাপসা দৃষ্টিকে বড় আপন মনে হয়,
আচ্ছা, তুমি কি জানো, কান্নাজল কেন নোনা হয়?
______________নিঝুম অরণ্য

প্রিয়ভাষিণী

ভাবিনি কখনো রাতের কবিতার জন্য সকালে অনুতাপ করতে হবে। পাতা ঝরার দিন এলো বলে, মৃত স্বপ্নরা আমায় ডাকছে তাই ঝরা পাতার সাথী হবো ঠিক করেছি। ফাগুণ আমার জন্য নয়, তাই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলাম
এটি শুধু মাত্র কবিতাই ছিলো...

তোমাকে দেখব বলে আকাশ হবো
তোমাকে ছোঁবো বলে বৃষ্টি হবো,
বাতাস হবো, মাটি হবো
রাত্রি হয়ে জড়িয়ে নিবো
মুক্ত হবো কেমন করে সংকোচের বাধন ভেঙ্গে?
স্বপ্ন গুলো তোমায় দিবো,
ইচ্ছে গুলো তোমার রঙ্গে রাঙ্গিয়ে নিবো
কষ্ট তোমার আমার করে দুঃখ সকল আমিই নিবো।
আমার হবে হতে পারো
হাত দুটি মোর ধরতে পারো
একটা জীবন একটি ভেলায় দুঃখ সুখে কাটিয়ে দিবো।
নইলে; কোথাও হারিয়ে যাবো
নীল তারাদের সাথী হবো
খুঁজলে খুঁজো আকাশ মাঝে
তোমার রঙ্গে যেই তারটি সেই তারাটি আমিই হবো ।

শহরের ফানুস জীবন ছেরে, পিছ ঢালা পথের মায়া কাটিয়ে, গায়ের মেঠো পথে তোমার পা পরবে কোনদিন? আমার উঠোনে হেমন্তের পাকা ধানে তোমার রাঙ্গা পা পরবে কোনদিন? জানি পরবে না। ভুল আমারই কল্পলোক আর বাস্তবতা গুলিয়ে ফেলি বার বার। তাই তোমাকে দায়ী করে সুখ খুঁজলাম। শুধু অনুরোধ আর প্রশ্ন করোনা...




_______________সৈয়দ মাজারুল ইসলাম(রুবেল)

আমার যতো ভাবনা

প্রতিদিন কিছু কিছু পথ হেঁটে চলেছি সেই কবে থেকে
অফুরন্ত পথের দু’ধারে প্রকৃতি আর জীবনের যে
মহামিলন, তার কিছু স্বাদ আমার জানা আছে
কিছুটা অজানা, জানা হবে না কোনদিনও।

কখনও না- কোনদিনও আর সেসব জানা হবে না
কেন কিছু প্রিয়মুখ দূরে চলে যায় কিছু না বলে
কেন কেউ প্রতীক্ষার প্রহরে বাঁধা পড়ে থাকে
অথবা ঘৃণায় থুথু ছিঁটায় অলক্ষে!

কিছু ভুল বোঝাবুঝি ধূলি হয়ে রয়ে যায় পথে
কিছু কিছু পায়ের চিহ্ন স্পষ্টই থেকে যায়
কিছু ফুল সেভাবেই পড়ে থাকে
হাঁটতে হাঁটতে তেমনই ভাবি।

মাঝে-মধ্যে দিগন্তে পথের সীমা দেখতে পাই যেন!
যেন ওখানেই পৌঁছে যাবো বলে হাঁটি
না, তাও যেন সত্যি নয়; কোন সত্যি নেই
মানুষের এই একটা জন্মের জীবনে।

____________ নাসির আহমেদ কাবুল

প্রতীক্ষা

সময় পেরিয়ে যাচ্ছে,
একটি একটি করে ফুরিয়ে আসছে জীবনের দিনগুলো,
বহু প্রতীক্ষিত অমূল্য দিন।
ডাক্তারবাবু বলেছিলেন, আর খুব বেশি দেরী নেই,
বড়জোর দুই কি তিনমাস।
বড্ড কঠিন শুনিয়েছিল কথাগুলো,
কিসের কথা বলছিলেন ডাক্তারবাবু?
তবে কি আমার জীবন ফুরিয়ে এসেছে?
মরন ঘটছে আমার স্বপ্নের?
তাইবা কি করে হয়?
বহু সাধ যে অপূর্ণ রয়ে গেছে, অপূর্ণ রয়ে গেছে বহুস্বপ্ন।
আজকাল প্রতিটি মিনিটে, প্রতিটি সেকেন্ডে সবাই মনে করিয়ে দেয়,
তোমার সময় শেষ হয়ে এসেছে।
ওদের ঠাণ্ডা শীতল চোখে জেগে ওঠে অর্থহীন সহানুভূতি।
আবারও ভাবি এইতো বেশ, এইতো ভাল।
কেউ বুঝবেনা, কেউ জানবেনা,
হঠাৎই একদিন রওনা দেব নিজের পথে।
প্রতিদিন গোধূলিলগ্নে দখিনা বারান্দায় এশ দাঁড়াই আমি,
ভাবি, দিনের এই অন্তিমলগ্নের মতই একদিন হারিয়ে যাব আমি,
আর ভাবি, সময় পেরিয়ে যাচ্ছে,
একটি একটি করে ফুরিয়ে আসছে জীবনের দিনগুলো,
বহু প্রতীক্ষিত অমূল্য দিন।



__________রোদেলা কাব্য

Saturday, December 3, 2011

স্বপ্ন জোনাকি

জানিনা আজ খুঁজে কি পাবো না
অচেনা ঐ পথের প্রান্তে
স্বপ্নের হাতছানি দিয়ে কে যেন
আমায় তবু ডাকে অজান্তে...

বুঝিনা আজ ভেবেছি যা কিছু
তোমারি মগ্ন স্বপনে
নিষ্ফল আশায় নিজেকে সুধাই
যদি আসো গোপনে...

বিকেলের রোদ নিভে আসে
প্রকৃতির নিয়মে
আজো মনে হয় লুকিয়েছো তুমি
আমায় দেখে শরমে...

ঐ ডালাসের যান্ত্রিকতায় আছো কি ভালো?
বাংলার মাটি মানুষের চেয়ে,
নাকি সভ্যতায় তোমায়
করেছে গ্রাস আমায় ফেলে...

চেয়েছিলে যা পেয়েছো কি তা?
ছুটেছিলে মরীচিকার পিছে নয় কি
ফিরে এসো তুমি পথ চেয়ে আমি
তুমিই আমার জোনাকি ...


_________ভুতের আছড়

প্রণয়ের মাদল বাজে মহুয়াবনে

তোমার শিয়রে জেগে আছে চাঁদ
রাত গভীর হলে দেখে নিও
মহুয়া বনের মাতাল পবনে
ইশারায় তাকে ডেকে নিও ।

রাত গভীরের নিপতিত দেহ
মন্থিত হলে বুঝে নিও
আসবে সে বুঝি সহসা তোমাতে
প্রণয়ের জলে ঝেঁপে নিও ।

রাত গভীরের প্রণয়ের জলে
ভিজে গেলে দেহ ঢেকে নিও
প্রণয় প্রাণের সৃজিত দেহটি
উষ্ণ আবেগে মেপে নিও ।
_____________জে এম আজাদ

শেষ আশ্রয়

আমার এতটুকু ভাবতেই ভালো লাগবে
কেউ একজন আমাকে প্রতি নিয়ত ভাবছে ।
নাইবা ভাবুক
সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আমাকে ভাববে ।


আমার আঙ্গুলগুলো নিরাবরণ হয়ে গেলে
তার হাতের অংগুটি এগিয়ে এসে
আমার অনামিকায় আবরণ দেবে ।
আমার চোখে যখন পানি ছাড়া কিছু থাকবে না
তখন সে সামান্য হলেও
মুখে হাসি ফোটাবে ।

আমি যখন নিঃস্ব হবো
প্রতারিত হতে হতে আত্নবিশ্বাস হারিয়ে ফেলবো
তখন সে আমায় সঙ্গ দেবে ।
চোখের পাপড়ি বন্ধ করতেই যখন
ভয়ানক দুঃস্বপ্নের ছায়া চোখে নামবে
তখন আমার চোখের কোনে
সামান্য সুস্বপ্ন এঁকে দেবে ।

আমার যখন অমানিশা রাত্রি কাটতে চাইবে না
তখন সে ভোরের সূর্য হয়ে
আমায় শুভ্র ভোর উপহার দেবে ।
যখন বুকের ভেতর কষ্টেরা জমাট বাঁধবে
ঠিক বরফের মতো
তখন সে বরফ থেকে পানি ঝরাবে ।

যখন পৃথিবীর সব অসৌন্দর্য,
অসভ্যতা ও কুরূপ দেখে দেখে
আমার দু চোখ অন্ধ হবে
তখন সে আমার চোখে আলো হবে ।
জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণাগ্রস্থ হয়ে যখন
রেললাইনে হাটবো
যাতে রেলপিষ্ট হয়ে মারা যাই
তখন সে আমায় আত্নহত্যা থেকে বাঁচাবে ।

আমার মৃত্যুর পর যদি
আমাকে কবর দেয়ার উপযুক্ত জায়গা না মেলে
তখন সে তার বক্ষ পিন্জিরায় আবদ্ধ
হৃদ জমিনে আমাকে কবর দেবে ।
সযতনে সে কবরের উপর
কয়েক মুঠো ভালোবাসা ছড়িয়ে দেবে।


______রিয়া হাবিব
যদি কভু ভোরের আকাশ শূন্য দেখো
আমায় ডেকো
আমি ভোরের তারা হয়ে জ্বলবো অনন্তকাল

যদি কখনো জীবনের বাক নেয়া মোড়ে
খরকুটার মত থমকে যাও
আমায় ডেকো ...
আমি প্লবন হয়ে তোমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবো

যদি তোমার অপুর্ন কোনো স্বপ্ন থাকে
আমায় ডেকো
তোমার আকাশে সাদা মেঘের ভেলার মত স্বপ্নে স্বপ্নে পুর্ন করে দিবো

যদি কখনো আমাকে অনুভব করতে ইচ্ছে করে
আমায় ডেকো
আমি তোমার আঙিনার হাসনাহেনার ঘ্রান হয়ে তোমায় জরিয়ে নিবো

যদি কখনো স্নোফল তোমার ভালো লাগে
আমায় ডেকো
আমি পুরো দুনিয়ায় তুষার ঝড় হয়ে ঝরে যাবো

যদি অবিরাম ঝর্নাধারা তোমার ভালো লাগে
আমায় ডেকো...
আমি নায়েগ্রার অবিরাম ঝর্না হয়ে অনাদিল ঝরবো

যদি সাগর পারে পা ভিজাতে ইচ্ছে করে
তবে পাড়েই দাড়িয়ে থেকে
আমায় ডেকো
আমি ঢেউ হয়ে এসে তোমার নুপুর ভিজিয়ে দিয়ে যাবো ।

যদি তোমায় কভু বিষণ্ণতা গ্রাস করে
আমায় ডেকো.,,
নেগেটিভ আয়ণ হয়ে এসে তোমাকে উজ্জিবিত করে যাবো

যদি তোমার খেয়ালি মনে শেষ বিকেলের রোঁদে
হাড়িয়ে যেতে ইচ্ছে করে
তবুও আমায় ডেকো ...,
শীতলক্ষ্যার পাড়ে শরতের কাশবন হয়ে তোমাকে লুকিয়ে নিবো

যদি জোনাকি হয়ে কখনো আমাকে
আলো দিতে স্বাদ জাগে
আমায় বলো ...,
আমি প্রান্তর জুড়ে রাতের হিজল বন হয়ে অপেক্ষায় রবো


__________ভুতের আছড়

Monday, November 28, 2011

অপেক্ষা

একসময় বৃষ্টির স্পর্শে আবেগতাড়িত হত মন।
এখন প্রায়ই শিশিরের কোমল স্পর্শে
স্পন্দিত হয় হৃদয়।
তারপর ও শূন্যতা-
কি যেন নেই, কার যেন স্পর্শের অভাব।
কবেকার মনোহর মনে আজ হেমন্তের কুয়াশার চাদর।

সেই কবে শিশির স্নাত কারো পায়ের স্পর্শ
বেধ করেছিল আমার কর্ণকুহর।
মনের স্পন্দনে-
পালিত ভালবাসা জেগে উঠেছিল
দীর্ঘ বিরতির পর।

সে সব শুধু আমার ছিল আয়োজন
ছিল মনের আত্মসমর্পণ।

মর্মর শব্দে হেমন্তের ঝরা পাতার সাথে
প্রতিদিন আমার শরীর হেঁটে যায়
গাছের মরণ পাতার সাথে হয় বন্ধুত্ব।
তবুও কেহ ফিরে নাহি চায়,
দীর্ঘশ্বাস ফেলে এখনও চমকে তাকাই কারও অপেক্ষায়।

রাতের স্বর

আমি দেখেছি সোনালি রাতের বাতাস
গাছের পাতায় দোল খেয়ে
এক নিরব শব্দের প্রেম বুকে ধারণ করে,
দক্ষিণ সাগরে খেলা করা এই বাতাস
রাতের স্বর হয়ে হয়তো আমার জীবনে
যোগ বিয়োগের কথা স্মরণ করায়-তাই তো
ঐ মৃত জলে বেঁচে থাকা স্বর কাঁন্নায়
স্মৃতির বোঝা নিয়ে আমার গোলা ভরে তোলে;
পিপাসার মুখে-আমি সারারাত জেগে থাকি,
ঝরে পড়া পাতা নির্জন কানে মৃতের আওয়াজ দেয়
বুঝতে পারি বিদায় নিয়েছে কিছু প্রাণ,
পৃথিবীর পথে নয়
নতুন পথের যাত্রায় মানুষের সুখ মলিন করে
হয়তো ক্ষণিকের পাখিরা তোমার ছায়ায়
আশ্রয় নিয়েছে ঐ ধূসর শান্তির মতো,
রাত জেগে আছে তোমার মনের চোখে;
ঐ চোখের যৌবন ফিরে পাবে দেহ
এরাত কেটে যাবে বেদনার হিমে
আমি বসে রব মুহূর্তের কালে।

Friday, November 25, 2011

স্বপ্ন জোনাকি

তুমিই বানিয়েছো আজ এমন রাজা..
এ রাজ্যে নাই কোনো প্রজা..

অন্দকারে পেয়েছি এক ধ্রুবতারা...
তার জন্য হতে পারি আমি সর্বহারা...

ইচ্ছে হয় ঐ চাঁদকে তোমার জন্য আনি...
কারন এ রাজ্জ্যে তুমিই তো একমাত্র রানী

জোনাকি হয়ে এসেছো তুমি মোর জীবনে...
আলো কি ছড়াতে পারবে মোর মরনে...?

জিবনে পেয়েছি অনেক, পাইনি একটি কথা...
বলোনি শুধুই তুমি আমার, এই একটি ব্যাথা...

এই ব্যাথা মুছে গেলে এ জিবনে আর চাই কি...
আমার সব কিছুই জুড়ে আছে.....

.................এক অনন্যা জোনাকি...

__________ভুতের আছড়

প্রিয়তম...

শোনো,
মাঝে মাঝে এলোমেলো হতে
এত ভাল লাগে কেন?
গুছানো সব অগোছালো করে
স্বেচ্ছাচারীর মত নেড়েচেড়ে
নিশ্চিন্ত গৃহকোণ ছেড়ে
যাযাবর হতে কেন এত ইচ্ছে?
ধোঁয়াশা পথের এই আকর্ষণ
এত দুর্নিবার কেন?

আমার দিনগুলো

এতদিন যাওয়ার পরে বলি আছে বহুদিন
দিন যত হচ্ছে গত, আশা তত ক্ষীণ
বিফল হয় আশা, খেলি শুধু পাশা
কেটে যায় বেলা করে রং তামাশা
কখনো টি.ভি. দেখতে বসা কখনো অঙ্ক কষা
করি আজো হেলা ভাগ্য যেন সর্বনাশা
আমি যা ভাবি তা মিথ্যা হয় বারবার!
আমি যারে ভালোবাসি, দুর্ভাগ্য সঙ্গী তার
আমি যেমন কই বাস্তবে তেমন নই?
ছদ্মবেশে ভাল মানুষ সেজে রই!
নাহি কমে ভয় নাহি কমে লজ্জা
নাহি কমে অন্যায় নাহি কমে সাজসজ্জা?
কখনো কামে কখনো ক্রোধে
কখনো ঘৃণায় কখনো প্রতিশোধে
কেটে যায় আমার দিন!
দিন যত হচ্ছে গত, আশা তত বিমলিন।

__________মুজিব উল্লাহ

রং বদলের

দুর্বৃত্ত প্রেম ভাসিয়ে নিয়ে যায়
সুতানলি সাপের মতন গলায় ঝুলে থাকে।
প্রাপ্তিতে ঋণ বাড়ে, বন্ধনে অটুট
স্বার্থের বীজ বোপিত হয় কামনার রংয়ে।

দ্রুত কেটে যায় স্বপ্নালু প্রহর
ঘোর ভাঙায় প্রতিবেশী
কাঁটাতারের বেড়া তুলে
সীমানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে।

পড়শিকে ডেকে বলে,
"দেখো ঐটা আমার, এটাও!"
কেউ ঈর্ষায় পোড়ে, কেউ নিশ্চুপ!
অবলা নয় সে
এবার ঠিক কাজটিই করুক।

দানাপানি নেই সাপুড়ের ঝাঁপি
বিষদাঁত ভেঙ্গেছে কবেই
তবুও ঐন্দ্রজালিক ফণা তোলে
ফোঁস ফাঁস।
লালা গড়িয়ে পড়ে। প্রতিশোধের দাঁত
কামড়ে খায় গোটা অস্তিত্ব।

নির্জলা সত্য জ্বলছে সতর্ক প্রহরায়
কারো কোন ক্ষতি না করেও
আজ সে কাঠগড়ায়।
ছিনিমিনি খেলার পুতুল কেবলই
হাত বদলায়।


_____________সাইফ ভূইয়া

আমি কারো প্রিয় হতে পারিনি........

হেমন্তের পড়ন্ত বিকেলে দিগন্তজুড়ে
যে শীতল হলদে হাওয়ারা ভেসে বেড়ায়
সেতো আমারই আকাঙ্খিত আরাধনা

রাতভর জোছনার আলো বিলিয়ে দেয়ার পর
রাত্রিশেষের অর্ধমৃত চাঁদটাকেও
সীমাহীন আবেগে আমি আপন করে নেই

হিমাদ্র শীতের কুয়াশাঝরা ভোরে
ঘাসের গালিচায় নগ্ন পায়ে রোজ হেঁটে বেড়াই
সেতো শীতকে ভালোবাসি বলেই

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড উত্তাপে ক্রোধান্বিত সূর্যটা যখন
অগ্নিভষ্ম করতে চায় শান্ত পৃথিবীটাকে
ঠিক তখনই করি আমি সূর্যের সাথে আলিঙ্গণ

উত্তাল সাগরের ভয়ানক গর্জনে
সকলেই যখন ছোটে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে
আমিই তখন করি শুধু সমুদ্রস্নান

জীবনের এতটা বসন্ত পেরিয়ে এলাম
কত দুঃস্বপ্ন আর দুর্জনকেও প্রিয় করে নিলাম
অথচ আজো আমি পারিনি কারো প্রিয় হতে !


________সাইফ সাইমুম

লরেলকুঞ্জে ভ্রমন!

লরেলকুঞ্জে ভ্রমন!



এখনো যে অনেক বাকী দূর সম্মুখে যাবার!

হেমন্তের শেষ নি:শ্বাস ফেলার আগের চ্ছটায়
নিষ্ঠাবান হয়েছিলাম। ঘোর বনপথে তখনো
তাঁবু গাড়েনি ছায়ারা।পাথরেরা জেগে ওঠায়
পিছু হটা, যেখানে ফুরোয়না সময় কখনো।

আমার প্রথম অভিযান! জেগে ওঠার, একা
একা। চারপাশটা বড্ড কেমন যেন, ছমছম,
গা ছমছম, এক ম্লান হিমেল আলোয় ঢাকা
জলপ্রপাতেরা আপনমনেই ঘুরিয়ে চলে চাকা।

আমার সংক্ষিপ্ত ভ্রমন,এক লরেলকুঞ্জের পাশে
চাঁদের আলোটিও এক বহুবর্নের ঘ্রানে হেলায়
অবহেলায় হাসে। আসে হাতটি বাড়িয়ে উষ্ণ
ছোঁয়ায়, আচমকা মাদকতাময় পূর্ন রাহুগ্রাসে।

এ হল শেষ প্রহরের প্রহেলিকা, দীর্ঘ বৃত্তান্তে
বর্ননাময়, তবে আমার সব কৌশলই জানা,
কিভাবে ক্লান্তি হ্রাস হয় এক মদির চুমোয়?
বসন্তের এ আবাহনে শীতটি যেমন ঘুমোয়।

ভয়গুলো সব হামাগুড়ি দিয়ে আসে। চেপে
ধরে ক্ষনিককাল, যেন ব্যাঞ্জনা স্তবগীতের,
স্বাগত ঋতুতে ঋতুবতী হওয়া, ক্ষনকালেই
জেগে ওঠা।কান্নাটি বেদনার্ততায়, হেমন্তের।

হে ঋতুগন! স্বপ্নের জিয়নকাঠি,যত্ত অগনন
সময় হয়েছে নূতন যাত্রার, আত্মার মনন।
অম্বর, কস্তুরী,ধূপ পরিকীর্ণ গম্ভীর লোবান
গুঞ্জনের অবমুক্ততায় হোক ইন্দ্রিয়ের গান।

হেমন্ত, তোমার সময় হল শুধুই চলে যাবার
ঘূর্নায়মান শীত, বসন্তে দেখা হবেই আবার।

আমার পদপাতের চৌকো মিনার জাগছে এখন
ভিন্নময় ঋতুতে। হজম করেছি, তপস্বীর মতো
এর নিগূঢ়তম রহস্য যতো।



__________আশরাফুল কবির

কামুক রায়.........



মেলার ফাঁদে জমলো বেশ
কামুকশালার নারী,
বেলার স্বাদে থামলো রেশ
শামুকমালার হাড়ি।

যুক্ত মালার স্বাদের আশা
রৌদ্রের ছোটাছুটি
মুক্ত ভেলায় ছাদের ভাষা
বীর্যের ফোঁটাফুঁটি।

রাত কোথায়, হলে দিন
বীর্যেরও চালান
ভাত যোগায়, চলে বীণ
অর্থেরও মলান।

রাশি রাশি অর্থে তাই
সুখভোগী স্বামী
হাসি হাসি স্বার্থে তাই
মুখযোগী আমি।

স্বভাব রোজে তস্য আমি
হাস্যকর রবি
অভাব ভোজে বশ্যকামী
ত্যাজ্যকর ছবি।

যার কারনে ভিন সাগরে
মস্তরূপী নগ্নী
তার স্মরণে ঋণ নাগরে
হস্তসপি অগ্নি।

Monday, November 21, 2011

স্বপ্ন র্শবরী

কাল রাতে ঘুমো-ঘোরে এল এক প্রণয়পাত্র
দু’টি প্রাণের ভালবাসায় কেটে গেল রাত্র
অমাবস্যার রাতে যেন উঠেছিল পূর্নিমার চাঁদ
উল্লোসিত প্রাণের স্পন্দনে নিঝুম প্রকৃতি করেছিল নিনাদ ।

ভাষা ছিল না দু’টি মুখে, তবু যেন কত কথার কাব্যমালা
হৃদয়ে হৃদয়ে হলো কত কথা, চোখে রেখে চোখ
কামনার তটিনীতে তরী হয়ে ভাসছিল চোখের তারা
উষ্ঞ-বাহুবন্ধনে জড়িয়ে অধরপল্লবে দোল দিল অপার্থিব সুখ ।

প্রণয়ানুরাগে হারিয়ে গেল দু’টি হৃদয় স্বপ্নের ভূবনে
র্স্বগ যেন নেমে এল ধরায়, হারিয়ে গেলাম নন্দনকাননে
হৃদয়ে প্রেমের পূরবী, ভালবাসার উপহারে মেঘ-কালো কবরী
খলনায়কের বেশে উঠল ভোরের রবি, দূর করে দিল স্বপ্ন-শবর্রী ।

বুনো অর্কিড হয়ে

মেঘের সাথে মিশে দেখো
পৃথিবী বড় মরুময়
তোমার অপেক্ষায় প্রহর গুনে
তুমি বৃষ্টি হয়ে ঝরবে...

চাঁদের সাথে মিশে দেখো
রাত অন্ধকার; অপেক্ষায় তোমার
তুমি জোৎস্না হয়ে ধরা দেবে...

সুরের সাথে মিশে দেখো
গ্রাম্য এক জলসা
অবাক করা নিস্তব্ধতা
তোমার অপেক্ষায়
তুমি সুর হয়ে দূর থেকে ভেসে আসবে...

সবুজের সাথে মিশে অনুভব করো
গাছ- গাছালী; মাঠ প্রান্তর
নিঃস্ব হয়ে অপেক্ষায় তোমার।
তুমি সবুজ হয়ে আলতোভাবে ছুঁয়ে যাবে...

আধো আলো আধো ছায়া হয়ে
ভোরের আকাশের লাল প্রান্ত ছুঁয়ে
হৃদয় গহীনে ফুটবে বুনো অর্কিড হয়ে...

________রিয়া হাবিব

আমাকে দূর্বল করে দিওনা

চ্ছে হয় তো প্রান খুলে হাসবে সারাক্ষন
যে হাসির পিছনে থাকবেনা কোন লুকানো কান্না..
ইচ্ছে হয় তো ঘুমাবে দুচোখ ভরে
যে ঘুমে দুঃস্বপ্নরা ভর করবেনা কখনো...
ইচ্ছে হয় তো বৃষ্টিতে ভিজবে সারাবেলা
যে বৃষ্টি হবে অনাবিল সুখের বৃষ্টি...
ইচ্ছে হয় তো গান করবে সুরের মহাসমারোহে
যে সুর তোমাদের ভাসিয়ে নিয়ে যাবে স্বর্গের কাছাকছি;
এমনি হাজারো ইচ্ছা আমি পাইয়ে দিবো তোমাদের
--কথা দিলাম;
তোমরাও কি তোমাদের প্রিয় এই মানুষটির ছোট্ট একটি ইচ্ছা পূরণ করবে?

ন্যায়ের যুদ্ধে ধ্বংসবধ নেশায় আমি যখন হয়ে উঠবো
খুনি,নির্দয়,নিষ্টুর,পাষন্ড,বর্বর,নৃশংস,উম্মাদ
তখন তোমরা কেউ পিছন থেকে "আমার প্রিয়" নামটি ডেকে আমাকে দূর্বল করে দিওনা;

পারবে?.....

তস্য ভেজা চাঁদ

কতটুকু দেবার চেষ্টায় ছিলাম, তারপর…
কোথা থেকে এসে দাঁড়ালাম,
তবে ছিল কি বেশ চিড়বিড়?

তোমার নুড়নুড়িতে ছিল কাঁপুনি কথা,
কিন্তু বেশ একটা কীট ছিলাম।
ধরে এনে কিছু একটা বহনে বাধ্য
হে মানবী, শোভামান করা তোমার দ্বারাই পায়
না, ভাবছো হয়তো, একলায় আবর্ত হয়েছি!
না, সেটাও তুমি ভাবার মধ্যে পাও নি।

তবে চক্রাকৃতি সতেজতার কিন্তু ধার হয়নি,
তাই একবার ঠিকও করলাম, সেধেই
জ্যোৎস্নাময়ী বলে ডাকার পূর্ণ স্বাদ।

আবার ভাবছো কেন? বিষয় চিড়ে!
তুমি দাগটেনে দিলেই তো বেশ হয়,
চিরায়ত যেন রেখা ছড়ায় বিন্দুর ওপার।
উপাসনা যেন বাধ্য না হয় তার,
দুয়ার দুয়ার আর কন্যা দুয়ার
সংক্ষিপ্তই থাক তবে তস্য ভেজার চাঁদ।


________ লিখন হাওলাদার

আঁখিজলে

আমি হয়ে গেছি আজ রোমান্টিক কবি
দেয়ালে টাঙানো তোমার ছবি
দেখে আমি কেঁদে মরি আঁখিজলে
চলে গেছ তুমি আমায় অথৈ সাগরে ফেলে
তোমার ছবি দেখে ডুকরে ডুকরে কাঁদি
বিরহে ঢাকা মোর ব্যথার সমাধি।

ঋতুর আবর্তনে আসবে ফিরে
সেই দুঃস্বপ্নের রাত্রি
আলো জ্বলবে না আর এই ঘরে
আমি যে অজ্ঞাত পথের যাত্রী!
থাকব না আর আমি
ভুলে কী যাবে তুমি?
মায়াবী রাতের বাহুর বাঁধন!
ভালোবাসার সেই সব আলাপন?
তোমার বুকের আকাশচুম্বী মিনারে
রয়েছে আমার চুমুর পরশ
রয়েছ কী তুমি এখনো আগের মত
প্রাণোচ্ছল, লাস্যময়ী, প্রাণবন্ত-সরস?

আসবে আবার ফেব্রুয়ারি
ভালোবাসার মাসটি
শূণ্য থাকবে তোমার পাশে
আমার থাকার স্থানটি
মনে পড়বে স্মৃতি ভ্যালেন্টাইনে
বাজবে ব্যথা তোমার মনে
কাটতো দিন হাসিগানে
হঠাৎ হঠাৎ অভিমানে
সঙ্গমসুখের উন্মাদনায়
ডাকতে আমায় এই বিছানায়।

আসবে আবার জ্যোছনা রাতি, হাস্নাহেনার গন্ধে
তোমার গানের সুরে কেউ নাচবে না ছন্দে ছন্দে
বিলের ধারে তোমার সাথে
হেঁটেছি বহুরাতি
জ্যোছনা রাতে ঘরের দ্বারে
কে জ্বালাবে বাতি?

এই নদীতে তুমি আমি
কেটেছি কত সাঁতার
হৈ, হুল্লোড়, হুড়াহুড়ি
আসত যখন জোয়ার।
আগামীতে এই নদীতে
আছড়ে পড়বে ঢেউ
তোমার সাথে এক তরীতে
পার হবে কী কেউ?

২৫।০২।০৬, ডাক্তার পাড়া, ফেনী।

নিস্পৃহ খুব

হৃদয় বিবশ, এখন-
সাপ আর বিচ্ছুর বিষে
মুখে ফেনা ওঠে না।

চাই অন্য কিছু।
মানুষের দাঁতের বিষের দাবী
উপেক্ষা করা যাবে না।

লাল মড়ক।
শব বয়ে বয়ে যেন ক্লান্ত বাহকেরা
নিবিষ্ট নিদ্রায় ঢলে পড়ে কবরে।

নিশ্চিত শয়তান! ভ্রষ্ট হয়ো না
নষ্ট হতে হবে আমাকে পুরোপুরি
অথবা, কী পাবে সান্তনা মরনে।

নরক! আগুনের সেকেলে কারখানা,
সে কী মানুষের মত সর্বভূক?
স্বজাতীর মজ্জায় তার ক্ষুধা মেটে না।

সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ, অমৃতের পুত্র
তাই ভয় অহেতুক, তুচ্ছ বাতুলতা
বিবশ হৃদয়ে সম্পন্ন হোক- আত্বহত্যা।
_________শা মা ইসলাম

তোকে অনেক ভালবাসি রে...

তোকে অনেক বেশি ভালবাসি রে
তুই বুঝিস আর নাই বুঝিস
তোকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ও দেখেছি
হৃদয়ে আপন করেও নিয়েছি
কে জানত যে, এই ভালবাসাটাই
কাল হবে আমাদের জীবনে
একটা সময় ছিল তখন,
তোকে নিয়ে ভাবতে ভাবতেই
কখন যে কোথায় চলে যেতাম
বুঝতাম না নিজেও
তখন কি কোন মোহে ছিলাম
নাকি ভালবাসার মর্মার্থ বুঝিনি??
আজো এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজি
খুঁজে ফিরি সর্বক্ষণ
তুই কি আমার ভালবাসা বুঝবি না
দূরে গিয়েও কি তোর অবকাশ মেলেনা
আমাকে একটু বোঝ, বুঝার চেষ্টা কর
আমি তোকে বুঝি রে
কিন্তু তুই যেটা বুঝিস,
সেটা তো আমার ভালবাসা নয়
তোকে আমি যে এতোটা বছর ধরে
শেখালাম ভালবাসা।
কিছুই কি শিখিস নি??
আজো প্রতিটা মুহূর্ত কাটে
শুধু তোকে ভেবে ভেবে
রাগ করি, ঘৃণা করি, অভিমান করি
কিন্তু ভালবাসি যে শুধু তোকেই
আর কাউকে মন দেব.....
সেটা ভাবতেও পারিনা
তুই কি বুঝবিনা রে
কোনদিন কি বুঝবিনা আমার ভালবাসা।
আমি জানি তুই ও ভালবাসিস আমায়
কিন্তু কি লাভ এই ভালবাসায়
যদি তুই সুখী না হতে পারিস
মানুষ তো সুখ পেতেই ভালবাসে।
তোকে খুব মনে পড়ছে রে
প্রতিটা প্রেমের গান, মনে করিয়ে দেয় তোকে
আমি জানি তুই ও আমার কথাই ভাবছিস
তবে কেন এমন করিস
কেন এমন ভাবিস
সুস্থ ভালবাসায় ফিরে আয়
অনুভব করতে শিখে নে
অনেক অনেক অনেক ভালবাসা
এখনও জমা আছে তোরই জন্যে ।।

____________আল ইমরান।

Saturday, November 19, 2011

অপবিত্র মনের শূন্যতা

অপবিত্র মনের শূন্যতা যদি ভরাদুপুরে
আস্ফালন করে কাঁদে,
জীবনের বন্দনা এই গাছের মতো দাঁড়িয়ে থেকে
হয়তো কোনো একদিন বিলিনের পথে শোভা পাবে;
কাঁচের দেয়ালে আলো ভেদ করে
যে তাপের উষ্ণতা, পৃথিবীর মাঝে করুণ হয়ে-
জানিয়ে দেবে ধ্বংসের বার্তা;
ইরাক লিবিয়া মিশর সিরিয়া
জোয়ারে মেতেছ-যে সব জনতা, জেনে রেখ
তোমাদের পরাজয়-তোমাদের সাথে-করুণ হয়ে
বারুদে বন্দুকে কালো ছায়ার ঢেউ হয়ে
রাতের ঘুমে মন বিষিয়ে তুলে
নতুন কাণ্ডারীর খোঁজে
গোপন অভিযানে চলবে;
হয়তো সেদিনে তোমাদের দেশে
সীমানা থাকবেনা-থাকবেনা ভালবাসা,
তোমাদের সম্পদ তাদের থলায় থাকবে
পৃথিবীর রাষ্ট্রে তারাই তোমাদের বিধাতা,
তোমরা ওদের ভৃত্য-চাও শুধু করুণা-করুণা,
অপবিত্র মনে তারা নীতির বাণী শোনাবে
আর উল্লাসে উল্লাসে মৃত্যুর ফাঁদে লাশ হবে-
এই আরব বেদুঈন-তোমরা যাযাবর হয়েই রইলে
তোমাদের ইতিহাস তোমরাই সৃষ্টি করলে।

______ওমর ফারুক

Thursday, November 17, 2011

ভালবাসা মানে..

ভালবাসা মানে ছাই;
দাউদাউ থেকে ধিকিধিকি জ্বলে,
ধোঁয়া-কুন্ডলী নাই।

ভালবাসা মানে পাথর;
জগদ্দলের গড়িয়ে যাওয়ায়
শ্যাওলা হচ্ছে কাতর।

ভালবাসা মানে ধুলো;
লিলুয়া বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে সে
পায়ের আঙ্গুল ছুঁলো।

ভালবাসা মানে কারাগার;
স্বেচ্ছাশ্রমের শ্বেদবিন্দুতে
গোলকধাঁধার পাগাড়।

ভালবাসা মানে বলি;
যুপকাষ্ঠে গর্দান পেতে হাতে
তুলে দেয়া ভোঁজালি।

ভালবাসা মানে কত কি...
কারও মতে তাই পরম মোক্ষ্য,
কেউ ভালবেসে পাতকী।

শুধু একবার

তোমার কি একবারও বলতে ইচ্ছে করে না আমাকে,
একবারও পলক ফেরাতে ইচ্ছে করে না আমার প্রতি-
কৃতজ্ঞতার দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছি
অথচ একবারও উচ্চারণ করলে না
প্রিয় দিগন্তের কথা, স্নিগ্ধতার উচ্ছ্বাসে
এইমাত্র প্রার্থনা থেকে অফুরন্ত অবসর আমার!

তোমার চোখে অনুতপ্ত ঈভের কারুকাজ
কোমলতার ভেতর থেকে তুমি হয়ে ওঠছো সচেতন

এক্ষুণি জানিয়ে দাও প্রতিশ্রুতির শেষ উচ্চারণ
আঁচলে তোমার হাত গোটানো দেখলে অবাক হয়ে যাই
কেমন মুগ্ধতার আশ্বাসে অভিভূত হয়ে
প্রেমের নির্ভরতার জন্যে তাকিয়ে থাকি
শুধু একবার অবিশ্রান্ত ঢেউয়ের মতো
তুমি জানিয়ে দাও ঈভের শপথে।

কেবলই উদ্যমের পাশে আমার স্বপ্নের গাঙচিল
তোমার হাতে আমার হাত- বিশ্বাসের প্রতীক।


বসন্ত....!

প্রকৃতির সাজবে আজ নিজেরই মতো
উপকরণ-গাছ, ফুল,লতা,পাতা আছে যতো।
সঙ্গী পাখ-পাখালি, ভোমড়া আর প্রজাপতি
বাদ যাবে না কেউ এমনকি লাজুক লজ্জাবতী।

শাখে শাখে কচি পাতা, সেই সাথে ফুল।
মৃদু-মিষ্টি সুবাস ছড়ায় আমের মুকুল।
ফুলের রাণী গোলাপ, ফুটে সারাটি বছর।
সেও নেই পিছিয়ে, দেখাতে নিজের বহর।

ফুটে কত মহুয়া, মিলেশিয়া, পলাশ শিমুল,
কনজিয়া , ব্রাউনিয়া, কাঞ্চন আরো যে বকুল।
এতসবের মিলবে দেখা শীতেরই অন্তে
আমাদের সকলের প্রিয় ঋতু এই বসন্তে!!

ঝিরঝিরে দোলা দেয়, দখিনের হাওয়া
কষবে হিসাব কে আজ? সবই পাওয়া।
উচ্ছ্বল কিশোরীও আজ ভাবে আনমনে
নিখাদ খাঁটি স্বপ্ন বুনে ছোট্ট তার মনে।

সাদা কাপড়ের মানুষ

সবাই চেয়ে আছে
সাদা কাপড়ে মোড়ানো আগাগোড়া, একটা বস্তু
নিথর নি:স্তদ্ধ হয়্ওে রেহাই নেই তার
ধরেছে পচন তাকে সবদিক ঘিরে।
দৃষ্টির তীক্ষ্নতায় ক্ষত- বিক্ষত, তবু পড়ে রয়
এক কিংবদন্তী, সফেদ কাপড়ের মাঝে অসহায়
আর্তনাদ শুনে পারেনা ফিরতে এপাশ থেকে ওপাশ
ঠিক পড়ে রয় আগা গোড়া মোড়ানো কাপড়ে।
মহাব্যাস্ততা নিয়ে সবাই চেয়ে রয়
আপনের পনে, পচনশীল দেহ
যা ঢেকে দিয়েছে কয়েক টুকরা কাপড়
সাজানো ছিল কোন এক দর্জির তাকে
সবাই ব্যাস্ত হয় দু'হাতে মাটি তুলে চাপা দিতে
এক জীবন্ত ইতিহাস
কি দুঃসাহষ! ঢেকে দেয় এক আস্ত মানুষ ঢিল ছুড়ে..........

ধূসর জীবন

আলোকিত জীবনের হাতছানি ম্রিয়মাণ
শত আলোকবর্ষ দুরে,
বেঁচে আছি সত্যটুকু নিয়ে জেগে উঠি
শ্বাস নেই ভোরের বাতাসে।
মোহাচ্ছন্ন কল্পকথা থেমে গেছে
বাস্তবতায়, তবুও থামেনি জীবন
মৃত্যু হয় স্বপ্নের প্রতিদিন,
শীতল হই নীল ঝড় বাতাসে।

রাতের মতো একা আজ আমি
ধূর্ত মানুষ হতে পারলাম না,
অপেক্ষার প্রভাত ডাকে না এখন
আলোর স্নানে, শিশিরের স্নিগ্ধতায়।
স্মৃতি জমা জীবনের ভার বয়ে যাবো
অমৃত্যু অনুক্ষণ স্মরিবো তোমায়,
ভুলে নয়; স্ব-জ্ঞানে দুরে আছি
শুধু জেনে রাখো ভালবাসি ভালবাসি…



______সৈয়দ মাজহারুল ইসলাম

Wednesday, November 16, 2011

অর্থহীন

আবার শুন্যতার মাঝে পথ চলা,
আবার কথার কথা বলা।
আবার ঢিমে তালের ভাঙ্গা জীবন,
আবার একঝাক কালপুরুষের স্বেছায় মৃত্যুবরণ।
আবার ভুরু কুচকে কপালে ভাজ,
আবার চম্পাকলির সস্তা প্রসাধনে লেপ্টানো সাজ।
আবার অলিতেগলিতে খিস্তিখেউর,
আবার অন্ধ মায়ের শুরু মৌন প্রতিক্ষার।
আবার নেশাতুর হয়ে বাড়ি ফেরা,
আবার বেড়ার ঘরে চাঁদ গলে পড়া।
আবার আস্ফালন অহংকারী প্রেমিকার চাওয়া পাওয়ায়,
আবার প্রেমের ব্যেবচ্ছেদ ছলনা আর অপারগতায়।
আবার ভালবাসার আরেকটি জন্ম অসম্পূর্ণ সহবাসে,
আবার সূচনা আরো কিছু জীবনের, প্রকৃতির পরিহাসে।

ইচ্ছেটা.....

বিমুগ্ধ বিমর্ষ আকাশে
ভেজা চাঁদ যেন পূর্ণিমার দাবি রাখে
তারাগুলো যেথায় একজোট বাঁধে
বাঁধে মোহিত সুর বীণায়।
সেথায়, ভাবনার ছেঁড়া সুতো
নীলচে নির্বাসনের কাছে জমা রেখে
বনবিলাশী একাকী একজন
কুয়াশাভেজা হাসনাহেনা জড়ায় অনুভবে
ব্যাস্ত শহরের ব্যাস্ততা মাখা অস্থিরতা ছেড়ে
দূরের কোন পাড়াগাঁয়ের হাতছানি
টিনের চালে পাতায় জমা
কুয়াশার টুপ টাপ ঝরে পড়া
সেই টাপুর টুপুরের মোহে মোহাচ্ছন্ন
রাতটা যেন মাথার উপর
বিছানো শীতলপাটি
তার উপর নকশী কাঁথা ছড়িয়ে
শুয়ে পড়া অবিমিস্রিত অবসন্ন দেহে।
শীতের প্রথম ভোরে--
হিমশীতল টাটকা খেজুর রসে মেতে,
দুপুরে সালদ নদীর পাড়ে
উঁচু টিবির উপর আমগাছটার হাতছানি
সন্ধ্যায় পাখির মত কুড়িয়ে আনা খড়কুটো
জ্বালিয়ে আগুন, উষ্ণতার অনুভবে
দূর দিগন্তে জেগে উঠা সেই ভেজা চাঁদ
আলোতে উদ্ভাসিত আকাশ, মাটি, মন
হঠাৎ দেখা তারাখসা
ভেতর থেকে জাগ্রত ইচ্ছেটা
এভাবেই থেকে যেতে চাওয়া আমরণ।।


________আল ইমরান
(প্রথম আলো ব্লগ)

জানি একদিন!!!!

জানি একদিন চলে যাবো
চলে যাবো জানি অনেক দূরে!
যেভাবে নক্ষত্রগুলো যাচ্ছে দূরে....
পৃথিবীর থেকে দূর বহু দূরে।
সেভাবে একদিন আমিও চলে যাবো!
চলে যাবো জানা সব সীমানা ছেড়ে।
চলে যাবো অজানার পথ ধরে!
চিরতরে জানি মিলিয়ে যাবো।
মিলিয়ে যাবো শূন্যর সাথে!

মনে রাখবে কি তখন আমায়?
কখনো পড়বে কি মনে!
কখনো ঝরাবে কি দু'ফোট অশ্রু আমায় ভেবে?
কাঁদবে কখনো ব্যাকুল হয়ে!
হয়ত বা কাঁদবে।
হয়ত বা অশ্রুতে নয়ন ভাসবে...
তারপর জানি একদিন...
একদিন সব ভুলে যাবে।
সব সৃতি মুছে যাবে!
হয়ত বা আসবে নতুনের আহ্বান!
পুরনো জায়গা ছেড়ে দেবে।
এভাবে জানি মুছে যাবো
মুছে যাবো জানি চিরতরে!

মৃত্যু ভাবনা

এখন গভীর রাত দিনের ভাবনা ঘুমিয়ে পড়েছে
ঘুম পোকার মনে টিক টিক শব্দে নেশার ছবি ভাসে
পৃথিবীর স্বপ্ন অবচেতনে ফুপিয়ে কাঁদে
হয়তো আমার মন এখান থেকে অনেক অনেক দূরে
যেখানে মানুষ বুনো হয়ে পাখির সাথে খেলে
হয়তো আমার মন সাদা বকে-বিস্তৃর্ণ পথে
দুই ডানা মেলে উড়ে উড়ে সরোজ হয়েছে;
আমার ভীষণ ইচ্ছাগুলো আজ মৌচাকে জমে
হিম হিম রাতের কাছে পরাজয় মেনেছে-
আমি রাতের মৃত পোকা হয়ে
মাটিতে মিশে চাঁপাফুলের গাছ হয়ে
দিনের আলোতে শোভা পেতে চাই-
রাতের বাতাসে চারদিকে যখন
মরা শব্দের জেগে ওঠা আওয়াজ ভাসে,
আভাসে ইঙ্গিতে বুঝি হায়!
পৃথিবীর সবগতি থেমে যায়-বলে যায়
আমার যাবার দেরি নাই!
বিদ্যুতের মতো ছোটাছুটি করে
পৃথিবীর আলোতে যতক্ষণ বাঁচি
এটাই তো অনেক-অনেক বেশি
হয়তো ক্লান্তির পরে বিধাতার নামে
নতুন শব্দ জপ করি-
মানুষের মতো মানুষ হতে চাই
রেখে যেতে চাই ভাবনার পৃথিবী,
চলে যেতে চাই পৃথিবীর পরে-
এজীবনের প্রেম প্রার্থনার গান হয়ে
নিরাশ পৃথিবীর বুকে মৃত্যুর কবর খোড়ে
হয়তো ধূপকাঠির গন্ধ ভেসে ভেসে
মৃত্যুর এখবর জানান দেবে চারদিকে;
জনতার ভিড়ে সেদিন কিছু প্রিয়মুখ
হয়তো শেষ দেখা দেখতে পাবেনা,
নরম ব্যাকুল কাঁন্না আমার ঘুমে কষ্ট দেবে
এহৃদয়ে তারা সারাক্ষণ জেগে রবে;
সেদিন আমার আঙিনায় আসবে অতিথি
তোমরাও হয়তো চিনবেনা-
প্রভাতের ধূসর অন্ধকারে কিছু হাত
হয়তো কিছুহাত দোয়ার প্রার্থনা সাজাবে।

মনের জানালা

মনের জানালায় দাঁড়িয়ে প্রিয়
কেন বাজাও বাঁশি অবেলায়
উচাটন হয় মন, থাকিতে চায় ঘরের কোণ
বাঁশির তানে ছুটে যায় নীপবন ।

আধো রাতে ঘুম ভেঙ্গে যখন
দক্ষিণা জানালা খুলে চাঁদের কিরণ
দেখি তারা ভরা রাতে
গোপন চিঠি পাঠাও তুমি সমীরণের সাথে ।
পড়ে আমি পাগল পারা
ভাবাবেগে ভাষা আমার ছন্দহারা ।

হাস্নাহেনা, কামিনী আর চাঁপার গন্ধ
নিশাচর পাখির কূজন,
শেয়ালের হুক্কাহুয়া শব্দে নড়ে উঠে রাতে নি:স্তব্দ
তার মাঝে ভেসে আসে সেই মাতাল সুরের তান
এ কী অলীক কল্পনা, না বাস্তবতা
জানি না, বুঝিনা, বুঝিতে চাই না
শুধু জানি এ এক যাদু-মন্ত্র, আর্শ্চয এক মাদকতা
সেই সুরের তানে আমি হারাই চেতনা ।

বুকের মধ্যভাগ থেকে উচ্ছ্বসিত প্রেম ধারা
যেন হিমাদ্রীর বুকচিরে উৎপন্ন এক ঝরণা
এঁকে বেঁকে চলে অরণ্য, আপন মনে পাগল পারা
ছন্দে আনন্দে হিন্দোল দোলায় তোমার সুরের র্মূছনা
আপন বেগে ধেয়ে চলে বহতা নদী সবুজ সমতল
রাশি রাশি প্রেম যেতেছে ভেসে, উল্লোসিত হিল্লোল
ছুটে চলে সমুদ্র পানে মিলন মোহনায়
চেতনা ফিরে দেখি এখনও আছ দাঁড়িয়ে মনের জানালায় ।

Friday, November 11, 2011

স্বর্গের প্রণাম


স্বর্গ বড় একা!

অনেক আধার দিয়েও
প্রলোভনে পরাজিত;
চেষ্টায়, চাতুর্য্যে,
প্রমাণে পরাভূত--

পারিজাত পুষ্পসম্ভার
নিবেদনে আনত
ধরনীর পদতলে
স্বর্গ প্রণত...

বিশ্বসখার আলিঙ্গনাহ্বানে
সুভগ স্বর্গ ফাঁকা।

যাচ্ছ সরে। ইচ্ছে করে।

ইচ্ছেমতই ভাঙ্গছ শাসন
তাচ্ছিল্য টুকু
রহস্য চাদরে থিতু এখন
ইহ-জাগতিক সুখে তন্দ্রাবিষ্ট।

একটা পদ্ম-দীঘি
ডুবন্ত মুখ কাঁপা কাঁপা
তির তির জলকেলি
স্বপ্নে রাগ ভৈরবী।

যোগ বিয়োগের বিভাজনে
অচিন আগন্তুক,
প্রতিফলনে আঁকো পরশ্রীকাতর ক্রোধ
মনের মিনার আজো তীরে এসে ডুবে।

উঁচু মাপের ব্যঙ্গ চিত্র এঁকে
ভঙ্গিতে দশ ভুজা
জারিজুরি আঁকিবুঁকি
চারদিকে দেখো, ইচ্ছেমত ভাঙছ যেন কিছু।

প্রবোধ

ভালবাসা আজ শীতল ঘড়ে কপাট এঁটেছে
কবিতার জন্য উষ্ণতা নেই,
নিয়ম মেনে নেই, নিয়মের কাছে হার মানি
নিয়মের চাবুকে রক্তাক্ত হই;
আর তুমি কেবলই দোষী করো আমায়!

বালু চরে হাটা যায়, আর চোরাবালিতে?
তুমি তো জানো সবি তবুও!
শব্দগুলো সহজ করো আমি রক্তাক্ত হই,
নতজানু জীবনকে ক্ষমা করো-
তুমি বাঁচো আলোতে আমোদে।

তোমার আর আমার মাঝে কেবল শব্দের খেলা
এখন অবেলা বন্ধ খেলা, শুধু স্মৃতি জাল বোনা
কাঁদি না এখন আমি, হাসি যেনো কি?
অপেক্ষা এবং প্রতীক্ষা শব্দ দুটি এখন অবকাশ-হীন
স্বপ্ন আমার নীল আজ ঘুড়ি নাটাই বিহীন।

আকাশ ভরা চাঁদের আলো

আকাশ ভরা চাঁদের আলো
কংশ নদীর বুকে।
চাঁদটা তার মায়াবী রঙ
ঢালছে যেন সুখে।

বাতাস এসে নদীর পানি
করছে স্রোতস্বিনী।
শুনছি কোন অজানার
চুড়ির রিনিঝিনি।

পাখীরা সব ফিরছে ঘরে
নানান আয়োজনে।
গাছের পাতার ফাঁকে এসে
মিলছে আলিঙ্গনে।

এমন দিনে মনটা থাকে
রঙ্গিন দিনের সাঁজে।
গদ্যে-পদ্যে কাটছে ক্ষণ
উদাস নদীর মাঝে।

সব ক্ষতি মেনে নিলাম

তোমার চলার দুর্বার গতি
আমাকে তাড়া করে
ফিরে যেতে দুঃস্বপ্নের ক্ষণে
যখন তুমি নিশ্চিন্ত মনে
দিয়ে দিলে সম্মতির রাজদূত
আর বাড়িয়ে দিলে হাতের আঙ্গুল
পরিয়ে দিল সোনার ফুল
তখন তুমি বেশ সাড়ম্বরে
হাস্যেজ্জ্বল ছিলে অবনত মস্তকে।

আমি জানতাম না আমার ভালোবাসা
একদিন নিয়ে আসবে আমার জন্য হতাশা
ভালোবাসার সন্ধ্যাপ্রদীপ হয়ে যাবে অনুজ্জ্বল
এমন করে আমার ঘরে!
আমার দুচোখের জল টলমল
ভাবনাহীন সাত সমুদ্রের তরে।

কনকপ্রবাহে বৈশাখের ঝড়ে
ভেঙ্গে গেল মন এতদিন পরে
তবুও মেনে নিই এ আমারই পাপ
আদিমতায় পেয়েছিলাম ক্লান্তির ছাপ
অসতর্কতায় হয়েছিলো আমারই ভুল
চিন্তার সাগরে পড়ে পাই নি কোন কূল
সব ক্ষতি মেনে নিলাম বিনা প্রতিবাদে
তবুও কলঙ্কের বোঝা রইল কাঁধে
ধীরে ধীরে হয়তো তারই ফলে
হারিয়ে যাবো একদিন নীল নদের জলে।

১৪।০২।০৬, ডাক্তারপাড়া, ফেনী।

রুদ্ধ চাপল্য

বৃষ্টিস্নানের অনুরক্ত প্রেয়সী স্বীয়া কুহেলিকায়
চমকিত নয়ন পেতে ঈষৎ শৈত্যের বাহিকায়
অঝোরে ঝরায় জল,
যেন ইচ্ছে অপূরণের রিক্ত তাড়নে বিরক্ত মন
স্বচ্ছ অপলা বিমল।

ক্রন্দন তৃষ্টা মিটিয়ে ফুসফুসের রুদ্ধ বায়ুর নিঃসরণ,
অতৃপ্ত তৃপ্তিতে নেমেছে গোধূলী-
হৃদয়ে সিঁধেছে ব্যাথ্যার কুন্ডলী,
ললাটে জমেছে বিন্দু ঘামের ঐরস,
পাঁজরের পর্শুকায় গেঁথেছে বিষমাখা রক্ত,
হিউমেরাস-ফিমার ভেঙেচুরে একাকার,
শিরদাড়া বেয়ে নেমেছে মৃত্যুর শিহরণ,
কলিকাদেবীর অদৃষ্টে তব নিকৃষ্ট বিজ্জুলী!
ক্ষণিকের ধরণীতটে রাজ্যের নৈরাজ্য!!

অবিন্যস্ত এলোকেশে তনয়ার শীতল দেহ,
মেঝের সফেদ কার্পেটজুড়ে লালচে আভা,
শিরা-উপশিরায় তীক্ষ্ণ ক্ষুরের যন্ত্রণা,
রক্তলসিকা বায়ুস্পর্শের বাঁধ মানছে না;
ঠোঁটের কোণে অদ্ভূত অমলিন হাসি,
চোখের মাঝে এখন যেন চির-অনন্ত প্রশান্তি!!

আজ প্রিয়াকে অনেক সুন্দর লাগছে..
কতদিন তাকে হাসতে দেখি না?
বহুদিন পর সে হাসছে,
রক্তবিহীন মুখে মৃত্যুর অনাবিল হাসি!!

তোমার আগমন

ভরা বাগান ছিল সেদিন ফুলফুল
ছিল ধরিত্রী শিহরনে চূর
আঙ্গিনায় সাজানো মমতা যেন সঞ্জীবন ভরপুর।

পাখিরা গাইছিল সুরে
ছিল নদী বহতা মনোরম
মেতেছিল তটে, টুংটাং শিলানুড়ী সুর-সরগম।

প্রভাতের রাঙ্গা আলো জ্বলছিল সুন্দর!
সুমিষ্ট স্পন্দনে সোনালী প্রভায়;
আর কে যেন বলছিল ভাষায়---
“আজ আসবে কেউ তোমাদের মাঝে
থাকবে সেও বন্ধু হয়ে আজীবন তোমাদের সাজে”।

কে যেন গুনছিল প্রহর ধরিত্রীর সাথে--
এই সুন্দর ধরণীতে তোমার আগমন
হয়ে ছন্দমাতম।

স্বপ্ন বিনাশী!

স্বপ্নটা ছিল চাঁদের আলো মাখা।
নরম, কোমল, তুলতুলে অনুভব।
যার পরশে স্মিত হাসি সর্বদা ঠোঁটের কোণে।

সাধ্য কি ছিল কারো বা কোনো বিষাদের?
করবে মলিন অথবা বিষণ্ন অবসাদের?

..................
ঝড় কী তবু আসতেই হয়?
হোক, তবে কোনো পুর্বাভাস ছাড়া কেন!!
এটাই কী তবে ভবিতব্য?
না, মেনে নিতে কষ্ট হবে না।

ছুঁড়ে ফেলার কষ্ট,
না পাওয়ার কষ্ট,
নিজেকে লুকানোর কষ্ট,
কষ্টের কুন্ডলি যেন দলা পাকিয়ে রয়েছে,
কেউ কি জানে? তুমিও জান না।
তবে তো ভয় নেই-
আমিই জয়ী, বরাবরের মতো! বিজয়ী বীর!!

ইচ্ছেগুলোকে ছুটি দিয়ে দিয়েছি।
মুক্তির আনন্দে মেলেছে ডানা ওরা আকাশ পানে।
কোনো অনুক্ষনে কি ফিরবে তারা আবার হৃদয়কোণে?
আমিই যে চাই না!

নিজেকে বড্ড ভালবাসি আমি।
তাই তো আমার আমিত্বকে জয়ী করলাম।
দিলাম তোমাকে বিসর্জন!

তুমিহীন

তোমায় না পাওয়ার কষ্ট
এখনো আমায় কাঁদায়
আমার দু:খে আকাশের চাঁদ
কষ্টগুলোতে ভাগ বসায়।
দূর্বাঘাসে শীতের কুয়াশা
...আমার অশ্রু হয়ে ঝরে
আমার ব্যাথায় এখনো
নিশাচর চিৎকার করে।
আমি কাঁদি ভীষন ,
রাত জেগে একা একা ,
অথচ তুমি জান না
এ বুকে কতটা কষ্ট রাখা ।
আমার সারাদিন মেঘলা হয়ে যায়
আমার আকাশে জোছনা আসেনা..

তুমি আসবে….

তুমি আসবে ভেবেই বসে আছি
সেই সন্ধ্যেবেলা থেকে,
যখন ঝাড়পোকার আওয়াজ
আর...
জোনাকিতে ভোরে ছিল চারিদিক।
চাঁদ হাসি মুখে উঠেছিল ঘুম থেকে
চারিদিকে নির্জনতা,
গাছের নিচে বসা আমি একা।
মনে প্রশ্ন জাগেনি তা নয়—
তবে মন বলেছিল তুমি আসবে।
কিন্তু চাঁদ ঘুমিয়ে পড়ল, ঝাড়পোকার আওয়াজ
আর—
জোনাকিও কোথাও লুকিয়ে গেল;
কিন্তু—
তোমার খোঁজ মিলল না!
তাহলে কি তুমি আসবে না?
মন বলছে তুমি আসবে।

Wednesday, November 9, 2011

জীবন চলে এভাবেই

চারিদিকে তাকালে যেন মনে হয়
সবাই উপহাস করছে,
মিথ্যায় মিথ্যায় গড়ে উঠছে
বিশাল মিথ্যার রাজ্য।
একটি ভুলকে শুধরাতে গিয়ে
হয়ে যায় অনেক ভুল।
নেই কোন ক্ষমতা
যে ক্ষমতার বলে থাকবে সব সুখের মূলমন্ত্র।
যে চোখের আড়ালে বিশ্বাস ভাঙ্গা হয়
সে চোখের ভিতরে থাকে কতনা অশ্রু।
একটি মন ক্ষয় হতে হতে কখনও নিঃশেষ হয়
কখনওবা ঘৃণার একটি প্রলেপ সৃষ্টি হয়।
জন্ম কি সত্যি আজন্ম পাপ?
নাকি পাপকে আড়ালের জন্য এ বাক্য।
জীবন হয়ে পরে অন্যের খেলনা,
তাইতো আজ কেউ সুখী নয়।

শুধুই তোমার জন্যে

তুমি যদি ভালবাসতে না পারো
তবে ভুলে যাও এই আমায়;
আমাকে ভুলে যেতে বলো না কখনো।

তবুও ভালবাসি তোমায়
বারে বারে ফিরে ফিরে ভালবাসি তোমাকে।

তুমি যদি কাছে আসতে না পারো
তবে দূরে থেকো সেই ভালো;
আমাকে দূরে থাকতে বলো না কখনো।

তবুও কাছে আসি আমি
তোমার অজান্তেই কাছে আসি।

তুমি যদি মনে রাখতে না পারো
তবে মনে রেখো না আমায়;
আমাকে ভুলে যেতে বলো না কখনো।

তবুও মনে রাখি তোমায়
হৃদয়ের মণিকোঠায় রেখে দিই তোমারই নাম!


____ওমর জাবিন

Saturday, November 5, 2011

তুমি আসবে জেনে


প্রতিদিন সাজিয়ে রাখি ফুল
এমনিভাবে,
কত বাহারি ফুলের সমারোহ
কতই না সুঘ্রাণ তার!

তুমি আসবে জেনে
আমার স্বপ্নের পালক রেখে দিই শিয়রে,
ফুলে ফুলে ছেঁয়ে যায় আমার ভুবন…

আমি নির্বাণ হবো বিশ্বাসে
তোমাকে বিশ্বাস দিবো অন্তরে।
তুমি চাইলেই ভালবাসায় বিলীন হবো
দিবো তোমায় প্রণয়ের অভিলাশ!

তুমি আসবে জেনে
আমি অনুরণিত হই সুখের দহনে
তোমাকে পাওয়ার ছলে ভুলে যাই দু:খ।

কতই না ভেবেছি তোমায়
আপনার করে জেনেছে হৃদয়
তুমি চাইলেই ভালবাসায় বিশ্বাস হবো
দিবো তোমায় মধুর জ্বালা!

প্রতিদিন সাজিয়ে রাখি আমার ভুবন
এমনিভাবে,
কত সুন্দর বিহ্বল চকিতে
কতই না মধুর তার আলাপন!

কাঁদবো না অহেতুক আলোর সন্ধানে

কাঁধে দিনভর বসে নির্বিকার
একঝাক কাল কাক
মাথা ঠুকরিয়ে মগজ খেয়ে চলেছে আমার...

কাকের ঠোঁটে লেগে থাকা শাদা মগজ
কী দারুণ রক্তোজ্জ্বল!
ঠিক ইরাকের থেবড়ানো রাজপথের মত
আর তার অদ্ভুত গন্ধে ইচ্ছে করে
নিজের মাথা নিজেই চিবিয়ে খাই অবিরত
যেমন মুসলিমবিশ্বের তাজামগজ ভোনা করে খায় ইসরাইল নিত্য।

আঁধার হলেই কতকগুলো নেংটে ইঁদুর
আমার হৃদপিণ্ডন্টাকে পরিত্যক্ত শুকনো রুটি ভেব কেটে যায় অবিরত
তাদের দাঁত আর নখগুলো তখন থাকে খুবই ব্যস্ত
ঠিক মি: বুশ আর টনি ব্লেয়ারের লকলকে রক্তাক্ত জিহ্বার মত।

আজ রাতে আর উঠবে না চাঁদ
গতকাল কৃষ্ণপক্ষের একফালি চিকণ চাঁদ ভয়ে লুকিয়েছে মুখ
অমানিশার অন্ধকার কালো পতাকা উড়াবে পৃথিবীর বুকে
তারপর আঁধারের বিজয় উৎসব চলবে সারারাত
যেমন ধর্ষিতার কান্নায় পুলকিত হয় জাতিসংঘের অন্ধ চোখ।

অনুষ্ঠান শেষে অন্ধকারগুলো একসময় হিংস্র ডাকাতের মত
হুড়মুড় করে ঢুকে যাবে সবক’টা অলস করোটির দরজা ভেঙ্গে
আলোমাখা সবুজ সাহসী মগজ
তারপর তার আয়ুষ্কালব্যাপী
গুয়ান্তানামো বের নগ্ন গুহায় অন্ধকারের হাতে হবে সোপর্দ
যেখানে অবিলম্বে তার শেষ আলোটুকু শুষে নিয়ে
উল্লসিত হবে মার্কিনী ধর্ষকামী নারী।

এরপর অন্ধকারের জয়জয়কার অন্ধকারময় শুভ দিন
অন্ধকারের জন্য প্রশস্থ হবে পূর্ব-পশ্চিম, ‍উত্তর-দক্ষিণ
বন্ত্রমুক্ত মানব সভ্যতায় আর কোন চোখ ক্লান্ত হবে না
আঁধারের উষ্ণ আলিঙ্গনে
তাই আমি আর কাঁদবো না অহেতুক আলোর সন্ধানে।

প্রেম নাকি বড্ড ছোঁয়াচে তার জন্যই বালোবাসার পাঠ নিতে যেতে হলো ফুল আর মৌমাছির কাছে। মৌমাছি বলল, সে জানে না ফুলের পরবর্তী কাহিনী জীবনের ঝরা শিউলি-বকুলে

থাকো ঘুমে
কপাট খুলে আসো উঠানে
দেখো ঘাস ভিজেছে কুয়াশায়

সিক্ত-শুদ্ধ করবো পাপাত্মা মনন
ঝড়িয়ে দিবো বিষাদের পাতা
আজ আবার স্বপ্ন দেখাবো আসো,
............সীমান্তে রামধনু হবো, তুমি আসো।

আজকের দিনটা আসবে না পাপ নিয়ে
নিরীহ মাকড় কুয়াশা ফুড়ে ভোর আসবে
বাবুই-লজ্জাবতীর ঘোমটা উঠবে
জিম্মায় না থাকুক মক্তবের আলিফ যবর আ
তবু আসবে শুভ্র বরফ প্রভাত
গরল হেরিবে মননের কোরবান,
.............মসলিন কারুশিল্পে জড়াবো, চলে আসো।

কচু-পাতার শিশির আর’তো নয় বন্দী
রক্ত পলাশের অনির্বাণ ফতুয়া উড়িয়ে
দেহ বিক্রেতার অস্থি সঙ্গম হবে না

কলাভূক বধূর দেহাংশ আজ মাকাল চিল
কাদা-জলে হবে না হাঙ্গরের লুটপাট
মহা-চিত্রকর ডাকে পিপীলিকার লং-মার্চ
আবশ্যিক হত্যায় আঁকো কাশবনের আগুন,
............ইজেলের রং দিবো, চলে আসো।

দেবদূতের আচ্ছাদিত সৌদামিনী জাগবে
আস্তাকুঁড় হবে অস্ত্র প্রতিমার কোষাগার
যুগ আসবে, যুগ চলেও যাবে

ঈশ্বরের আদালত পাপ খারিজ করবে
পয়গম্বর আসবে না বলে
গন্দম আদমের জন্মতো বন্ধ হবে না
...............প্রজন্মের তরে ভ্রূণ দিবো, চলে আসো।

তোমার চড়ুই ঘরে ফড়িং উড়ে বেড়াবে
রৌদ্র-নীল মাছরাঙা মন হবে কাঠ বেড়ালি
বাবুই তৃণ মিত্রতা ঘুচবে না

তবু আজ শুদ্ধ দিনে আসো
বনমোরগের লাল-ঝুটি লোহিত কণিকা ডাকে
জমাট রক্তের খয়েরি ফুলের নিমন্ত্রণে
ধানী বউয়ের মন-পুজোর প্রসাদে
জোছনা লোভী কবিদের পথ মাড়িয়ে
মাতাল মহুয়া মন করবো নিষ্পাপ
মগডালে বানাবো বকের নতুন বাসা।

প্রেম বলে কিছু নাই

প্রেম নাকি বড্ড ছোঁয়াচে
তার জন্যই বালোবাসার পাঠ নিতে
যেতে হলো ফুল আর মৌমাছির কাছে।

মৌমাছি বলল, সে জানে না
ফুলের পরবর্তী কাহিনী জীবনের
ঝরা শিউলি-বকুলের কান্নায়
শোনে নি কখনো বিরহের গান।
শিমুল কাঁদে, পলাশ কাঁদে
তবু ভ্রমরের পাখায় থাকে গুঞ্জন-
...............মধুর ঘ্রাণ।

প্রেম প্রেম বলে সাগরে উঠেছে ঢেউ
তবু কেউ বলে নি প্রেম নিছক মায়া
চাঁদ নয় সাগরের কেউ।

লক্ষ বছরের ইতিহাসে কোথাও দেখি নি মানুষের প্রেম
জাগ্রত রয়েছে জগতের বুকে বিরহের নীল হেম।

মৌ্মাছি তার প্রেমিক নয়
জেনেও কি ফুল বাড়ায় তার বিকশিত বুক ?
আর তারই ছন্দে মাতাল পৃথিবী
খুঁজে ফেরে স্বর্গীয় সুখ ।

তাই আর শিখব না প্রেম
ফুলের কাছে বিরহ বেদনায়
মৌ্মাছি-ভ্রমর সকলেই জানে প্রেম বলে কিছু নাই।


অভিমান

একদিন ফুরোবে জীবনের অসীম এই ব্যস্ততা
অশ্রুর ফোঁটাগুলো রক্ত হয়ে ঝরবে সেদিন;
তোমার চোখ থেকে আমার তপ্ত দেহে
আমি ভেসে যাবো রক্তজলের বৃষ্টিতে ।

একদিন হারাবে আঁধারের নীলিমায়
অজানার পথ ধরে চলে যাবে দূরে কোথাও
অরণ্যের দীর্ঘশ্বাস কান পেতে শুনলেও
বুঝবেনা পুড়ে যাওয়া বৃক্ষের মর্মজ্বালা ।

একদিন হাঁটবে পথের সেই নির্জন প্রান্তরে
যেখানে মিশে আছে মুছে যাওয়া দিনগুলো
একাকিত্বের কষ্টানুভবে আর্তনাদ করলেও
সঙ্গী হবেনা একটি পুরনো স্মৃতিও ।

একদিন খুঁজবে হারানো সে ঠিকানা
হৃদয়ের আরশীতে দেখবে সেই প্রতিচ্ছবি
তৃষ্ণার্ত চোখে শত হাহাকার উঠলেও
ভাঙবেনা অভিমানের এই কঠিন দেয়াল ।

পাথরের পরকীয়া পাপ


বুকের জ্বলন নেভে না ক’ফোট নয়না-সারে
স্মৃতির দুয়ারে মাথা-কুটে ভাঙ্গে সব আগর
অ-সন্মানের ধৃষ্টতার দেয়াল ভাঙ্গে না,

স্বর্গের কপাট খুলেছি, দেবী
স্বেচ্ছাচারী বেভুল বসন্তের ছায়ে
গায়ে জড়িয়েছি আজ রঙিন কাফন,

দেহের উষ্ণতা যদি মনের বাহুডোর ডাকে
বুক ভরা অবোধ্য আবেগ যদি উদ্বাহ নৃত্য করে
তবে আর কাব্য লিখে শব্দের অপচয় করবো না

তার চাইতে লাইসেন্স বিহীন দোনলা বন্দুক হবো
আগুন ঝরাবো লিবিয়া, ইরাক কিংবা আফগানিস্তানে
তখন সে শব্দ-গুলো দিয়ে মানবতার গুলি বানিয়ে নিবো,

যে শব্দে বলতাম ভালোবাসি
হর্ষ-বিষাদকে আজ দিয়ে দিলাম ছুটি
কারণ, তুমি আর আমায় ভালো বাসো না।

দুরন্তপনার শিখরে আজ আমি পথভ্রষ্ট লম্পট
আমি দ্যা ভিঞ্চির অসমাপ্ত লেখচিত্র
মেরিলিন মনরোর কামনার হাসি
হোমারের অসমাপ্ত পর্ণো-কাব্য
রুশদির ঈশ্বর ব্যাঙ্গর দোলনা,

আমার কুশপুত্তলিকায় আগুন দিতে আসো
স্বৈরাচারী শাসক উল্লাসে স্মিত হাসুক
নজরুলের বিদ্রোহী উপহাস করুক
রুদ্রের দ্রোহ মুক্ত ফুটপাথে হাটুক
রশিদ ভাইতো আর স্থির চিত্র তুলবে না
ভয় নেই
চলে আসো
একদলা থুতু দিতে
আমি ঘেন্না নিয়ে সুখী হবো।

আমি জেনেছি
উনুনে ক্ষুধার জঠর অঙ্গার হয়
কঙ্কালসার বাদামী-ত্বক ছড়ায় ছিবড়ের শুষ্কতা
বঞ্চিতের বিপ্লব হোক কাব্য শ্লোগানের হাতিয়ার
শোষকের চোখে ছুড়ে দিবো দ্বিধাহীন বিষমাখা শব্দ-তীর

কেনো জানো? আমি
ক্লিওপেট্রার হাবশি ক্রীতদাস হবোনা
ডায়ানার মতো পাপারাৎজির দানো হবো না
ফিদা হুসেনের নারীশিল্প দেখে বাহ সুন্দর বলবো না
বনস্পতি ঘ্রাণে সুস্নিগ্ধ আগুনে দেহের ভাঁজ খুঁজবো না
ভর দুপুরের তুমুল যৌবনে সঙ্গমের হাহাকার করবো না
পুংশক-ধর্মে প্লেটোনিক প্রেমের উন্মেষ তুমি’তো আর বোঝো না।

তবু সব ভুলে
আজ যদি স্পস্ট বলি
গেরস্থালীর খুনসুটি থাকুক তোলা
চলো রাধাচূড়া ফাল্গুনের সাথে দেহাতী পথে
নি:সঙ্গ ঘুঘু’রা কান্না করুক ডাহুক কণ্ঠের গানে
প্রেমাষ্পদ রুপোলী চাঁদ নিদারুণ অভিমানী হয়ে যাক
ময়ঙ্ক-বানে মুক্তোদানা জোঁনাকগুলো আজ অন্ধ হয়ে যাক

তুমি কি আসবে?
জানি তুমি আর সাহসী হবে না
তাই, আমার স্বরূপটা’ই বলবত থাক
আমি’তো সৎকার’হীন উঠে আসা চণ্ডাল
অঙ্গে থাকুক মাৎসর্য দাহনের নিপতিত দর্পক
এ সব আজ তোমার কাছে রহস্যের পরকীয়া পাপ
তবে থাক তা যতনে, পাথর হয়ে বহ্নিমান গাত্র দাগ।।

চিত্রিত মগ্নতায় কবি

আমার আনত মুখে
কখনও কখনও চিত্রিত হয়
আমার মগ্নতা, ভগ্ন হৃদয়
বুঝে নিও
ওটা কোন ভুল দৃশ্য নয়
দেবতার অভিমানে ঝরে পড়া
কোন ঝরণাধারা নয়
একাকী বয়ে যাওয়া
ব্যথিত কোন নদী নয়
ওটা আমি
ব্যথিত বদনে চিত্রিত
আমার পরাজয় ।

Thursday, November 3, 2011

কোথাও কিছু থাকবে না

কোথাও কিছু থাকবে না-আজ আমার চারপাশে
যা কিছু ঘিরে আছে সুখ হয়ে
আজ যারা আমায় পরম নির্ভয়ে ভালোবাসার
দেয় আস্বাশ-সে সব কিছুই একদিন অস্তিত্বহীন
হবে-রয়ে যাবে না থাকা কার দীর্ঘশ্বাস
কোনদিন আর আজীবন সঙ্গ দেবে না কাওকে
যা কিছু আছে আজ আমার জ্যামিতিক আকার হয়ে
দৈর্ঘ্য প্রস্থ বেধ যতসব একদিন শুধুই জীর্ণ
সোনালী পাংশুটে পাতার মত স্মৃতি হবে
নিতান্তই যা অবাঞ্ছিত-ধুসর,উপমাহীন
কোথাও কিছু থাকবে না-আজ আমার
বিমূর্ত ভালবাসা যা আমার দৃষ্টি রঙিন রাখে
প্রতি পল-তার একদিন মৃত্যু হবে অকস্মাৎ
হয়ত আমার চোখের সামনে-হয়ত নয়
তবুও কোথাও কিছু থাকবে না কোনদিন।
কার আয়ু বর বেশি সবখানে চিরদিন থাকবার?
সবাইকে একদিন সাদা কালো স্মৃতি হয়ে মুছে যেতে
হবে-কারুর স্পর্ধা নেই
অমর হবার কার নেই অধিকার।

ঘুম!!!!


বহু দিনের নির্ঘুম দু'চোখ!
আজ প্রচণ্ড ঘুমে আচ্ছন্ন।
রাজ্যের সব ঘুম আজ
ভর করেছে দু'চোখের পাতায়।
ঢুলু ঢুলু এক ঝিমানো পৃথিবী!!!
যেন এক মায়াবি নেশা!

দেহতেও আজ এক অদ্ভুত অবসন্নতা!
কলমি লতার মত সে নেতিয়ে পড়েছে।
সমস্ত দেহ মন জুড়ে চলেছে
ঘুমিয়ে পড়ার আয়োজন!
আজ যে করেই হোক
ঘুমুতেই হবে।
বহুকাল থেকেছি তো থেকে নির্ঘুম!
আর কত!!!

প্রচণ্ড ক্লান্তিতে দেহ যখন প্রতিবাদ করেছে
তখনও নির্ঘুম থেকেছি!
শত শত ঘুমহীন রাত পার করেছি!
ঢুলু ঢুলু চোখে চেয়ে থেকেছি।
তবুও ঘুমিয়ে যাই নি।
যদি ঘুমিয়ে গেলে
আর জেগে না উঠি?
কি হবে তখন!
তাই শুধু চেয়ে থেকেছি।
তবে আজ আমি ঘুমবোই।
যে করেই হোক ঘুমাব!
যেমন করে ঘুমিয়ে গেছো তুমি!
চিরতরে!

একটি চুম্বনই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবিতা


নিশাচর, চাতক, নীলকণ্ঠ যাই বলো
আমার অপেক্ষা কিন্তু তোমার জন্য
সব স্পর্শ কি শরীরের হতে হয়?
অথবা শব্দের পর শব্দ সাজালেই কবিতা?

আমি তো ছুঁয়েছি তোমায়-শুধু চোখ বন্ধ করো
প্রাণ খুলে নি:শ্বাস নেও
লৌকিকতাকে পেছনে ফেলে ইন্দ্রিয়কে জাগিয়ে তোল
পাওয়া না পাওয়ায় দোদুল্যমান কষ্টানুভূতির
নীল মাদকতায় ছুঁইছি তোমায় অনুক্ষণ।

স্পর্শ বিহীন অনুভূতির ছোঁয়া বেদনার অনুকূল
প্রভাতে বাহু বন্ধনহীন শূন্যতা-একা আমি
জীবন তবুও থেমে নেই..
শুধু একটি চুম্বনের অপেক্ষা
একটি চুম্বনই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবিতা
জানি না কতো প্রতীক্ষার রক্তাশ্রু ঝড়িয়ে
ধরা দেবে সেই কবিতা তোমার ঠোঁটের স্পর্শে...

বিস্ময়!

নশ্বর একজোড়া হাত
কি করে আত্মা জুড়ে
ছড়ায় উষ্ণতা?

ভালবাসার অতলে
হারিয়ে গেলে কেন
জীবনের পূর্ণতা?

প্রণয়ের নিকষকালো রাত্রি
কেমন করে জ্বালে
নক্ষত্রের উজ্জ্বলতা?

একটি প্রেম ক্ষতগুলো
ঢেকে দিয়ে কিভাবে
পূর্ণ করে শুন্যতা?

কত প্রশ্নের উত্তর মেলে না...
তবু জীবন থেমে থাকে না।

স্বপ্ন শুরু ...

স্বপ্নগুলো আঁকিবুকি করে..
বিস্মৃতিগুলো আড়ালে পরে,
অন্তপানের চাণিক্যে চারু-পারু;
এ যে নব স্বপ্নের শুরু।

নয়নপাতায় নির্ঘুম রাতের
যন্ত্রণার কালিমা মুছে ফেলি,
নব-নিশি কি ডাকছে না আজ?
চল না ফি দৃষ্টি মেলি।
আশার বৃষ্টিতে আশার সৃষ্টি
যে ঐ দৃষ্টিতে দৃষ্টি বহুদূর,
মনে-প্রাণে আজ একটাই শপথ,
যেতে হবে ঐ সুদূর।

নবো-উল্লাসে জাগরণ,
আজ যে বিশ্বাস হারানো বারণ।
করে চলি তাই এই নফসের
সাথে নফসের যুদ্ধ অকারণ।
আমি পারবো, পারবো আমি;
কোনটাই বা পারিনি কবে?
এর জন্য কি আর
বলো এই জীবন দিতে হবে?

উৎসাহ আর উদ্দীপনা,
আকাঙ্খা জড়ানো জীবনের তাড়না;
সব ই মিলে আজ আমি আগামীর স্বপ্নে বিভোর,
আত্মবিশ্বাসে মোর জাগরিয়া ধ্বনিতে-
সবটুকু শোকরিয়া প্রভুর।

একটা কিশোর!
আজ এই নিস্তব্ধ রাতে তব নির্ঘুম,
নয়নে অশ্রুর কলতান;
বিধাতা তুমি কি পারনা দিতে
তারে পুস্ফটিত বিতান??
ক্ষণিকের মাঝে চিন্তার
পরত ভাঁজে আকাঙ্খার কারুকাজ,
মুষ্ঠিতেই যেন বিজলী খেলে,
কেন হবোনা আমি শাহ রাজ?

তাই, আজ যে নতুন এক স্বপ্নের শুরু!
উত্থান-পতনের মাঝেই লড়ে যাবার
প্রত্যয় জানানো,
স্বপ্ন ধংসের মরণ খেলা খেলতেই হবে,
আত্মাকে মানানো।
শিহরণে তাই ক্ষণে ক্ষণে জাগে,
নব আশার আবরণ,
স্পৃহায় জানাই, স্রষ্টা মোর সহায়-
করিবো মোর স্বপ্নপূরণ।


(জীবন থেকে নেওয়া)

Saturday, October 29, 2011

ত্রিমাত্রিক স্থানাঙ্কে হারানো মন

আমি বাস করি আলো আর অন্ধকারে
ভূগোলের প্রথাগত সীমারেখা ছাড়িয়ে
উপস্থিতির সঠিক সংবেদনশীলতার বর্ণনা
শব্দেরাও আর দিতে পারে না
ত্রিমাত্রিক স্থানাঙ্ক শরীরকে চিহ্নিত করতে পারে;
কিন্তু হৃদয়ের হদিস যন্ত্র থেকে দূরে, বহুদূরে।।

আজ আলোতে একা নই, একা নই অন্ধকারেও
আলোর কায়া আমায় ছায়া সঙ্গী দেয়
আলো উবে গেলে ছায়াও নিভে যায়
কিন্তু এক অস্পৃশ্য বোধ
মাথার ভেতর মাথা নাড়ে
হৃদয়ে নিরন্তর পায়চারি করে
আলোতে আর অন্ধকারে।

হাতে সে হাত রাখে
আমি আমার অতীত ভুলে যাই
বর্তমান আমার কাছে ম্লান হয়ে আসে
আর ভবিষ্যত প্রচণ্ড অর্থহীন মনে হয়।

চারপাশের পৃথিবীর ব্যস্ততা বৃথা মনে হয়
স্থবির হয়ে বসে থেকেও অনেকটা পথ পাড়ি দেই কল্পনায়
মননের স্বপ্ন করতলে পরস্পরের সান্নিধ্যে উষ্ণ হই
সে উষ্ণতায় প্রেম নেই; ব্যাখ্যাতীত এক বোধ মিশে থাকে।

সে স্পর্শ আমাকে পালটে দেয়
আমার ভেতরে তুমুল ঝড় বইয়ে দেয়
আমার ভেতরটা লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবার উপক্রম হয়
আমি নিজেকে চিনতে পারি না
আমি আমার চারদিককে নতুন বলে আবিষ্কার করি।

মানুষে-মানুষে সহজ সম্পর্ককে আমার মেকি বলে মনে হতে থাকে
প্রেমকে আমার শরীরের স্বাদ-আস্বাদন বলে মনে হয়
স্নেহকে প্রাণের অনন্ত আহ্লাদ হয়।।

নিজেকে এই পৃথিবীর মাটি-জল-সংগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্ন
এক সত্ত্বা বলে মনে করা আমি বোধের কাছে আত্মসমর্পিত হই।

বদলে দিতে থাকা এই দূর্বোধ্য বোধ এর সঙ্গ অসহ্য বোধ হয়
আমি তার হাত ধীরে ছেড়ে দেই
দ্রুতলয়ে হাঁটতে থাকি তাকে পেছনে রেখে
আমি তাকে মেরে ফেলতে চাই গলা টিপে
মড়ার খুলির মতো ধরে আছাড় মারার ভয় দেখাই
সে বিচলিত হয় না
আমার পিছু নেয় নাছোড়বান্দার মতো
আমার ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে আমাকে অনুসরণ করে
ক্লান্ত আমি একসময় তাকে সামনে যেতে বলি
সে আমাকে পাশ কাটায় না
সে আমাকে অতিক্রম করে না
সে আমার পিছু পিছু হাঁটে, আমি থামলে সে-ও থেমে যায়
পরাজিত আমি তার কাছে আত্মসমর্পিত হই
তাকে পেছনে রেখে পথ পাড়ি দিতে আমার অস্বস্তি লাগতে থাকে
পুনরায় আমি তার হাত ধরে পাশাপাশি হাঁটতে থাকি
আমি আবার আলো আর অন্ধকারের পথে হাটি
একলা আমি
মৃত আমি
সে মৃতের আলো-অন্ধকারের অনুভব থাকে না।

পরিত্যাক্ততায় আমার এফিটাফ

এমনি এক হেমন্তে পরিত্যাক্ত হয়েছিলাম।

অত:পর ঠিক সেখানটাতেই আছি, ঠিক
যেন এক প্রতীক্ষারত প্রমিথিউসের মত।
ক্লান্ত, নীরব, নিস্তব্ধ সন্ধা হতে উদয়ান্ত
অখন্ড অবসর। কত যে দিন হয় গত।

ইয়াত্তা নেই তার, কাল চক্রের পারাপার
কত রাত যে হয় ভোর এক নির্মীলতায়,
অবসন্নতায় তোমার প্রতীক্ষায়। প্রয়োজন
নেই দু গন্ডা হিসাব মেলানোর জটিলতায়।

একালের অথবা সেকালের, কোন কালের?
এক পৌরানিক প্রশ্ন হয়ে থাক
যদি হও শঙ্খচিল, এসো কালেভদ্রে কখনো
হারিয়ে, অচেনা পথের বাক।

আমি আছি সেই একই রকম ঠিক হেমন্তের পর
সম্মুখে চির হিম বসন্ত কাটছেনা শীতের তর।

মিলবেনা হয়তো সব সমীকরন ধাপ থেকে ধাপ
শূন্য বরাবরই শূন্য, নির্জন, পরিত্যাক্ততায় রবে
আমার এফিটাফ।

কেউ একজন ভুল হাত ধরে করে বলেছিলো আমি তোমাকে ভালোবাসিনা

কেউ যায়, কেউ আসে, কেউ আবার হারিয়ে পড়ে ঘূর্ণাবর্তে
আমি দেখেছি তাদের যাদের কেউ মনে রাখেনি
আমি শুনেছি তাদের যাদের কেউ একজন মনে করে বলেছিলো
আমি তাদের মনে রাখতে চাইনি অথচ বারবার মনেই উঁকি মারে।
এ মন, সেই মনের কাছে হাত পাতে; ভালোবাসায়
মনও ফিরিয়েছে তাদের শুনিনি কোনকালে
তবু আমি বারবার মনের কাছে মন চাইছি, মনের দেখা পাবো বলে,
তবু মন, বিচিত্র মন ফের ভুল করে, ভুল করে ভালোবাসে
ভালোবেসে কাছে গিয়ে থমকে যায় আবার ভালোবাসে
শুনেছি, ভালোবাসার কাল মধুর কোনো এক
দিয়ে যায়, শুধুই দিয়ে যায়-
তাই দিন গড়ালে দিন আসে রাতের হাত ধরে।
রাতের গতরে বাস যার সে কানে কানে বলে
কেউ একজন ভুল করে হাতে হাত ধরে বলেছিলো
আমি তোমাকে ভালোবাসি না!

কাতর ভালবাসা


মনের গভীর অতলে প্রেম পিপাসায় কাতর হয়ে
একদিন ভালবাসা পেতে হয়তো গিয়েছিলাম,
হয়তো গভীর ভালবেসে ছিলাম-
তাই গিয়েছিলাম রাতের হিমে,
শেষ প্রহরের জ্যোৎস্না নিয়ে।
কাতর হৃদয়ের বুকে-সেদিন জমেনি
শিশিরের হিমেল ভালবাসা,
তাই তো বলি দূর অস্তমিত-
আবিরের রঙে যেন-ভালবাসা ছুটিতেছে
ঋতু বদলের মতো হয়তো মাঝরাতে
মৌসুমীর কুহকীর স্বরে কাঁন্নাতে-
সেদিন যেতে পারিনি, চিনতে পারিনি তোমাকে।
রাতের শীতল কাতরে খেজুরের রস জমে হাঁড়িতে
সেদিন রসে রসে প্রিয়-মনে পড়েছে তোমাকে;
তোমাকে ভালবাসতে গিয়েও যেন
ভালবাসতে পারিনি-মনের সুর মনকে বেঁধেছে
পারিনি মনের ভাষা আবৃত্তি করিতে।
নারকেল গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে
যখন চাঁদের মৃদু আলো ভাসে
তখন পৃথিবীর রূপ যেন মরণের মাঝে এসে
নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন গড়ে তোলে;
আমার ভালবাসা তাই পৃথিবীর বৃহৎ অরণ্যে
রঙিন রঙে রঙে খেলা করে-
তবুও তোমার ভালবাসা ভুলতে পারিনা
ভুলতে পারিনা তোমার-কাতর ভালবাসা;
তাই পথে পথে আজো দেখি
সেই সব ভালবাসার মন-নগদে রঙিন করে;
সেদিন রাতে নটীরা হয়তো জেগেছিল
টাঙ্গাইল ইস্টিশনের পাশে।

অপরাজিতা

একটি পাখি,
পৃথিবীর অগণন মৃত্যুরাশি চিনে নিয়ে
ফিরে আসে নীড়ে ।
আর তুমি ?
আমার অপরাজিতা
সূর্যকে চেন তুমি ?
জানো মেঘহীন শ্রাবণীর উৎস ?
অথবা রক্তকমল কেন কৃষ্ণচূড়া নয় ?
কখনও ছুয়েছ অদৃশ্য কুহেলিকা নরম দুহাতে ?
গোপনে গোপনে কত পাপ করেছে সঞ্চয়,
এই মহান পৃথিবী; চেয়েছো জানিতে ?
চাওনি ;.... তুমি;.... কখনও;....
আমায় জেনে নিয়ে, সমস্ত জানার আকাঙক্ষা
ফেলেছ হারায়ে তুমি....।
আমারে নিয়েছ চিনে , এই ভেবে-
সমগ্র বিশ্ব চেনা ....
হয়েছে তোমার ;
এ এক সহজ বিস্ময়!
তবু যখন আবার ভোর হয়
ভাবো তুমি; “রাত্রি হলেই ভালো”
রাতের তিমিরে যখন প্রেম জ্বালে তার নিজস্ব আলো
সে আলোয়
পৃথিবীর কেউ কারো মুখ চিনে নিতে পারে না।
সে তবু চিনে লয়,
তার অভীষ্ট হৃদয়।
অসীম নিস্তব্ধতার মাঝে
জেগে ওঠে
প্রেমের অলৌকিক ভাষা।
সে ভাষায় ঘুমে বিভোর পৃথিবীর কয়না কথা কেউ
কেবল নিঃসঙ্গ নীল নদীর পবিত্র ঢেউ
একা পথ চলে।
আর;
তার তীরে বসে আমাদের অশরীরী আত্না
তারা গোনে ধ্রুব আকাশের ।
...............শুনি
অস্পস্ট তারারা অচেনা ভাষায় কথা কয়
কেউ আর শোনে না তা
আমরা শুনি –
মৃত পাতাগুলি শান্তিতে মাটির বুকে ঝরে পরে
অত:পর
শব্দহীন জগতে
রহস্যময় শব্দ সৃষ্টি করে
আমাদের শরীর ক্লান্ত হলে,
অপরের চোখে যুগল ছবি আঁকি
যতক্ষন .. না .. ভোর আসে
পূর্বাকাশ লাল হতে শুরু করলে
যত দূরে সরে যাও তুমি
ততই নিকটে আসো প্রকৃতির খেয়ালে ।
একটি তারা হতে অপর একটি তারা
কত আর যেতে পারে দূরে?
একটি জীবন মৃত হয়
জন্ম লয় নতুন এক হৃদয়
যদিও শরীর ঝরে যায় শীতে
তবু স্বপনেরা কি মৃত হয় ?
কিংবা প্রণয় ???

ভালবাসা এবং


ফালগুনী রাতে;
দেখেছি তারে অন্ধকারের সাথে।
যখন যুগল পেঁচা সবুজ চোখ মেলে
আধাঁরে বিস্ময় খোঁজে সৃষ্টির আড়ালে।
দেখি নীলাভ দুটি চোখ তার,স্বচ্ছ জলের ন্যায় শরীর
চুপে হাওয়া এসে বলে গেল ,- “এই মানবী নয় এ
পৃথিবীর।”
অত:পর
স্বচ্ছ তার জলের মত শরীরের রহস্য জানতেই
পৃথিবীতে এসেছিল প্রথম ভোর ......
কত আগে তারে ভালবেসেছিলাম
আজ আর তা মনে নেই।
গোপনে গোপনে কত অনুভূতি
জন্মেছিল তোমার জন্য! মনে নেই।
কবে খেলার ছলে আধাঁরের বুক চিরে
এক টুকরো আলো বের করে এনেছিলাম !
ঘুম গিয়েছিল ভেঙে
হেমন্ত নক্ষত্রের রাতে
অনেক পুরনো সে রাত।
সে রাতে পূর্নিমা ছিল কিনা . . . . . . . . . মনে নেই।
তবু সেইসব দিনরাত্রির ঘ্রান লেগে আছে বুকে
যেইসব দিন তার মুখ দেখা হত .............
ঝরে গেছে সময় ঘাস মাটির উপর
সুর্যাস্তের শেষ রং মুছে দিয়ে শেষ পাখি ফিরে গেছে নীড়ে।
হয়ত সে ও আমাকে ভালোবেসেছিল;
আজ ও বাসে !
তবু কেউ আমায় মনে রাখেনি।
শেষ বিকেলের নরম রোদের মত
তার দেহের ঘ্রাণও মুছে গেছে এ প্রাণ থেকে ।।

Wednesday, October 26, 2011

-বিষাদ তোমাকে ছুটি-

এইখানে চুমু দাও-
কাঁপা ঠোটের উষ্ণতায় শুষে নাও
আমার জীবনের সবটুকু ব্যর্থতা
যে তোমাকে রাত্রি-দিন দুঃখ দেয়।

এই হাতে হাত রাখ;
এই হাতে আর কোন পাপ নেই।
আমার যে চোখ তোমায় দেখে
সে চোখে নেই স্বর্গের পিপাসা;
নেই অহঙ্কারি বিলাসিতা।
যদিও খানিকটা অহঙ্কার সে করতেই পারে
সম্পূর্ণ একটি রাত সে তোমার প্রেম ছুঁয়ে ছিল!

তুমি বল " আমি কবি "
" তুমি আমার শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ "।

তোমার পৃথিবীর রাত্রিরা একদিন
আমারে দিয়েছে যে শান্তি
সহস্র দিন ক্লান্তি শেষে অজস্র প্রাণ
শুনিয়েছে নাক্ষত্রিক গান,
আমি তবু অহঙ্কারি নই।

দুঃখ ছিল; ঈশ্বর জানে-
আমার চোখে,মুখে এবং বুকে।
..........অতঃপর
সেদিন-
বসন্তের দিন;
ভোর ছিল প্রিয় মুহূর্তের মত নরম
সূর্যোদয় দেখব ভেবে ঘুম গেল ভেঙে
এবং অবশেষে
প্রথম সূর্য দেখার নিস্পাপ ইচ্ছে
তোমার ঘুমন্ত শরীর নিল কিনে।

মুখ রাখি তোমার হিম বুকে
বলি; " বিষাদ তোমাকে দিলাম ছুটি "

নারী

সেদিন শীতের হিম রাত্রি
আমাদের ঠোঁটে অতীত এবং বিংশ শতাব্দীর
সমস্ত প্রেম নিয়ে জেগেছিল।
বহুরাত ঘুমের পর যেমন জেগে ওঠে শিশু
পৃথিবীর আলোয় রাখে তার অনভিজ্ঞ পবিত্র চোখ
তেমনি আমার অনুচ্চারিত শরীরের ভাষা
শিখিয়েছিল কি করে ভালবাসতে হয়!
তবু আকাশে মেঘ দেখে
নিজেকে তুমি অসহায় ভাবো;
নদীতে স্রোত থেমে গেলে
ভাবো; তোমার সুখ ও ব্যথা
তোমারি একান্ত অর্জন।
নারী-
ঈশ্বর তোমাকে দিয়েছে ঐশ্বর্য
পুরুষ "অহঙ্কার "।।

Monday, October 24, 2011

তবু বন্দনা বন্ধ হবেনা,

ছন্দ নাই; তবু বন্দনা বন্ধ হবেনা,
চাতক পাখির মত চেয়ে থাকা-
অচীন আজব আগামীর পথে,
যেখানে শুভ্র দিন অনুভব অবিচল-
তার সাধনার অন্ত হবেনা ||

আজ অনেক দিনের চেষ্টা এ-
তোমাকে বর্ননা বর্নিল বানে,
রাঙ্গীয়ে রাঙ্গা সুখ স্বপনে,
বোঝাতে বানী বর্ন স্নানে-
সাজাতে চাই যেন বুঝুক সবাই;
তুমি অপরূপ শতরূপ অনন্যা ||

কত দিন সহ্স্র সাল আবহমান-
ধুম ধাম নাম ধাম অনুমান,
কার এত ভাগ্য হল; সেইতো পেল সুনাম |
অবাক অচীন আগামী দিন,
কেউ বাকী থাকবেনারে সেইদিন-
কি হবেরে? কি অঝরে!ওরে বলনা ||


দন্ধ নাই; তবু চন্দ্রিমা চন্দ্র দেখেনা,
শতক আখির যত চেয়ে থাকা-
কঠিন তলব চালানীর পথে,
সেখানে তীব্র দিন পাবে সব অবিকল,
তার সে দিন কেউ থামাতে পারবেনা||

কবিতা নয় তবু

একটা কবিতা লেখার সাধ হয় তবু
বৃষ্টি হয়না ‍দেখে পারিনা,রিম বিম বৃষ্টি।
ইদানিং আকাশ ভরা মেঘ গুলো, কি কালো
শুধু চমকায়- গুড়ুম গুড়ুম ‍শব্দে ভাবি এই বুঝি
বৃষ্টি ঝরবে রিম ঝিম
প্রান ফিরে পবে শুষ্ক মাটি
মাটি আর মানুষের সতেজতা যেন
গিটার আর শিল্পীর সুর
মেঘ গুলো শুধু চককায়, আমি ‍বলি,-
স্বাথর্পর মেঘ কোথাকার!
তুমি তো নেতা নও, আশ্বাস ,প্রত্যাশার স্বপ্ন দেখিয়ে
আর গুড়ুম করোনা
তুমি তো মানুষ নও।
আমার হেমন্ত শেষ হল শীতবেলার শুরু
নির্জনতার এক ভরদুপুর পাশে দেবদারু।

হারিয়েছি তোমায় আর দেবদারুটা পত্র
ভুল নয়তো আমার তোমার যত্র তত্র।

হারিয়েছিলাম তোমায় নাকি তুমিই হারালে
নির্জন পথে একলা রাতে তুমিই বাড়ালে।

বিকেল বুজে আসে ঐ দিগন্ত রেখার মাঝ
বিম্ব প্রতিবিম্বে হাসে যেন বাসর রঙ্গা সাজ।

যাত্রা পথটি ছিল মসৃন হাজার খুঁনসুটি
প্রহেলিকার বাগিচায় আমি চলি গুটিগুটি।

সময় কাহন উপলব্ধির আমি খোলসযুক্ত
তুমি দেবী আফ্রোদিতি হয়তো খোলসমুক্ত।

উড়ে চল কোকিলরূপী শীত ফুরোনোর শেষে
পেছন পড়ে এক সিসিফাস হিমশীতলের দেশে।

দেবদারুটা নির্জনতায় নাকি আমিই দেবদারু
বৃত্তাবর্তে সেই ইতিহাস দেবদাস আর পারু।

স্বপ্ন


এক জীবনে আমাদের পাওয়া হয়না কিছুই
তবু যে পায় , সেই জানে
না পাওয়ার ব্যথা !
সমস্ত হারিয়ে সেই প্রশ্ন করে;
এই জীবন কেন পাখি কিংবা নদীর নয় ?
এর উত্তর বহুকাল আমি পাইনি
এ আমার আজন্ম আক্ষেপ ।
মানুষ তবু স্বপ্ন নিয়ে বাঁচে
একটি , দুটি আথবা তিনটি স্বপ্ন
এ বুকেও ছিল নদী ঢেউয়ে ছড়ানো
আত্নবিশ্বাসী রোদের মত
যখন মানুষ ছিলাম
যখন জীবন ছিল আমার হাতের মুঠোয়
আসহায় বন্দি;
আমাকে আমার ভিতর হতে
বাহিরে প্রকাশিত করা হল;
সে এক কবি পরিচয় হীন ।
পৃথিবী ঘর ছেড়ে আমারে সে এনেছিল
পৃথিবীর পথে ।
নক্ষত্রের রাতে চুপে বলেছিল
"মানুষ মরে গেলে আত্না অদৃশ্য হয়;
আর প্রেমিক মরলে ‘অন্ধকার’।"
অন্ধকার মৃত্যুঞ্জয়ী।

ছিন্ন চিন্তাবলি

আমার ছিন্ন চিন্তাবলি পাঠিয়ে দিলাম
আলফা লেভেলে তোমার কাছে
জ্বলন্ত সিগারেট হাতে ধরে
ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন ঘর থেকে মেইল করেছি
নিগুড় নীরবতার ঠিকানায় গেলে
খুঁজে পাবে আমার এই মেইল
ইনবক্সে না পেলে স্পার্ম ফোল্ডারে।

গভীর থেকে আরও গভীরে
ডুব দিতে চাই তোমায় নিয়ে
আমি তুমি সমৃদ্ধ কবিতা
চাচ্ছিলাম না লিখতে
লেখনী বার বার ছুটে যায়
ছুটে যায় তোমার পানে
কোন এক অদৃশ্য নাটাইয়ের টানে।

ইচ্ছেঘুড়িটা গোত্তা খেতে চায় ক্ষণে ক্ষণে
কিন্তু সুতোয় ঢিল পরে তখনই
মন পৃথিবীর স্বাভাবিকতায়
ইচ্ছেঘুড়িটার অবকাশ মেলে না।
মাথার ভেতর কোয়ান্টাম ফিজিক্স
আর বুকের ভিতর রসায়ন নিয়ে
এর চেয়ে ভালো আর কি বা বলা যায়।

ওকে নিয়ে

মাঝরাতের উষ্ণতায় ঘুম ভেঙ্গে
আবেগ ভরা বুক নিয়ে
আমি আর ভাববো না
ওকে নিয়ে -
বসন্তের কচি সবুজ পাতায়
প্রেম কাব্য লিখবো না আর।
লিবিয়ার যুদ্ধ পথে রাইফেল হাতে
শত্রুর পিছে ছুটবো না বলছি।
কোন আকার-ইঙ্গিতে এমনকি
মুখ খুলেও কথা বলবো না।
যতোটা শব্দ বাঁচিয়ে রেখেছি নিরবে,
তাতে শুধু-ই ভালোবাসা লেখা আছে।
তাকে ভালোবাসি বলবো না,
কারণ সে ভালোবাসতে জানে না।

আমার চলে যাওয়া

সমস্ত চিন্তার মৃত্যু কত ভয়ঙ্কর!
হয়তো আধো আলোর ছায়াতে ভেবেছি,
দেহের রক্তমাখা চোখের রূপ হয় জোয়ার
তাই প্রেমের নেশা কাটে বলেই ভেবেছি,
তোমার নগরে যাব বার বার-
যাব ভালবাসার ফুল নিয়ে-রঙিন হয়ে,
তোমার নগরে দুই পাহাড়ের মাঝে
ভালবাসার ম্রিয়মান নদী আছে;
আমি জলের উষ্ণ বিলাসে ডুবারি হব
তুমি সারাক্ষণ আমার নীলজলে ধৌত হও
আর শব্দের ঠোঁটে বেঁচে থাক প্রাণপণ
আমি কলির মতো সুরঙ্গে-বার বার চলি
ধ্বনিতে ধ্বনিতে অন্ধকার ঘন হয় বলে,
কালের অর্পিত ভালোবাসায় বেঁচে রই;
তাই একদিন সুখীসম্পদের ফুল ফুটবে
হয়তো জন্মের আলোকে জ্বলবে এক স্বনাম;
তুমি সুখের উল্লাস সমারোহে হয়তো রবে
তখন আমি চলে যাব বন্ধন ছিড়ে,
এটাই হয়তো বিধাতার চরম রীতি।

বলেছিল কেউ


বলেছিল কেউ-
কোন এক পূর্নীমার রাতে সমুদের ঢেউ
কিংবা তার চলার শব্দ
যখন স্তব্ধ
হয়ে পরে রয়;
যখন নক্ষত্রেরা কথা কয়
কেবলই নক্ষত্রের সাথে;
কোন এক সেই রাতে-
নিজ চোখে আমায় সে জ্যোৎস্না দেখাবে
চাঁদের আলো ঝরে পড়ার শব্দ শোনাবে।
....কেটে গেল অজস্র সময়
পৃথিবীর পথে বহূ পথিকের হয়েছে ক্ষয়।
সমুদ্রে সমুদ্রে পুরোন ঢেউয়ের মৃত্যুতে নতুন ঢেউয়ের সৃষ্টি
আকাশে তারারা গেল খসে, ফুরায়েছে রোহিনী বৃষ্টি;
বহূ আলোকিত দিনের পর, বহূ অনাকাঙিক্ষত রাত্রি এলো
বহূ ভোরের আড়ালে বহূ আঁধারের মৃত্যু হলো
তবু সেই পূর্ণীমা আজও আসেনি কথা রাখার
আমাকে ভালোবাসিবার ॥

জীবন্মৃত.....


জীবন এবং মৃত্যুর মাঝখানে দাড়িয়ে
তোমাকে আবিস্কার করলাম
পৃথিবীর অন্য সূর্যহীন এক ভোরে।
আজ দ্বিতীয় মৃত্যুতে;
আমার আর ভয় নেই ।
অপ্রাসঙ্গিগ ভাবে অলৌকিক প্রজাপতি এক
"একটি ডানা সবুজ,অপরটি গাঢ় নীল;
..........উড়ে যাচ্ছে"
মনে পড়ে গেল।........
কেন মনে পড়ে ? কেন সন্ধ্যা নদীর ক্ষুদ্র একটি ঢেউয়ের
শব্দও আমি ভুলে যেতে পারিনা ?
অথচ তোমাকে !
হ্যা, তোমার চিরচেনা অস্তিত্ব
আবিস্কার করলাম প্রায় এক আলোকবর্ষ পর !
দূর্গা সাগরে একটি দ্বীপ ছিল,মনে আছে !
আমদের সেই দ্বীপ ভ্রমণের কথা ছিল।

সেদিন তোমায়-
ভালবাসার ইচ্ছে জেগেছিল।
অথচ ভালবাসা জাগেনি।

মনে পড়ে; একদিন অল্প জলে ডুবে খুব কেঁদেছিলাম
প্রাচীন শৈশবে। ধরেছিলাম ঘাসফড়িঙের বিদ্রোহী শরীর
ঘরের জানালায়।
অতঃপর-
প্রথম চুমুর লজ্জার অদ্ভুত অনুভূতির মতন
নদী ও বৃষ্টিকে নিজের ঐশ্বর্য ভেবে
নিজের মুখ ভুলে গেছি আমি কতবার !
কতবার আমি ঘুরি ওড়ানোর ব্যর্থ অহঙ্কার
ভুলে যেতে গুনেছি বিকেলের আকাশে
ঘরে না ফেরা পাখির ডানা !
পথ আছে, ঘর আছে ;
তবু ফিরে যাওয়ার ক্ষমতাহীন সময়
যে পায়নি,সে জানেনা দুঃখের রঙ সুখের চেয়ে গাঢ়।

সেদিন হেমন্তে-
একদিন মেঘ চাঁদ নিল খেয়ে
একদিন রাত অস্বাভাবিক দীর্ঘ হয়েছিল
একদিন হ্যালির ধূমকেতু দেখে বললাম;
আর ৭৬ বছর যদি বাঁচি!
তারপর আর পাপ করবনা।
আমার প্রিয় একটি নদী ছিল
নারীর শরীরের মত নরম ও পবিত্র
সে নারী হোক প্রিয় প্রেমিকা অথবা পতিতা।
ছিল স্বপ্নে পাওয়া একটি পাহাড়,
পাহাড়টির রঙ ছিল গভীর সবুজ
আর বসন্ত ছিল ঐচ্ছিক প্রেমিকা।

একদিন আমি ঈশ্বর ভালবেসেছিলাম;
আর একদিন মানুষকে ভালবাসার আকাঙ্খায়
প্রকৃত ঈশ্বরের রূপ খুঁজেছি
কখনও যিশু, কখনও প্রকৃতি
এবং নিজের মাঝে!!

ভয়


আমি তারে চেয়েছি শুধু-মাত্র স্বপ্ন দেখার তরে, ঘুমন্ত এ হৃদয়ের প্রতিফলিত এক স্বত্তায়,
অদ্বিতীয় সংখ্যা গরিষ্ঠতায়...বাস্তবে নয়,
আমি চেয়েছি তারে ছেলেমানুষি কল্পনার মোড়কে
অথবা,প্রেমরসে সিক্ত প্রিয় কোন ভিত্তিহীন চলচ্চিত্রের ন্যায়,
রাত-জাগা দুঃস্বপ্নের মন্ত্রণায়, আর যেমন ইচ্ছে ভেবে নেয়া
তাঁর দেহ-মাধুর্য কামনায়-সুললিত রমনীয় জোৎস্নায়, বাস্তবে নয়...

যদি ভুল করে কখনও বলে ফেলি,-ভালবাসি!
বলে যদি হারাই তারে তরল সারল্যে
অথবা,নির্বোধ কোন নিবেদনে
-ভালবাসবার
-পাশে থাকবার
-বেঁচে মরবার
আর বারেবারে বলবার-তোমায় খুব ভালবাসি...তাই ভয় হয়,
-হারাবার ভয়
-বেদনার ভয়
-বাস্তবতার ভয়

Wednesday, October 19, 2011

নীল কাব্য

সেদিনও এই তারা ভরা নক্ষত্রের তলে বসে
দেখিবে তুমি পরিছে ঝরে চাঁদের আলো;
এই ক্ষণিক পৃথিবীর বুকে ।
সেদিনও জাগিবে কালপুরুষ
আশ্চর্য রহস্যে কাঁদিবে আকাশ
মেঘের আড়ালে মহাসুখে ।।

সেদিনও সিন্ধুর নীল উর্মির শব্দ শুনে
ভাবিবে তুমি এলো বুঝি-
পথহারা বহুচেনা প্রিয় কেউ।
সেই পথ হারা পথিকের কান্না ভেসে যাবে
পথের বাতাসে। বলেছিল যে হারাবেনা কোনদিন
দেখিবে বেলাশেষে হারায়ে গেছে সেও।।

সেদিনও উড়িবে সবুজ গাংচিল
গোধুলীর পথে পথে
ক্লান্তিহীন নিরবে ।
জগতের কক্ষপথে সূর্য চিনে নেবে তার পথ
সেদিনও। সেদিনও দুচোখ ভরা আলো নিয়ে
কেউ কারো পথ চেয়ে রবে ।।

ধানি লংকা দিয়ে পান্তা খাচ্ছে খুড়িমা

কিছুই তো বদলায়নি
বেড়ায় জড়ানো ঝিঙে লতায় মলিন ফুল
সন্ধ্যায় আবার নতুন ফুল ফোটে
বেড়ার ও পাশে টগবগে ভুট্টা
সদ্য ফুল আসা বেগুন, মাচায় শশা
গ্রামে গরু ছাগল বাঁধার ছোট বড় খুঁটি
উঠোনের কোনায় জলের কলসি, কোদালি,
চালার নীচে চাটাই ধুমছে বুড়ি মা
খেতে নিড়া দিয়ে ফিরে সজনে শাক হাতে
ধানি লংকা দিয়ে পান্তা খায় খুড়িমা।

কিছুই তো বদলায়নি
বড় ভয় হয় ক্ষণে-অক্ষণে
অলক্ষণে পুলিশের জুতোর শব্দ
মেরে হাড়গোড় ভেঙে দেয়
ছাড়া পায় না শিশু বা পোয়াতি
গাঁ-ঘরকে উজাড় করে দেয়
পুলিশেরচে অনেক বেশি হার্মাদ
এক ভয়ের বিরুদ্ধে আর এক ভয়
সকালে রক্ত, প্রত্যহান্তে মৃত্যুভয়
একটাই আদেশ, 'চুপ, কোনও কথা নয়'।

কিছুই তো বদলায়নি
গুলি, বন্দুক, সেনার কুচকাওয়াজ
আড়ালে বীভৎস হুঙ্কার
অকালে অত্যাচারজনিত প্রসবে
মারা যায় মা ও শিশু আতুর ঘরে
এক পশলা বৃষ্টিতে পাতায় পাতায়
সদ্য-স্নাত ঠিকরে পড়া ঔজ্জ্বল্য
ঘুমপাড়ানির গান ভাসে নির্জনতায়
কিছুই তো বদলায়নি।

আমায় থাকতে দিও

তুমি বাসিয়া ভাল, দিয়েছ পরাণ, জাগে জাগে নব প্রাণ,
ধুলিকণা থেকে মুক্ত সেঁচিয়া তোমায় করিব মাল্যদান।
আমার এ সুখের মাঝে একি সুর বাজে, একি শুনি অবিরাম,
চাহনি তোমার দুরে কোনখানে, কেন হল বিধি বাম!

এমন বজ্রবান,
ছিড়ে যে পরাণ!
ধুমাভ ঠোঁটে কাঁপিয়া কাঁপিয়া তবু তোমারি নাম;
আমি কেমনে বাঁচিব,
কি করে রাখিব,
তোমারি দেয়া আমারি জগতে নবীন ধরাধাম??
আমায় থাকিতে দিও, ভালবাসা দিও, নাও গো নাও প্রনাম।।

চাইনা পরিচয়,
হওগো সদয়,
যতপার কর ছায়াসম হয়ে নিদারুন আপমান।
আমি পাতার পোশাকে,
ঢাকিব নিজেকে,
স্বাসটা নেয়ার স্বাধীনতা দিও, থাকুক এ জ্বালা জ্বলমান।।
আমায় থাকিতে দিও, ভালবাসা দিও, নাও গো নাও প্রনাম।।