আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥ ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে, মরি হায়, হায় রে— ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥ কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো— কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে। মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো, মরি হায়, হায় রে— মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি॥ তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিলে রে, তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি। তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে, মরি হায়, হায় রে— তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি॥ ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে, সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে, তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে, মরি হায়, হায় রে— ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি॥ ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে— দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে। ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে, মরি হায়, হায় রে— আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ ব’লে গলার ফাঁসি॥ আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। Lyrics by: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর Music by: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Tuesday, May 29, 2012

সেখানে তুমি নেই

কী কথা কতোদিন কতো প্রতীক্ষার দিনরাত্রি শেষে
বলা হয় না কখনও! কী এমন কথা বুকের জমিনে
অঙ্কুরিত বৃক্ষের মতো আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন নিয়ে
বেহাগ-বাগেশ্রীর বিলাপে রাতকে করে ভারাক্রান্ত;
কী এমন না বলা কথা বুকের গভীরে আগ্নেয়গিরির
দাবানল হয়ে পোড়ায়! তুমি কি জানো সেসব?

বিরহী প্রেমিক জানে, জানে মধ্যরাতের নক্ষত্ররাজি
নক্ষত্র হতে গ্রহ, গ্রহ হতে গ্রহান্তরে সে কথা ছড়ায়।
বিবশ আকাশ মৌনতার সুতোয় সেসব ধরে রাখে
নীলকণ্ঠ ধরণী তারাদের মিছিলে ঢেকে দিতে চায়
প্রকাশের যন্ত্রণা, দগ্ধ উল্কাপিন্ড হয়ে খসে পড়ে
তবুও কথাগুলো বর্ণমালা খুঁজে পায় না কখনও!

প্রথম প্রহরে ভেবেছিলাম দুপুরের রোদে ঝলসে দেবো,
দুপুরে পড়ন্তপ্রায় সূর্য মন্ত্রমুগ্ধ করে বলল চুপি চুপি-
‘একটু পরেই নামবে গোধূলি’; গোধূলির কাছে নতজানু
আমি হাঁটুগেড়ে প্রার্থনার ভঙ্গিতে দু’হাত তুলতেই
রাতের অন্ধকার অলক্ষ্যে বিদ্রুপ করে বলল-
‘সময়ের ধারাপাত পড়ে কি কেউ!’ তুমি পড়েছো?

সময়-অসময়ের ব্যাকরণ না জানা কান্ডজ্ঞানহীন এক
পথিক শেষ রাতের পান্থশালায় শূন্য পাত্র হাতে নিয়ে
তন্বী সাকীর বাহুবন্ধনের স্বপ্নে বিভোর নিদ্রাহীন!
ক্লান্তিহীন ক্ষুধার্ত কামুক যন্ত্রণায় নীল হতে হতে
ভালোবাসার ধারাপাত ভুল করে প্রতিদিন-
মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরায়! সে যন্ত্রণা কি তুমি জানো?

আমি যন্ত্রণার নামাবলি গায়ে দিয়েও স্বপ্ন দেখে দেখে
ক্লান্ত অবসন্ন প্রেমিক তোমাকে খুঁজি বালুকাবেলায়।
ঝিনুকের ফসিলে খুঁজি স্বপ্নের আকর, বাতাসের মুগ্ধতায়
মনে হয় এই বুঝি বলার সময়, এই বুঝি মাহেন্দ্রক্ষণ
অথচ তখনও একটি বিষণ্ন বাঁশির ক্লান্ত পঞ্চমী
আমাকে নিয়ে যায় বধির জগতে, সেখানে তুমি নেই।

Tuesday, May 1, 2012

ফুল বেল পাতা থাক পরম যত্নে

মনের নির্জন কিনার নির্জনই থাক, ছুয়ে প্রেম জাগিও না তুমি
প্রেমে খুব ভয় ,ভালবাসলে যদি তুমি দাও এক ঝাক স্মৃতির পাখি,
তোমাকে আগলে রাখি নিরাপদ দেয়ালের মত, তবুও মনভুমি
আশঙ্কামুক্ত নয়-তারকাটার মত বিধে যাও,তাই এই দুরত্ব রাখি ।

এই চোখ এত সামলে চলি ,যেন তোমার টিপও থাকে আড়ালে
সরল প্যাঁচে বাধা জটিল বেণী আমি দেখলেই দৃষ্টি ছিনতাই হবে,
হাওয়ায় দোলে না তোমার সর্পিল বেণী-যেন আমার হৃদয় দোলে
ফুল বেল পাতা থাক পরম যত্নে, থাক কিছু কাজলও অনুভবে ।