আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥ ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে, মরি হায়, হায় রে— ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥ কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো— কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে। মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো, মরি হায়, হায় রে— মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি॥ তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিলে রে, তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি। তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে, মরি হায়, হায় রে— তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি॥ ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে, সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে, তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে, মরি হায়, হায় রে— ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি॥ ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে— দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে। ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে, মরি হায়, হায় রে— আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ ব’লে গলার ফাঁসি॥ আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। Lyrics by: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর Music by: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Thursday, November 15, 2012

যাপিত জীবন

সব আলোতে আগুন নেই জেনে
তোমার চোখে আঙুল রাখি
সেটা শীত রাত ভীষণ শতাব্দীর।
বেঁচে আছি ঈশ্বর মেনে
যদিও তিনি প্রত্যক্ষ নন নাকি
এটা বলা পাপ? সকল নদীর

গভীরতা রাখেনা নৈতিক মাছ। সেদিন
তুমি তা প্রমাণিত কর ভুল। নির্ভুল
গান যা আমার কণ্ঠে গেয়ে ওঠে
অন্য কেউ। কেউ পথ ভাঙ্গে সারাদিন
কেউ কফির পয়সা করে উশুল
খেয়ে প্রেমিকার ঠোঁট,চিবুক। মোহগ্রস্ত ঠোঁটে

যারা উচ্চারণ করে “প্রেম” যদিও তারা
প্রত্যেক নারীই প্রেমিকা নয়। অবৈধ
শিরস্ত্রাণে পবিত্রতা শিক্ষা দেয় কিছু লোক
অথবা সকলেই আজ নষ্ট পুরোহিত কিংবা পোপ যারা
রাত্রিকালীন পোশাকে জমিয়ে রাখেন প্রতারণার বিবিধ
কৌশল যা দিবসে লোহিত করে মাঠের সবুজ। পতাকার শোক

ক্রমেই দীর্ঘায়ু লাভ করে। তোমার প্রশস্ত কপাল
আমার পতাকা আজ। এই কবিতা কতকাল !

 _________কালপুরুষ

প্রতিনিয়ত খালি হচ্ছে ভেতরটা

প্রতিনিয়ত খালি হচ্ছে ভেতরটা
যেন অবাঞ্ছিত হচ্ছি আমি এই পৃথিবীর কাছে
শত সহস্র মাইল পাড়ি দিয়ে যেন
সঁপে দিতে এসেছি ব্যর্থতার কাছে নিজেকে
প্রচণ্ড আশাবাদী ছিলাম, স্বপ্ন দেখতাম
কেন যেন আজ ধূসর হয়ে গেল সব
দোটানার আধিক্য মনের ভেতরে
চলছে সরণ ঘুরে ফিরে একই বৃত্তে
কাজের সমীকরণে ফলাফল যার শুন্য।

ইচ্ছে হয় পালিয়ে যেতে, ফেরারি হতে চায় মন
পিছুটান ছেড়ে, দূর সুদূরে, বহুঘুরে, বহুদুরে।
প্রয়োজনগুলোই যেন অপ্রয়োজনীয় আজ
অতীতের দরোজায় কশাঘাত আর হাহাকার
ফিরিয়ে দাও আমার অতীত, ফিরিয়ে দাও
আমি ফিরে পেতে চাই পুরনো জীবন আমার
আমি শুধরে নিতে চাই ভুলগুলো,
এভাবে আর নয়, আর নয় পরাজিত থাকা
যুদ্ধ করব বিবেকের সাথে, চাই সুযোগ আরেকবার।



____________আলইমরান

অপরাজিতা

undefined

একটি পাখি,
পৃথিবীর অগণন মৃত্যুরাশি চিনে নিয়ে
ফিরে আসে নীড়ে ।
আর তুমি ?
আমার অপরাজিতা
সূর্য চেন তুমি ?
জানো মেঘহীন শ্রাবণীর উৎস ?
রক্তকমল কেন কৃষ্ণচূড়া নয় ?
কখনও ছুয়েছ অদৃশ্য কুহেলি নরম দুহাতে ?
গোপনে গোপনে কত পাপ করেছে সঞ্চয়,
এই মহান পৃথিবী; চেয়েছো জানতে ?
চাওনি ;.... তুমি;.... কখনও;....
আমায় জেনে নিয়ে, সমস্ত জানার আকাঙক্ষা
ফেলেছ হারায়ে তুমি....।
আমারে নিয়েছ চিনে, এই ভেবে-
সমগ্র বিশ্ব চেনা ....
হয়েছে তোমার ;
এ এক সহজ বিস্ময়!
তবু যখন আবার ভোর হয়
ভাবো তুমি; “রাত্রি হলেই ভালো”
রাতের তিমিরে যখন প্রেম জ্বালে তার নিজস্ব আলো
সে আলোয়
পৃথিবীর কেউ কারো মুখ চিনে নিতে পারে না।
সে তবু চিনে লয়,
তার অভীষ্ট হৃদয়।
অসীম নিস্তব্ধতার মাঝে
জেগে ওঠে
প্রেমের অলৌকিক ভাষা।
সে ভাষায় ঘুমে বিভোর পৃথিবীর কয়না কথা কেউ
কেবল নিঃসঙ্গ নদীর পবিত্র ঢেউ
একা পথ চলে।
আর;
তার তীরে বসে আমাদের অশরীরী আত্না
তারা গোনে ধ্রুব আকাশের ।
...............শুনি
অস্পস্ট তারারা অচেনা ভাষায় কথা কয়
কেউ আর শোনে না তা
আমরা শুনি –
মৃত পাতাগুলি শান্তিতে মাটির বুকে ঝরে পড়ে
অত:পর
শব্দহীন জগতে
রহস্যময় শব্দ সৃষ্টি করে
আমাদের শরীর ক্লান্ত হলে,
অপরের চোখে যুগল ছবি আঁকি
যতক্ষন .. না .. ভোর আসে
পূর্বাকাশ লাল হতে শুরু করলে
যত দূরে সরে যাও তুমি
ততই নিকটে আসো প্রকৃতির খেয়ালে ।
একটি তারা হতে অপর একটি তারা
কত আর যেতে পারে দূরে?
একটি জীবন মৃত হয়
জন্ম লয় নতুন এক হৃদয়
যদিও শরীর ঝরে যায় শীতে
তবু স্বপনেরা কি মৃত হয় ?
কিংবা প্রণয় ?


_________কালপুরুষ
যখন একলা থাকি; গহীন সঙ্গী রাতের!
রাতের মৌনতা ভেঙ্গে- তন্দ্রানীল চেতনারা
নেমে আসে একে একে; অমাবশ্যা রাত্রিনীড়ে
সমুদ্র থেকে গভীরে- নীল চেতনার আবাহনে ।

রাতের চাদরে নীল লোহিত প্লাবন ভেঙ্গে-
উজান মনকে বলি-
আর করাল সমুদ্র স্বপ্নতলে ডুব দেয়া নয়;
রুপালি চাঁদ জ্বেলেছে আলো,
নক্ষত্রের মিলনের এইক্ষণে; এসো আজ-
জোনাক রাতের তারা হয়ে যাওয়া দেখি ।

প্রতিশ্রুতির হাতুড়ি পেটানো শব্দের কষাঘাতে
অতীতের ভবিষ্যত মুর্ছায় থাকুক আজ রাত!
ঘুমের দেবতা আজ কোমায় কাঁপুক-
স্বরাসরে; ---সকালের অপেক্ষায় ।

কল্পনাবিলাস শাদা জমিনের ফুল-
ঘুমিয়ে থাকুক আজ এখন এই মুহুর্তে;
কল্পনার আল্পনায় স্বপ্ন দেখাদেখি থাক ঝিমিয়ে আপ্রাণ;
ঘুমিয়ে থাক আঁতুর ঘরে নিদ্রাতুর পাখা মেলামেলি ।

আজ জীবনবন্দরে-
বহির্গামী জাহাজের নোঙ্গরটা ডুব দিয়ে থাক ।
গোপন শীতল জলতল-
লোনা জল ঢেলে ঢেলে সুনীল আবাহনের;
এসো এই ক্ষণে; এই ক্ষণে এসো-
আজ মিলনের পূর্ব-মুহূর্ত রচনা করি ।।


__________মাইনুল আমিন

Thursday, August 16, 2012

যে থাকে ভাবনা জুড়ে।

মাঝে মাঝে মনে হয়
তুমি খুব কাছেই আছ-
হাত বাড়ালেই তোমায় ছোঁব!
বাতায়নেও পাই তোমার সুবাস-
কি অপরূপ মোহনীয়তা!
ভালো লাগার পূর্ণতায় ভরে থাকে মন
যেন অটুট মায়ার বন্ধন।
রূপ কথায় শোনা গল্প তুমি
যেন জীবনের আরেক নাম!

তুমি থাক মিশে ওই কানির্শের সাথে
তাই দু চোখের দৃষ্টি তোমায় দেখে না।
তবু আমি বুঝি তোমার অস্তিত্ব-
আমার মরমে মরমে!
মায়া ভরা তোমার দু চোখ
চেয়ে থাকে আমার অন্তর জুড়ে-
যেন এক স্বপ্নপুরুষ
ঘুমিয়ে থাকে আমার ভাবনার জলচৌকিতে।



__________দীঘি

Monday, July 30, 2012

ফেলে আসা ক্ষণ

আবারো ফিরে দেখি সে আগের মতোন
খুঁজে বেড়াই উড়াল দেয়া হারানো শালিক
সুদূর কোন তীরের গাছ-পাতায় শ্যামল ঘাসবন
গ্রাস করে নেয়া দুরাগত শৈশবের দুরন্ত ক্ষণ
আহ! রুদ্র ঘনকৃষ্ণে সিক্ত তরঙ্গায়িত মন।

মেঘেদের আগমনীতে জাগতো বিষ্ময়
বিধ্বংসী গর্জনে দিকভ্রান্ত হয়ে যেতো
নীড়মুখী উড়ে চলা বলাকার দল
খাবি খেতে ব্যস্ত হতো কৈ-মাছের ঝাঁক
আড়ম্বরে শেষ হতো এক দুরন্ত দিনের বাঁক।

এক পলকে ঘুরে আসা কোন বৈশাখী দুপুরে
তালপুকুরের কাদা-জলে হতো জড়াজড়ি
অবাক চোখে মুখোমুখি হত খেঁকশিয়ালদের দল
টলোমলো জলে খেলা জমানো সে দামাল বাতাস
চৈতি-বকুলের গন্ধে মাতাল উদাসী আকাশ।

হারিয়েছে সেই কবে বড়শি ফেলা বিলের ঝাড়
ঝাঁকিজালে আটকে পড়া রুইয়ের মুখ
নক্ষত্র খচিত রাতে তারাদের কথন
হারিয়েছে স্বচ্ছ সরোবরে একপশলা ঐকতান
বন-বাঁদাড়ে খোঁজ লাগানো জোনাকিদের গান।

গাছ-ছায়ারা আজ যোজন যোজন দূরের নীপবন
তবুও গোধূলী বেলায় ক্রমাগত খুঁজে ফিরি
আমার ফেলে আসা আপন ভুবন।



__________________আশরাফুল কবীর

Monday, July 16, 2012

২০০৫ সালে শ্রেষ্ঠ কবিতা মনোনীত আফ্রিকার এক কৃষ্ণাঙ্গ শিশুর অসাধাধারণ কবিতা (অনুবাদ)




জন্ম আমার যখন হয় কালো আমি ছিলাম///
কালো বর্ণ নিয়ে আমি বড় হয়ে গেলাম///
কালোই আমি থেকে যাই যখন রোদে যাই//
রোগে-শোকে কালোই থাকি, ভয় পেলেও তাই ///
রং আমার কালোই রবে///
মৃত্যু আমার যেদিন হবে///

ওহে আমার (সাদা) সাথী, শুন দিয়ে মন ///
গোলাপী রং নিয়ে তুমি কর জন্ম গ্রহন ///
সাদা রং ধারণ কর যখন হও বড় //
রোদে তুমি লাল হয়ে যাও শীতে নীল ধর///
রোগে তুমি সবুজ হও হলুদ হও ভয়ে ///
মৃত্যু বরণ কর তুমি ধূসর বর্ণ নিয়ে///

তার পরেও তোমরা সবাই বর্ণহীন থাক///
কালো বলে আমায় কী কৃষ্ণাঙ্গ ডাক? ///



______________মোহাম্মদ জমির হায়দার বাবলা

Wednesday, July 11, 2012

পাথুরে অশ্রু - নিনাদ

undefined
আমি ভুলে যাব - ভুলে যাবে তুমি ও
স্বচ্ছ বেলা শেষের আলোয় বলা কথা
প্রাণপণ প্রণয়ের আশ্বাসে মিশে যাওয়া
নিয়ম ভাঙার নির্ঝর উতসব ;
তা তা থৈ থৈ নিমগ্ন বেলা -- ভুলে যাব
ভুলে যাবার চিরাচরিত বৈচিত্রে
ভুলে যাব এই না থাকার চেয়ে নিবিড়ভাবে থাকা
হয়তো ------
খুঁজে নেব বিষাদ মেঘ- রুপোলি অশ্রুর ঝড়ো উচ্ছ্বাস
উড়ন্ত ডানার ভাঁজে বিব্রত প্রহরে লুকনো
ঠুনকো ঠুনকো আবেগ মেশানো আবরণ - বিলাস
টুকরো সুখে জল - মেঘ- অশ্রু নিংড়ে স্মৃতির পোট্রেট
গড়ে নেব আধো আধো জোনাক দীপ্তিতে ।

তবু চির উন্মনা মনে প্লাবনের টান এলে
অনির্বাণ বেঁচে থাকা ভোরের নুয়ে পড়া শিশির কণা
লাল টিপ ছুঁয়ে জলোচ্ছ্বাস আনলে ভুলে
তবে থামাবে কোন নিয়মে ?? বাঁধবে কোন ছলে ??
এক নিমেষেই বললে -
"উড়ে যাক বৈকালিক হৈমন্তী হাওয়ার ঘ্রাণ --এক তুড়িতেই" ।
তোমার এমন দুরন্ত দুঃসাহস দেখে আমার শ্লথ নিশ্বাস
উড়ন্ত প্রজাপতির মিশেল রঙে ডুবে যেতে যেতে হন্যে হয়ে খুঁজে
নীল চোখে সবুজের মাতাল স্পর্শ বিলাস ।

ভুলে যেওনা নিয়তির কাছে জমা রেখেছি
মায়া -ছায়া-মায়া
সাধ - বিষাদ- বিব্রত প্রহর
তুমি মায়ার উড়নিতে রেখেছিলে কদম কলি - ফুলঝুরি আর কত ;
সে আমার চেয়ে বেশি আর কেই বা জানত ??
তবু ছন্নছাড়া বিরহ - বেদনা নীল নীল বিড়ম্বনায় মুছে দিতে চায় মায়া নুড়ি
যখন আমি তোমার আকাশে উড়াতে চাই ইচ্ছেঘুড়ি --
আমি স্তব্ধ পাথর হতে চাই অক্ষত ইচ্ছেগুলো ঢেউ হয়ে আসে যখন
বিষাদ পাথর হওয়ার অধিকার নিশ্চয় আমার ছিল ।


_____________পাহাড়ী

Friday, July 6, 2012

নিভৃত জোছনার রঙ

undefined
স্থির এক জোড়া চোখ মেলে ধরে দূরে পথিক
ত্রিশূল ভ্রু'র কিনারে ভীরু দীপিকা দোলে
চিরল পাপড়ি পাতায় খুঁজে নেওয়া নিসর্গ সুখ
মরণ সুখে হয়তোবা কিছু ভুল - তবু সুখ সুখ ই
ভুল সে তো চিরকাল ই ভুল ; ভুল সুখে একাকার
একটা সীমান্ত চাই - দু দণ্ড জিরিয়ে নেওয়া
ব্যস এইতো !

অদূরে কাজরী নৃত্যের তালে নাচিছে কোন কিশোরী পায়েল
বাঁধনহারা খোঁপায় গুঁজে রাখা কদম হারিয়েছে কূল
কেশপাশে ঝরে পড়ছে কানন শোভা ;
এখানে নির্বান্ধব পৃথিবীর বাম পাশে শুয়ে আছে নিশ্চুপ ব-দ্বীপ
লাল রঙ এঁকে এঁকে যায় - কত নীল পড়ে থাকে নির্বাক
নাগরদোলার সেই বিনুনি মেয়েটিকে আজো ভোলা হল না
ক্ষণে ক্ষণে তোলপাড় শুরু করে দেয় পুরো ব-দ্বীপ জুড়ে
একটু একটু বেদনা মেখে নিয়ে কালচে চোষ কাগজের মত হয়;
তবু বেদনা ফুরালো না
একাকীত্বের অস্তিত্ব ঘিরে টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ শুনবার আকুলতা
যেন কি এক অদ্ভুত বিলাসিতা ! - কংক্রিটের এই বাংলো তে

কখনো ঝড়ো পথিক পথের সীমানায় থেমে যায়
ণ - হন্যে শূন্যতায় ছুঁতে চায় নিভৃত জোছনার রঙ
পলকে সরিয়ে দেয় উচ্ছ্বাস -আবেগ ; এমন
পরিমিতবোধের প্রাবল্যে আমি নিভে নিভে যাই
মনের দরোজা খুলে ভাসিয়ে দিয়েছি জলজ মায়ার পানসি নাও
সে আজ কতদিন হয়ে গেল !
অভিসারী রেখা আরেকটু প্রশস্ত হতে চাইলে
অবিনাশী ইচ্ছে আদিমতা খুঁজে ফেরে
প্রান্তর পেরিয়ে অনিকেত -তিলক পরবে বলে
নগ্ন বাহুর গভীরে মুখ ডুবিয়ে গভীরতা মাপে
পথিক ... একটু দাঁড়াও
আমার আনাড়ি কামিজের পারে জড়িয়ে দাও উন্মনা স্মৃতি
চঞ্চলতা সরিয়ে স্থির হলে কপালে এঁকে দাও লাল টিপ
এঁকেবেঁকে গেলে আলতো চুমু ;
আমি না হয় "সৃষ্টি" হবো বিন্দু গড়ে ।


_______________পাহাড়ী 

Saturday, June 30, 2012

রাতের মিলন

রাত্রির অভিসারে
তোমাকে খোঁজে পাই স্বপ্নের ভীড়ে
তুমি স্পর্শহীন আলোকের মতোই
রাত্রির আধাঁর তাড়িয়ে
আমাকে সঙ্গ দাও।

কষ্টরা হামাগুড়িতে পালাতে গিয়ে-
আহত হয় নির্জন প্রান্তরে,
জীবন জীবনের সাগরে পাল তুলে
ছুটে চলে অনির্দেশ যাত্রায়।

হাওয়ায় হাওয়ায় ঢেউ তুলে
যৌবনের উন্মাদনায়
অশান্ত সাগরে সঙ্গমের নেশা
শান্ত প্রেয়সীর চুম্বনে, আলিঙ্গনে
রাত্রিরা পর্দা ফেলে স্বপ্নীল ভোরের।

দু’চোখে স্বপ্নরা আরো ভীড় করে
মুহুর্তরা আরো কাছেতে ডাকে
মিলনের সাত মোহনা খোঁজে .....

সৃষ্টির ঘোর গ্রহনে তলায় অপূর্ণতা।


_____________

ডেকে যায় রূপোলী রোদ্দুর

undefined
অদ্ভুত ছোট দুটো হাত, দুটো পা, পিটপিট করা চোখের পাতায় আদো আদো কাঁপন । অপার আঁধারি
মায়া হতে একরাশ আলোর সামনে এসে পড়লো । তখনও বিস্ময় ! ঘোর কাটে না যেন । মায়ের ঊষ্ণ
ও'মে জিরিয়ে নিলো কিছুক্ষন । কি সে তার কান্না ! সজোরে জানিয়ে দিলো -"ঐ আঁধারি মায়ায় ভাল ছিলাম আমি" ।


দুপুর গড়িয়ে নামলো বিকেল । আজ সে অনেক বড় হয়ে গিয়েছে । আর অনেক নিঃসঙ্গ যেন । মাঝে মাঝে ভাবে ---

সময়ের গতিটা যদি পেছনে ফিরিয়ে দেওয়া যেত
পথ ভুলে কিংবা মনের অজান্তে
চলে যেত অনেক দূরে;
যেখানে এক নিষ্পাপ বালিকা
পাড়ার সাথীদের খুঁনসুটি আর
বোনদের আড্ডায় হেসে কুটিকুটি মধ্যদুপুরে;
জোছনা রাতে জানালা-খোলা আকাশ পেরিয়ে
চাদের বুড়ির গল্প শুনতে শুনতে ঘুম চোখে
হাতছানি দেওয়া কতদূর বহুদূর।

বইয়ের কালো অক্ষর ঘোলাটে হয়ে এলে
আম্মু বলতেন" রাত জেগে পড়তে হয় না" ।
মিষ্টি অভিমান- খুব ভাল লাগত বলেই না
নিত্য রাত জেগে পড়ত ; লক্ষ্মী মা ।
টেবিল থেকে টেনে মুখে তুলে দিত খাবার
তারপর সোজা ঘুম; আহা কোথায় হারালো সেসব??

অথবা আরও দূরে
যেখানে ছয় বছরের খুকী
আম্মুর ছায়ায় ছায়ায় , আব্বুর আদরে
পড়ুয়া ভাইয়ের সোহাগ আর
বোনদের বকার ভিড়ে ।
ভাত-ঘুমে মায়ের পাহারা
সাথীদের খেলার আহ্বান
মন আনচান --আরও কত কি !

সন্ধ্যা হামাগুড়ি দিতে দিতে রাত এনে দিল--

সেই ...সেই মেয়ে আজ
ইট -পাথর - সুরকির দেয়ালের মাঝে
রাত জাগা ঘুম চোখে শুনতে পায়
ডেকে যাওয়া রুপোলী রোদ্দুর ।



__________________পাহাড়ী

হৃদয় কর্তন করতে তুমি অদ্বিতীয়!



তুমি আমার হৃদয় স্পর্শ করেছিলে
তোমার মোহনীয় রূপের কোমল নীরবতায়।
তোমার আদেশই ছিল আমার ইচ্ছা
যতক্ষণ পর্যন্ত তোমার দৌড় ছিল আমার ভালবাসায়।
আমি নিজেকে বলতে শিখেছিলাম
তোমার আমি কিম্বা আমি তোমার,
প্রত্যাশিত আমাকে পেলেই ভুলে যেতে
অন্য শত ব্যস্ততা!
আজ তুমি ভুলে থাক আমায়
ছুটে চল অতি দ্রুতগামী, ক্রমাগত ভুল ঠিকানায়!
অথবা তোমার আপন নীরবতায়, ইচ্ছা এবং কল্পনায়!
আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম-
হৃদয় কর্তন করবার সেরা অস্ত্রটি তোমার কাছে!!
তুমি আমার হৃদয় কেটে ফেলেছিলে অন্যত্র এবং জীবন!

আমি যখন প্রিয় বন্ধুদের সামনে
মিথ্যে হাসির ভান করি
আমি শঙ্কিত থাকি নিজেকে নিয়ে এবং ভীষণ!
এটা শুধু অভিনয় মাত্র
আর আমি এক রঙ্গ মঞ্চ!
দিনে রাতে আমি অসংখ্যবার ফিরে যায়
আমার তাৎপর্য-হীন ভণিতায়
কিন্তু কিভাবে!
কিভাবে পারি এই ছদ্মবেশ ধারণ করতে
আমার দুটি চোখ কি পারে!!
এ জেনেও -
হৃদয় কর্তন করতে তুমি অদ্বিতীয়!!

আমি কিভাবে পারি চিরতরে নিরাময় হতে
আমি গভীর ভাবাবেগে চমকিত হয়
তুমি সর্বদা আমার জীবন বিদীর্ণ করে
হৃদয়কে করেছ প্রয়োজনীয় খন্ডে চূর্ণ!
আমি অনাবরত চেষ্টা করেছি
সেই কষ্টের দুর্গ থেকে বেরিয় আসতে
আমার ভিতরে প্রচণ্ড কষ্ট অনুভূত হয়েছে,
তবু ব্যর্থতার বিদীর্ণ কষ্ট বারংবার
তোমাকেই চেয়েছে
এ কথা জেনেও
হৃদয় কাঁটতে পার তুমি এক নিঃশ্বাসে
আমি কিভাবে চিরতরে নিরাময় হব!
আমি গভীর ভাবাবেগে চমকিত হয় এবং দেখতে পায়
তুমি আমার জীবন বিদীর্ণ করে
হৃদয়কে করেছ কঠোর পদাঘাৎ!



____________আরমানউজ্জামান

জীবন যেমন

undefined
বেঁচে আছি বলেই তো মনে হয়,
এর চেয়ে বেশি কিছু প্রয়োজন
থাকার কথা তো নয়।

হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খাওয়া
তারপরে সামলে নেয়া
যেন সে প্রতিদিনেরই ঘটনা।
উঠে দাঁড়াতে পারছি আবার,
এই তো যথেষ্ট;পথ চলা থামানোর
কথা তো আর না।

জীবনের সাথে অভিমান,
ক্ষোভ, আক্ষেপের আস্ফালন;
ফলাফল শূন্যে শেষ।
কি দরকার এসবের তবে,
লাভের খাতায় বরং
শূন্যই থাকবে বেশ।

দিনভর তোষামোদের পর
শুনতে হয়, আরও চেষ্টা কর।
নিজের রাস্তা চেষ্টাতেই গড়ি,
দিনভর হাত কচলিয়ে মরি,
জীবনের এই বিচিত্র সৌন্দর্য!

তাই বেঁচে থাকার সুখে,
নয় সুখের মুখোশে
কণ্ঠ ছিঁড়ে চিত্‌কার করি
হর্ষে, আমোদে
নয়ত বিষাদে।
জীবনের এই তো শেষ নয়,
বেঁচে থাকার জন্যই
তাই বেঁচে থাকতে হয়।


____________ছদ্মবেশী

Thursday, June 28, 2012

হৃদয় কর্তন করতে তুমি অদ্বিতীয়!

undefined

তুমি আমার হৃদয় স্পর্শ করেছিলে
তোমার মোহনীয় রূপের কোমল নীরবতায়।
তোমার আদেশই ছিল আমার ইচ্ছা
যতক্ষণ পর্যন্ত তোমার দৌড় ছিল আমার ভালবাসায়।
আমি নিজেকে বলতে শিখেছিলাম
তোমার আমি কিম্বা আমি তোমার,
প্রত্যাশিত আমাকে পেলেই ভুলে যেতে
অন্য শত ব্যস্ততা!
আজ তুমি ভুলে থাক আমায়
ছুটে চল অতি দ্রুতগামী, ক্রমাগত ভুল ঠিকানায়!
অথবা তোমার আপন নীরবতায়, ইচ্ছা এবং কল্পনায়!
আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম-
হৃদয় কর্তন করবার সেরা অস্ত্রটি তোমার কাছে!!
তুমি আমার হৃদয় কেটে ফেলেছিলে অন্যত্র এবং জীবন!

আমি যখন প্রিয় বন্ধুদের সামনে
মিথ্যে হাসির ভান করি
আমি শঙ্কিত থাকি নিজেকে নিয়ে এবং ভীষণ!
এটা শুধু অভিনয় মাত্র
আর আমি এক রঙ্গ মঞ্চ!
দিনে রাতে আমি অসংখ্যবার ফিরে যায়
আমার তাৎপর্য-হীন ভণিতায়
কিন্তু কিভাবে!
কিভাবে পারি এই ছদ্মবেশ ধারণ করতে
আমার দুটি চোখ কি পারে!!
এ জেনেও -
হৃদয় কর্তন করতে তুমি অদ্বিতীয়!!

আমি কিভাবে পারি চিরতরে নিরাময় হতে
আমি গভীর ভাবাবেগে চমকিত হয়
তুমি সর্বদা আমার জীবন বিদীর্ণ করে
হৃদয়কে করেছ প্রয়োজনীয় খন্ডে চূর্ণ!
আমি অনাবরত চেষ্টা করেছি
সেই কষ্টের দুর্গ থেকে বেরিয় আসতে
আমার ভিতরে প্রচণ্ড কষ্ট অনুভূত হয়েছে,
তবু ব্যর্থতার বিদীর্ণ কষ্ট বারংবার
তোমাকেই চেয়েছে
এ কথা জেনেও
হৃদয় কাঁটতে পার তুমি এক নিঃশ্বাসে
আমি কিভাবে চিরতরে নিরাময় হব!
আমি গভীর ভাবাবেগে চমকিত হয় এবং দেখতে পায়
তুমি আমার জীবন বিদীর্ণ করে
হৃদয়কে করেছ কঠোর পদাঘাৎ!


____________________আরমানউজ্জামান

Tuesday, June 26, 2012

মেয়ে তুমি জাগো...

মেয়ে তুমি জাগো
আমি তোমার বন্ধ দরজায় কড়া নাড়তে চাই
নিবিড় কাষ্ঠে এঁকে দিতে চাই মুক্ত পারিজাত।
সে কোন সংরক্ষিত আসনের দোহাই দিয়ে নয়,
চাকুরী কিংবা উচ্চপদে কোটা নিশ্চিত করেও নয়।
মনের গভীরে আলো জ্বালিয়ে আমি তোমার
বদ্ধ পৃথিবীর দ্বার খুলে দিতে চাই।

হাতের পুতুল কেড়ে নিয়ে তুলে দিতে চাই বন্দুক
সাজানো খেলাঘর ধুলোয় মাড়িয়ে তোমার হাতে
তুলে দিতে চাই আমার খেলনা গাড়ি, উড়োজাহাজ।
পুতুলের মত নয়, তোমায় দেখতে চাই সাহসী বীরঙ্গনা রূপে।
বদ্ধ সংসারে আবদ্ধ নয়; তোমাকে দেখাতে চাই উন্মুক্ত আকাশ।

বিজ্ঞাপনের পণ্য করে নয়, রূপালী পর্দায়-
তোমার মায়াবী কায়া উন্মুক্ত করেও নয়।
উদ্ভট পোশাকে, নতুন ফ্যাশনে তোমার
অবিন্যস্ত তণু রাস্তায় দেখিয়ে নয়।
এসো, তোমার সুপ্ত মেধায় ভালবাসার জল ঢালি।
তুমি জাগো, ভাবনায় চেতনায় পরিপূর্ণ প্রস্ফুটিত হও ।

অবলা প্রেমিকা রূপে আমার বাহু শৃঙ্খলে বন্দী, বগল চাপা
নিয়ত আবেগাপ্লুত তরুনীর উন্মুক্ত হাসি দেখতে চাই না,
মাথা নিচু করে নয়, আমার কাঁধে কাঁধ রেখে চল।
নির্জন পার্কে বসে সুরসুরিতে খুনসুটি নয়,
এসো জীবনের পথে, এসো তোমার সাথে পাঞ্জা লড়ি।

তোমায় অন্ধকূপে বন্দী করে দিতে চাই না
বিলাসী অন্ন, জমকালো বস্ত্র, অট্টালিকা সুখ।
চাকুরীতে কোটা নয়, সংরক্ষিত কোন আসন নয়,
নয় কোন অনুগ্রহের লজ্জা।
হাত বাড়িয়ে আছি- তুমি উঠে এসো...... উঠে এসো
আমার ঐন্দ্রজালিক ভাবনার মূর্তিমান প্রতিমা হয়ে,
এসো সাজাই নতুন পৃথিবী- পারস্পরিক শ্রদ্ধায়,
গভীর ভালবাসায়। বন্ধু হয়ে, সহযাত্রী হয়ে......


_____________অনিন্দ্য অন্তর অপু

Sunday, June 24, 2012

উপমা

উপমা তোমায় কি দিবো আজ?
সব কিছু ছাড়িয়ে গেছ তুমি-
আমার আকাশের চাঁদ হয়ে
হাসছো তুমি আলো ছড়িয়ে,
তারাগুলো তোমায় ঘিরে - এলোমেলো হয়ে থাকে।
আজ এই দিনে নতুন সাজে
সেজেছ তুমি তোমার জন্মদিনে,
এই গান আজ আমার তোমার জন্মদিনের উপহার।।

প্রজাপতিরা সব উড়ছে - ঘুরছে
সুবাসিত সেই ফুল খুঁজছে,
মৌমাছিরা পথ হারালো
মুখে মধু নিয়ে ফুলটি কোথায় গেল?
ওরা বোকা, কেউ জানেনা - সেই ফুল তো আর বাগানে ফোটে না।
আজ এই দিনে নতুন সাজে
সেজেছ তুমি তোমার জন্মদিনে,
এই গান আজ আমার তোমার জন্মদিনের উপহার।।




____________________ফারহানা জামান লিজা

রক্তাক্ত হৃদয়


 


হৃদয়ের মাঝে প্রবল রক্তক্ষরণে
আন্তঃঅলিন্দ, আন্তঃনিলয় পর্দাটা
বুঝি ছিড়েই গেল, এতটা প্রবল
আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা যে
ছিল না........। বাহ্যিক অটল মূর্তিটা
দেখে কেউ কল্পনায় আঁকতেও পারেনি,
ভাবতেও শিখেনি অন্তরাত্না যে পুড়ে
পুড়ে ছারখার।

কতদিন রইবে এই বাহ্যিক খোলসটা?
জানে না কেউ..........।




____________জান্নাতী

আশান্বিতা

ভালোবাসার নীলকন্ঠে আমি কখনই সাধতে চাইনি অচেনা সূর-
গাঁথতে চাইনি স্মরণের মালা ভুলে যাওয়া ফুলের গুচ্ছ কুঁড়িতে
আষাঢ়ের ধ্রুপদী আমায় টেনেছে বারবার তোমারই বিশাল বুকে
কখনো ঝুমঝুম বর্ষার আলিঙ্গনে ,কখনোবা মেঘের ধূসর গর্জনে।

আমি শুনেছি বাতাসের গুঞ্জনে তোমারই না বলা সব কষ্ট-ব্যাথা
আমার হৃদয় গহিনে তোলপাড় করেছে হাওয়ার ছন্দভরা উত্তাল
আমি পরশ পেয়েছি তোমারই গভীর নিঃশ্বাসের প্রাণময় মায়ায়
কদম ফুলের প্রথম সুবাসে যখন মেতেছে অনাদর যাযাবর মন
উদাসী জানালা খুলে স্মৃতির ভেলায় ভেসেছি নিয়ে নিঃস্ব সময় !

সোদামাটির হিন্দোলে বাজে নুপুরের ধ্বনি-প্রহর কাটে নিরাশারই
দোলায়। অপেক্ষায় দেখি সূর্য উঠা ভোর মিতালীর ছায়াতলে,লুহাওয়ার
টানে অবিরাম ছুটে চলে; দুচোখ খুঁজে ফিরে স্নিগ্ধভরা কৃষ্ণচূড়ার দোর
নতুন সাজে সেজেছে ধরণী প্রেয়সীর দিঘীজল-আমি সেই পানে চেয়ে
থাকি মুগ্ধতার বাণী শম্বরে ভাসিয়ে; জানি আমি পাব তোমায় কোন
এক স্তব্ধক্ষণে ,অনন্তের সানায়ে আবার না হয় নতুন করে ।



_____________সেলিনা ইসলাম

নিরালাপে নারীলাপ

তুমি লতা হও
জড়িয়ে থাকো আমার জানালার পাশে থাকা কামিনী।
সারারাত মোহিত থাকি আমি কামিনীর কামঘ্রানে।

বৃষ্টি হও ইলশেগুড়ির মতো
সারাদিন ঝর ঝর করে ঝরো আমার উঠানে,
শিশুর মতো খেলা করো জমে থাকা কাঁদাজলে।

শুভব্রত হও, হৃদয়ের কাছে যাও
উপাসনা করো প্রভুর।

পার্বনের উৎসব হয়ে জ্বল জ্বল করে জ্বলো কৃষাণের চোখে
শিল্পীর রং-তুলি হয়ে ফোটে ওঠো নতুন সৃষ্টিতে, ক্যানভাসে।
মৃদু বাতাস হও
বয়ে যাও ঝির-ঝির
পুকুর পাড়ের বাশঝাড়ে।

করুণা করো
অনুরোধ শুনো
শুধু রঙ বদলিয়ো না ।।


_______________ডাঃ এনামুল হক এনাম

Sunday, June 3, 2012

প্রিয়স তুই

দেখেছিস প্রিয়স আজকের সন্ধ্যা তাঁরা?
আকাশের পূর্ব কোণে জ্বলছে মিটিমিটি-
জানিস তো প্রিয়স-
ভোরবেলা তার নাম হয় সুখতাঁরা-
সন্ধ্যা গণনে যে জানায় আঁধারের নিমন্ত্রণ
আবার ভোররাতে বলে যায় আলোর গল্পগাঁথা।
যেভাবেই তাকে ডাকিস না কেন
নিরুপম অস্তিত্ত্বতে সে একজনই।
তবু প্রিয়স বুঝি আমি সব-
তুই এখন অন্য আকাশের চাঁদ!

প্রিয়স দেখ ওই কালপুরুষ?
তীর ধনুকের মত!
ওই তীক্ষ্ণ ফলাতে বেঁধেছি হৃদয় জানিস তো!
কেটে টুকরো টুকরো হয়ে
সে বইয়েছে রক্তের বন্যা!
তবু তাই দিয়ে এঁকেছি কপোলের টিপ
প্রিয়স তুই কি দেখেছিস তো?
জানি তুই দেখবি না!
তুই যে এখন অসময়ের অমরীচিকা-




____________দীঘি

Saturday, June 2, 2012

মেয়ে একটু দাড়াও

এই মেয়ে, এই মেয়ে; এই....... শোন, একটু দাড়াও।
আহা ওদিকে নয়, এদিকে নয়, কোন দিকেই নয়;
আমি বিবেক বলছি, আমায় তুমি দেখতে পারবে না।
তুমি পার্কের ঐ বেঞ্চিটার উপর বস তো,
হাত থেকে ব্যাগের বোঝাগুলো নামাও, একটু স্থির হও।

ভয় পেয়ো না, তোমার অন্য দু’প্রেমিকের মত
আমিও তোমায় ভালবাসি, খুব ভালবাসি।
তোমায় আজ পরীর মত লাগছে। কপালে কালো
একটা টিপ পড়েছ দেখছি; অদ্ভুত মানিয়েছে তো তোমায়।
আচ্ছা, তোমার কি মনে আছে তোমার প্রথম প্রেমিক
সেই কিশোরী বয়স থেকেই পরম মমতায়
তোমার চুল বেঁধে কপালে টিপ পড়িয়ে দিত।
গলা জড়িয়ে কত্ত আদর নিতে তুমি, তোমার পায়ের নূপুরের
নিক্কণ ধ্বনিতে কত্ত খুশি হত তোমার প্রথম প্রেমিক।
ক’দিন আগেও তো জ্বর বাধিয়ে বিছানায় ছিলে তুমি,
তোমার প্রথম প্রেমিকের অস্থিরতা তুমি দেখ নি?
রাত জেগে কে তোমার মাথায় জলের পট্টি দিয়েছিল?

যে প্রেমিক গত বাইশ বছর ধরে নিঃস্বার্থহীনভাবে
তোমায় ভালবেসে এসেছে।
তোমার শৈশব, তোমার কৌশর, তোমার নিষ্পাপ যৌবনে
যে প্রেমিক তোমার কপালে প্রতিদিন চুমু খেয়ে এসেছে,
তোমার সব আল্লাদ, সব আবদার যে হাসিমুখে মিটিয়েছে।
সেই বাইশ বছরের প্রেমিককে ফেলে এক বছরের
প্রেমিকের হাত ধরে তুমি পালাতে পার না। পার কি?
প্রথম প্রেমিকের চেয়ে তোমার এই নতুন প্রেমিক
তোমাকে বেশি ভালবাসতে পারবে কি?
তোমার নতুন প্রেমিকের এত্ত বড় বুক আছে কি
যেখানে একই সাথে পাবে আদর, স্নেহ, মমতা আর ভালবাসা?

মনে রেখ মেয়ে, পৃথিবীর সব পুরুষ তোমাকে ফেলে
যেতে পারে; পৃথিবীর সব পুরুষকে তুমি ঘৃণা করতে পার।
কিন্তু হাজারটা আঘাত দিলেও তোমার ঐ প্রথম প্রেমিক তোমায় ফেলে যাবে না,
উনিই একমাত্র পুরুষ যাকে তুমি ঘৃণা করতে পারবে না।
শত আঘাত, শত লাঞ্ছনা শেষে তুমি ওর বুকেই ফিরে আসতে চাইবে।

আহা কাঁদছ কেন? উঠছ কেন? উল্টো পথে চললে যে?
যাও। ফিরে যাও। আমার মনে হয় তুমি ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছো।
কোন বাবা চায় না তার হাতে গড়া প্রাণের প্রিয়তমা কষ্ট পাক,
বাবা সন্তানদের কাছে খুব বেশি কিছু চায় না।
একটু ভালবাসা চায়, একটু শ্রদ্ধা চায়, একটু সম্মান চায়,
আর একটু বিশ্বাস। এগুলো কি খুব বেশি চাওয়া???




____________অনিন্দ্য অন্তর অপু

আরো কিছু দূর

মানুষের কতো যে অভিলাষ অপূর্ণ থেকে যায়,
কতো না গোপন সাধ মনে কাঁটা হয়ে বিঁধে রয় ।
কাঁটাবিদ্ধ মানুষ তবু ঘুমায় অকাতরে,
ঘুমের বিষ তার স্নায়ুকে অবশ করে দেয়
কখনো স্বপ্নে আকাঙ্ক্ষাগুলো ডানা মেলে ওড়ে-
প্রশ্নাতীত ভৌগোলিক সীমানার বাইরে
আকাশের দরজা খুলে...

মিছেমিছি দুঃখ করো না তুমি-
আমার না হয় কিছু সাধ
অপূর্ণই রইলো পড়ে,
না পাওয়ার বেদনা রইলো
পরম পাওয়ার কামনা হয়ে,
শুধু শুধু পথচাওয়া, কান পেতে বসে থাকা--
অসম্ভবকে বরণ করার নীরব তাড়না
আমাকে তাড়িয়ে না হয় নিলো
জীবনের শেষপ্রান্ত অবধি !
তবু তো একটা মানে দাঁড়ায়
খাওয়া-পরার বাইরে জীবন আরো কিছু দূর
হেঁটে তো যায়।
স্মৃতির দংশন নয়, নতুন ভালোবাসার খোঁজে
তৃষিত এ মন--


সব দুঃখ-বেদনা ছাড়িয়ে আমাকে সামনে
যেতে দাও
আরো কিছু দূর...........



______________আয়েশা আহমদ

কোনদিন আর

কোনদিন আর আসবনা বলে
আবার এসেছি এই
তারাভরা নক্ষত্রের তলে;
ফিরে আসতেই-
ভাবলাম একবার তোমাকে
ভালবেসে যাব শেষ বারের মত
ভাল করে দেখ চেন কি আমাকে?
বুক চিরে দেখ সেই ক্ষত
মুছে গেছে কিনা এই প্রাণ থেকে!
অনেক আঁধার পেরিয়ে অনেক এসেছে আলো
তবু তুমি ভালবেসে গেলে অচেনাকে
সেদিনও আমারে আজও আমারে বাসনিকো ভাল।

আমার প্রাণের মত ঘাসের প্রাণ আজ
মাঠের কুয়াশার মত হৃদয়
দিনমান হারায়ে গেলে বুঝি আকাশের সাঁঝ
এ পৃথিবীর সবটুকু আলো শুষে লয়;


জীবনের সত্য পাখিদেরও আছে
ক্লান্তির নিঃশ্বাসে দহে তারও প্রাণ
মাটির রক্তে আজ নদী মিশে গেছে
তবু তুমি জাগনিকো, শোননি হেমন্তের শেষ আহ্বান।।



________________কালপুরুষ

Tuesday, May 29, 2012

সেখানে তুমি নেই

কী কথা কতোদিন কতো প্রতীক্ষার দিনরাত্রি শেষে
বলা হয় না কখনও! কী এমন কথা বুকের জমিনে
অঙ্কুরিত বৃক্ষের মতো আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন নিয়ে
বেহাগ-বাগেশ্রীর বিলাপে রাতকে করে ভারাক্রান্ত;
কী এমন না বলা কথা বুকের গভীরে আগ্নেয়গিরির
দাবানল হয়ে পোড়ায়! তুমি কি জানো সেসব?

বিরহী প্রেমিক জানে, জানে মধ্যরাতের নক্ষত্ররাজি
নক্ষত্র হতে গ্রহ, গ্রহ হতে গ্রহান্তরে সে কথা ছড়ায়।
বিবশ আকাশ মৌনতার সুতোয় সেসব ধরে রাখে
নীলকণ্ঠ ধরণী তারাদের মিছিলে ঢেকে দিতে চায়
প্রকাশের যন্ত্রণা, দগ্ধ উল্কাপিন্ড হয়ে খসে পড়ে
তবুও কথাগুলো বর্ণমালা খুঁজে পায় না কখনও!

প্রথম প্রহরে ভেবেছিলাম দুপুরের রোদে ঝলসে দেবো,
দুপুরে পড়ন্তপ্রায় সূর্য মন্ত্রমুগ্ধ করে বলল চুপি চুপি-
‘একটু পরেই নামবে গোধূলি’; গোধূলির কাছে নতজানু
আমি হাঁটুগেড়ে প্রার্থনার ভঙ্গিতে দু’হাত তুলতেই
রাতের অন্ধকার অলক্ষ্যে বিদ্রুপ করে বলল-
‘সময়ের ধারাপাত পড়ে কি কেউ!’ তুমি পড়েছো?

সময়-অসময়ের ব্যাকরণ না জানা কান্ডজ্ঞানহীন এক
পথিক শেষ রাতের পান্থশালায় শূন্য পাত্র হাতে নিয়ে
তন্বী সাকীর বাহুবন্ধনের স্বপ্নে বিভোর নিদ্রাহীন!
ক্লান্তিহীন ক্ষুধার্ত কামুক যন্ত্রণায় নীল হতে হতে
ভালোবাসার ধারাপাত ভুল করে প্রতিদিন-
মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরায়! সে যন্ত্রণা কি তুমি জানো?

আমি যন্ত্রণার নামাবলি গায়ে দিয়েও স্বপ্ন দেখে দেখে
ক্লান্ত অবসন্ন প্রেমিক তোমাকে খুঁজি বালুকাবেলায়।
ঝিনুকের ফসিলে খুঁজি স্বপ্নের আকর, বাতাসের মুগ্ধতায়
মনে হয় এই বুঝি বলার সময়, এই বুঝি মাহেন্দ্রক্ষণ
অথচ তখনও একটি বিষণ্ন বাঁশির ক্লান্ত পঞ্চমী
আমাকে নিয়ে যায় বধির জগতে, সেখানে তুমি নেই।

Tuesday, May 1, 2012

ফুল বেল পাতা থাক পরম যত্নে

মনের নির্জন কিনার নির্জনই থাক, ছুয়ে প্রেম জাগিও না তুমি
প্রেমে খুব ভয় ,ভালবাসলে যদি তুমি দাও এক ঝাক স্মৃতির পাখি,
তোমাকে আগলে রাখি নিরাপদ দেয়ালের মত, তবুও মনভুমি
আশঙ্কামুক্ত নয়-তারকাটার মত বিধে যাও,তাই এই দুরত্ব রাখি ।

এই চোখ এত সামলে চলি ,যেন তোমার টিপও থাকে আড়ালে
সরল প্যাঁচে বাধা জটিল বেণী আমি দেখলেই দৃষ্টি ছিনতাই হবে,
হাওয়ায় দোলে না তোমার সর্পিল বেণী-যেন আমার হৃদয় দোলে
ফুল বেল পাতা থাক পরম যত্নে, থাক কিছু কাজলও অনুভবে ।

Thursday, March 1, 2012

তোমায় দিলাম সবুজ শৈশব .

আজ তোমায় শ্যামলিমা যৌবন দেবো ;
লাল ধূলিকণা ছুঁয়ে ছুঁয়ে
ঝিরিঝিরি বাতাস লয়ে
সবুজেরা যেখানে মিতালী গড়েছে ।

চিরচেনা বন্ধু আমার; বিমূর্ত আকাশ
উদ্ধত পাহাড়ের মায়া;
কুহুকুহু ডাক তুলে
অচেনা পাখির উড়ে উড়ে যাওয়া ;
কর্ণফুলীর শান্ত ধারার থেমে যাওয়া ;
যেখানে শৈশব হেসেছে চিকচিক রোদে ।

সিনেমা হলের পেছনে সেই ঝোঁপ
লাল নীল হলুদের গুটিগুটি ছোপ
নিয়ন আলোয় কার্গোর বিমোহিত সাঁঝ
চাঁদের ছায়ায় মেঘেদের নিশ্চুপ রাত
আমি নিশ্চিত বলতে পারি
সেখানে দাঁড়ালে নিজেকে নিষ্পাপ মনে হয়।

বিচিত্র মুখ- ভাষা-পোশাকের মানুষ
ভালবাসা মৈত্রীতে উড়ায় ফানুস;
বারোমাসি নিবিড় বাঙালি ;
ইছামং;পুতুলখেলায় বর ছিলো যে আমার;
ওদের আমি কথা দিয়ে এসেছি
তোমায় সাথে নিয়ে যাবো বলে।


_________পাহাড়ী

আহিত অনুভূতি

নিশীথ নিভৃতে একহারা দীপালি মায়ায়
অনিন্দ্য অতিথি হলে তুমি; শৈল্পিক ছায়ায়;

শিউলির সফেদ শুভ্রতায় বলিহারি জলজ আকর
বিতোভেনে স্বপ্নের চাষ ;জলরং অনুক্ষন
আরশির সাজ মোহ মায়া; তিথির পুষ্প বাসর
সিক্ত আবেগে দিলাম তোমায় অনুক্ত অনুরন।

অনিন্দ্যঃ স্বপ্নচারিনী;এমন নিউরনের খেয়ালিপনায় রাজবন্দী করোনা
একটু না হয় ক্রন্দসী হও ; সুখতপ্ত নোনা জলে
চুঁইয়ে চুঁইয়ে ছুয়ে যাক মিষ্টি কপোল;

নীললোহিত শিরায় কেন্দ্রমুখী আরোহী করোনা
একটু না হয় দৃশ্যে দাঁড়াই ; বাস্তবতার রোলে
পাঁচালী রাগে হয়ে যাক প্রণয়ী কুশল ।


________পাহাড়ী

ফিরে যেতে চাই অতীতে

আমি অপেক্ষায় আছি,
তোমার হাত টি ধরব বলে।
তোমার হাত ধরে আমি আবার,
হেঁটে যেতে চাই বহুদুর।

আমি অপেক্ষায় আছি,
তোমার চোখে চোখ রাখব বলে।
তোমার চোখে চোখ রেখে আমি আবার,
হারিয়ে যেতে চাই অজানাতে।

আমি জানি, আমার সেই অপেক্ষা,
কখনও শেষ হবে না।
আমার ইচ্ছা গুলো আর
কখনও সত্যি হবে না ।

যদি আমি পারতাম
ফিরে যেতে অতীতে;
শপথ করছি ঈশ্বরের নামে,
আমি তোমাকে আর কষ্ট দিব না ।

অপর্ণা আমি ণ - হন্যে খুঁজে ফিরি

এতদিন ধরে তোমাকেই আমি খুঁজেছি
গোধূলি আঁধারে, রোদন ভরা বসন্তে ,
মন্ত্রমুগ্ধের বটমূলে শব্দের জলে কুহকী মায়ায়
নির্জন তারার কানে কানেও কত দিন
বলে এসেছি " ভালবাসি তোমায় "|

তোমার জন্য তৃষ্ণা আমার ফুরায় না
জুড়োয় না কামনার তাপ ও
বিছুটি জ্বালায় জলজ ছায়ায় ভাসি

তুমি-তো জানো সবই
ঘৃণা ভরে ,উপেক্ষায় যে নক্ষত্রদের আমি দলিত করেছি
আজ তারাই আমার প্রাণের কাছে চলে আসে সাঁঝবাতি জ্বেলে
আমার সাথে সাথে তারাও আজ তোমায় খুঁজে ফেরে

তাইতো পুরনো ক্ষতের গন্ধ মুছে ফেলে
সর্বনাশা সন্ধ্যায় শঙ্খচূড় সাপের ভয়কে
উপেক্ষা করে ছুটে আসি তোমার কাছে

আমার হৃদয় এক ঘাই হরিণী হয়ে
পৃথিবীর সব হিংসা ভুলে
কৌমুদী জ্যোৎস্নায় পিপাসার আঘ্রাণে
তোমার বুকে স্বপ্ন জাগাই

নীল মাছির ভন ভন শব্দ মিলায় বহুদূরে
সন্দেহের আবছায়ার মৃত্যু ঘণ্টা শুনি খুব কাছেই
চোখ মেলে চেয়ে দেখি
ভোরের হলুদ শিলালিপিতে তোমার তৃষিত অক্ষি গোলক |

অপর্ণা আমি ণ - হন্যে খুঁজে ফিরি
তোমার ভালবাসা পঞ্চম কাব্যের পাতায় পাতায়
ধুলো ঝেড়ে , মৌন নীলের ইশারায় নহবতের সুরে
অনিমেষ অনুরণিত হোক তোমার আমার
না ফুরানো দীর্ঘ রাতের কথা |


__________ মোঃ মুজিব উল্লাহ

চল যায় জ্যোৎস্না স্নানে

নিথর নিরব মধ্যরাতের চাঁদ জ্যোৎস্নায় সিক্ত
চল যায় জ্যোৎস্না স্নানে অবিরত হয়ে আপ্লুত,
নিস্তব্ধ সময় বহমান, পাশাপাশি দুজনে
সুধাপানে চেয়ে থাকি প্রিয়ন্তীর মুখপানে,
তিল তিল করে বহমান প্রহর যেন নিঃসঙ্গ খোলা জানালায় বসে থাকে
চোখে চোখ রেখে কত শত স্বপ্ন আঁকে।

মধ্যরাতে জ্যোৎস্না হলে আমার স্বপ্ন দেখা বারণ
বারণ কুনসুটি, হাতে রেখে হাত কারণ বা অকারণ
তুই তো বলিস না, চল যায় জ্যোৎস্না স্নানে
থাকে না ওষ্ঠে সুরের আভা কারণ বা অকারণে।

ঘুম ঘুম তোর চোখে থাকে না তো কোন আহব্বান
ঘুম ঘুম তোর দুচোখে হয় না তো কোন মায়াবী সাতকাহন
আমি বসে থাকি সাথে নিয়ে স্বপ্ন ও জ্যোৎস্না
তুই তো বলিস, কি এই হেয়ালিপনা! ঘুমাতে যাবি না?
অতৃপ্ত মন নিয়ে হয়না আমার বলা
হয়না কথা ও কবিতার শিহরণে পথ চলা
জ্যোৎস্না আসবে আবার, থাকবে না আধার
তাই আমি বসে থাকি নিয়ে ভালোবাসা তোর আমার।।



______ সফেদ কুহেলি

আমারও প্রেম ছিল

আমারও প্রেম ছিল
একঝাক স্বপ্নের পুঁটুলি নিয়ে নিশিদিন ভেঙ্গেছি পাহাড়
ভেঙেছি সমুদ্রজল কেটেছি অবাধ সাঁতার
মাথায় সূর্যের টুপর, পদতলে তপ্ত বালুকা; হেঁটেছি জনপদ
উন্মাতাল বৈরী হাওয়া করেছে ধাওয়া অবিরল
শকুনির ‘ছো’ শিঙ্গার ‘ফু’ কেঁপেছে হৃদয়
আশার দোলায় দুলেছি কত, শপেছি জীবন
শুধু দূর হতে দেখেছি অই সোনামুখ, কালচোখ প্রেরণার বেদি।

দিগন্তে আকাশ ছোঁয়ার বাসনায় হাতে ধরেছি হাত
হেঁটেছি সর্ষক্ষেতের আল-পথ বেয়ে বহুদূর
মাঠের পর মাঠ, সবুজ ঘাস, খুঁটে বাঁধা বাছুর ডিঙিয়েছি
ডাংগুলিতে থামিনি, উড়ে যায় এক ঝাক শাদা বক, যুগল কপোত
আমার আকাশ ছোঁয়া হল না আজও ।

পুকুরে যাওয়া ঠেকাতে ঘুঙ্গুর-বাঁধা পা দৌড়ালো ম্যারাথন
হাওয়া গাড়িতে পাড়ি দেই আকাশ; ছোঁয়া হলো মেঘ
স্বপ্নের নীলাকাশ দূরে চলে যায় বার বার !

হুগলী-তলে খেলেছি বর-বধূ পাটসোলার ঘর
কোরমা-পোলাউ, পান-চিনি খেয়েছি মিছেমিছি
মিছেমিছি আর কানামাছিতে উড়ে আজ জীবনের খেলাঘর।

আমারও প্রেম ছিল একদিন
আজ তুমি সুমেরুতে আমি মেরুদণ্ডহীন
মাঝখানে সুবিশাল অনন্ত আকাশ।

দুর্বাসামন-প্রিয়তম

প্রেয়সীর বিদায়ের সাথে নবদ্বারের হাহাকার
গগনস্পর্শী বিরহকে হার মানায়;
"প্রিয়া, তুমি কাল এসো আরেকবার"।

ষোড়শী উপলভ্য গোলাপীহীরা অনামিকায় নাড়ে;
আর--
মুহুর্তে আলোকবর্ষ পার করে করে--
পরিনীতা বহুড়ি হবার স্বপ্নে হয়ে যায় নিরুপমা;
হিমালয়ের চুড়ায় দৈবী-বাসরে
এলিয়ে দিয়ে দিয়ে তৃষ্ণার্থ শরীর,--
প্রিয়া চলে যায়।

শিরায় রক্তের ঘষাঘষিয় বিজলী চমকায় যেন;
দূর্বাসা মন কৃষ্ণচুড়ার ডালে ডালে খেলে চিকুত কুত।

"আমার বাসার কাজ করে দিবি চল,
ভিক্ষা আর চাইতে হবেনা তোরে।"
নিদাগ-প্রিয়ার চিত্তজয়ী প্রেমিকের মনে ভেসে উঠে গণিকালয়!

সময় সাক্ষী হতে থাকে সময়ের;
বালিকাদাসীর উলঙ্গ শরীর দেখে,
লজ্জায় মুখ লুকানোর বিকল্প আশ্রয় খোঁজে সারারাত--
ঘরের কোনে কোনে বেড়ে উঠা মাকড়সার দল!
বিছানার ছোপ ছোপ এ কিসের রক্ত,
বিগলিত মশার না মূমূর্ষ বালিকার!

বেলাল্লার তাতে কি,
মাছি তো উড়ছেই,--
ডালে ডালে বউকথাকও ও তো ডেকে চলেছে নিরন্তর!



_______বিকাল

আবার সেই অগোছালো কথামালা

আমি থাকি সেই পুরাতন বট গাছের মতো কেউ আসে ছায়া নেয় কেউ বা ডাল ভেঙ্গে নিয়ে যায়, আমি ঠায় চেয়ে থাকি অজানা কোন পথিকের জন্যবদলের খেলায় সবাই বদলায় আমি ও সং সাজি বার বারহোক সে নীল কিবা লাল অথবা কালো আমি যে এক রঙে থাকতে চাই

তেষ্টা আমার হৃদয় জুড়ে বৃষ্টি কোথায় বলো?
কান্না জল তিক্ত ভীষণ চাই আমি শ্রাবণ!
হয়তো ভাবো বেশ আছি আমি হাসছি ভীষণ জোরে,
কান্না কে আমি বদলে নিয়েছি হাসির ভিন্ন রূপে!
ছেড়া জুতা দেখো উশখুশ মুখ দেখা যায় তাই দেখো
হৃদয় আমার ধনবান কতো দেখেছো হৃদয় দিয়ে?
একা আছি আমি ভীষণ একা আমার জগতে আমি
সকল ব্যথা জানে আমার শুধু অন্তর্যামী!
তারি তরে ডাকি ডেকে ডেকে বলি বোধহীন করো আমায়
যতটুকু পেয়েছি তাতেই যেন তৃপ্ত হয় হৃদয়।।


_______মাজারুল ইসলাম(রুবেল)

আদৃত কথামালা

পগারের জলীয় আদরে মীনাক্ষীর আকুলতা কিংবা
ঘাস ফড়িং এর দ্বিধাহীন রংধনু ডানায়
চপলা বালিকার নিবদ্ধ নেশাতুর দৃষ্টি
বিমোহিত করে আমায় ....
কচি সবুজ কচুপাতার অবুঝ শরীরে
অকুতোভয় অহংকারী শিশিরের উল্লাস;
গৃহ দ্বারে মোড়া পেতে মৃত্যুমুখী জরাগ্রস্থ চোখে
প্রলম্বিত উত্তাপের আকাঙ্খা অথবা
ক্ষণজীবী পতঙ্গের মৃত্যু - বিস্মৃত উদ্দীপক শব্দ
আপ্লুত করে আমায় নিশিদিন

রাশি রাশি সঞ্চিত মৃন্ময়ী সুখের সূক্ষ্ম অনুভবে
বিদীর্ণ করবো ঋণাত্মক প্রাচীর
তোমার হৃদয়ের পুঞ্জীভূত প্রেমে
রচবো আদুরে সকাল....
প্রিয়তম, তুমি শুধু পাশে থেকো আমার
টিন চালা মৃত্তিকা গৃহ কোণে ঘিয়ের প্রদীপ চেলে
রাঙ্গাবো বাসর,এক জীবনে আর কি লাগে বল?
অনাড়ম্বর জীবনে সপ্ত বর্ণ ছড়াবে বকুল বিকেল
কথা দিলাম....
আবেগি নিমগ্ন রাত্রি তে নিস্তব্ধতার চাদরে জড়িয়ে
উষ্ণতা দেব অন্তহীন
স্বপ্ন -প্রসূত মায়াবী জোছনায়
তোমার বুকে চিবুক ছুঁইয়ে বলবো আদৃত কথামালা
''ভালোবাসি , ভালোবাসি , ভালোবাসি ''



_________অনিলা জামান

আমি অনিলা বলছি ...

রৌদ্র আর বিষণ্ণ মেঘ কি তবে এক সুতোয় গাঁথা ?
যদি না ই হয়...
মধ্যাহ্নের কিশোরী কাব্য কেন নিমগ্ন রাত্রি তে
এমন অচেনা ঠেকে ?

কবিতার মৃত্তিকায় আকণ্ঠ ডুবে থেকে
হাসি ছন্দে, সুলতা সুখের চাদরে
নিজেকে আবৃত রাখা কি তবে অভিনয়?
আরোপিত নির্বাসনের আঁধারে সাঁতরে বেড়াই
তবু আলোর তৃষ্ণায় উঁকি দেই
তোমাদের হাসি কথা-মেলায়....
বাড়িয়ে দেয়া হাতে আস্থা পায়না কেন মুমূর্ষু মন?

সভ্য নাগরিকের নামে,বেশে যে দানব
শতছিন্ন করেছে সঞ্চিত জীবন গাঁথা
তোমরা প্রত্যেকেই তাঁর সমরুপ নও জানি
তবু বারেবারে আনন্দ আয়োজনে শঙ্কিত হয়ে
অভেদ্য শামুক দেয়ালের গর্ভে লুকাই হৃদয় ?

ওহে সতীর্থ সকল!
আমায় স্থান দাও তোমাদের মাঝে
তোমাদের ছন্দে গানে সুরে আমৃত্যু
যাপন করতে দাও জীবন
বুভুক্ষু ফুসফুস ভরে নিস্কলঙ্ক বাতাস দাও
এক টুকরো অকপট বাতায়ন ছাড়া আর কিছু চাইনা
গচ্ছিত আলোয় আলোকিত হতে দাও আমায়
আমি তোমাদের ই একজন
হাত বাড়িয়ে দাও....

কপালপোড়ীর চিত্ততৃপ্তি

কপালীর ধানক্ষেতে আগাছা নিড়াতে গিয়ে
গ্রীষ্মের খরতাপে--
ত্বকের যত্ন বরাবরই ম্লান অর্থের মুল্যমান স্ফিতির নিকট;
ক্ষুধার সাথে যুদ্ধ করে করে---
শ্বেতস্রাবও শুকিয়ে গেছে;
উদরের চেয়ে লিঙ্গের ক্ষুধার আধিক্য যার স্বামীর,
বিছানার প্রশান্তি কি ভাবা যায়,
সেই কপালপোড়ীর!

ক্ষুধার অর্চনার উপাচারের ঘাটতি যেখানে,
কোন প্রভু
(যাকে সর্বস্ব সঁপে দেয়া যায়)
ছিনিয়ে না নেয়ার আগে,
অশান্তির দাবানল নিভাবে কি দিয়ে, কপালপোড়ী!

তবুও আছে চিত্ততৃপ্তির অলংকার,--
ভিক্ষুকে ভিক্ষুকে ভিক্ষার যাচাযাচি।


_____বিকাল

পর্যটক কথকতা

undefined



অলীকদৃশ্য অগণন


যা সমাপ্ত হয়েছে তা আজ বহুদূর
আরো দূরে চলে যাচ্ছে প্রতিদিন,
হাঁটা পথ ফেলে যাচ্ছে গরান, শিমুল সারি, সারি
উচাটনে এড়িয়ে যাচ্ছে পিছুটানে ভারী হওয়া
ফুলে ফেঁপে ওঠা অভ্যর্থনার ঋন।

এতো অভ্যর্থনা!
নিস্প্রয়োজন,
বায়োস্কোপের রঙেই অনেক নেশা জাগে এখন
তাড়িত হই ব্যাসবিহীন বর্ধিত পরিধিতে
হাঁক ছেড়ে ডাক দেয় স্তুপাকারে জমা হওয়া
অলীকদৃশ্যগুলো অগণন।

অলীকদৃশ্যই বটে-
বিচ্ছিন্ন ক্ষনে বিচ্ছিন্ন ভ্রমনের কাহন
রূপকীয় কাহিনীর বর্ধিত কলেবর হয়ে ওঠে
জৌলুসহীন, কিম্ভুতকিমাকার
দিনকে দিন যে হারিয়েছে আকার।

ইদানীং ভুলগুলো ফিসফিসিয়ে কথা বলে আমার সাথে
ইথার ভাসিয়ে আনে তার সারমর্ম
খন্ড খন্ড চিত্রে ভাসে সূচনা ও বিবরণ
উপসংহারে বিখণ্ডিত হয় ঘোর লাগা
এলেবেলে, যুক্তিবিহীন, অকারন।

ভাবছি, এখানেই থামাব অরোরা রথ
সৃষ্টি করবো নূতন এক ভৌগলিক অবস্থান
পায়ে পায়ে জড়ো হবে পতঙ্গেরা সব
প্রত্যাখ্যাত প্রহরে, বহমান দিনে
হবেনা আর কোন মৌন প্রস্থান।

ভাবনার গিরিপথে আসর জমাবে ঋতুদের উন্মাদনা
গলে যেতে থাকবে জমে থাকা হিমবাহের ক্ষোভ
হিমায়িত দ্বীপে শুরু হবে সৃজনের উল্লাস
ফোঁটা ফোঁটায় হবে শুরু তরঙ্গের জোঁয়ার
অত:পর, ভেসে যাবে বর্ধিত দুয়ার।

একসময় অসমাপ্ত পথের কথা ভুলে যাই
অথবা ভুলে যেতে বাধ্য হই
জর্জরিত প্রশ্নবাণে চুপচাপ বসে রই।

আমার যে এখন কাঁপে দেহ

আমার আদিম প্রাণের লুকোনো প্রাসাদের
অঙ্গের সুষমা ভেদ করে,
প্রণয়ের মানবী এক
উঁকি দিয়েছিল,
বিমূর্ত বোধের দেহ ছেদ করে
বলেছিল, বাসবে ভাল
বাসে নি সে ।
প্রণয়ের উত্তাপে তপ্ত হয়ে
যুবতী এক বলেছিল
ভেজাবে দেহ,
অস্থির করপুটে প্রণয়ের জল নিয়ে বসেছিলাম
ভেজেনি সে ।
হেলে পড়া জীবনের বাঁকে
সতীত্বের শাঁখা হাতে
রমণী এক ইশারায় ডেকেছিল
আমার যে তখন কাঁপে দেহ
প্রণয় প্রাণের তাপে দেহ
একাকার হয়ে পুড়েছিল ।

Thursday, February 9, 2012

নির্ঘুম রাত্রির কথন

প্রতিশ্রুতি বাণে বাসন্তী আযানের ধ্বনিতে
আঁচড় দিয়ে রক্তাক্ত করবোনা এই আহ্নিক
প্রতীক্ষার প্রহরের উষ্ণতা ;শূন্য পাথরে
চাপা পড়া এক যমুনা যন্ত্রণা ছাপিয়ে সহস্র
বসন্তে আকাঙ্ক্ষিত কৃষ্ণচূড়ার ডালি সাজাবো
সন্যাসী জটের রুদ্রাক্ষর মালায় ;কিংবা কিছু
আধ্যাত্মিক স্বপ্নের অপ্রাপ্তির মরীচিকায় ;এমন
অসত্যের সরোজিনী কুহকে আর নয়
কচি কিশলয়ের অভ্যর্থনা উৎসব ।

অজ্ঞাত কোন শৈত্য তাণ্ডবে হয়তো
বিস্মৃত হবো এবারের পূর্ণিমার মাঘী প্রেম;
বাস্তবতায় কবর দেওয়া আসক্তির নবনী
মালায় স্বয়ম্বরা হবেনা বাহু বিক্ষেপ ;
শুধু নির্দ্বিধায় বলতে পারি, এবার ফাগুনের
পলাশ আগুনে কাঁচাপেড়ে শাড়িতে রক্ত
পাপড়ি গুনে দগ্ধ করবো একুশের যৌবন ;
অনিন্দ্য ...এবার সব বাসন্তী রঙ , লাবণ্য
স্পর্শ; নিষ্পাপ নৈবদ্য সুরের অঞ্জলি তোমায় ।


__________পাহাড়ী

আমার তুমি

এক গ্লাস অন্ধকারে
ভালবাসার নীল রং ঢেলে দেখ
আমি সেখানে কিছু দেখতে পাইনা অন্ধকার ছাড়া
পাতার পর পাতা উল্টিয়ে পাই
পুরনো জং পরা আসবাব , নক্তচর ঘুনের উল্লাস
আর ব্যার্থ খোড়াখুড়ির অপপ্রয়াসে কালসীটে পরা দেহের আর্তনাদ |

অপাংক্তেয় কোন কোন রাতে যে কি হয়
চোখের মুজরা,গিলটি বালার ঝংকার
রাতের মৌনতাকে খান খান করে শোনায় সুমধুর শীত্কার
উন্মনা অধরপল্লব ইন্দ্রজালের মালায় আটকে থাকে অহর্নিশ
আর ইন্দুমুখী আমি গন্ধলিতে ডুবতে থাকি বিবাগী জোত্স্নায় |

থমকে থাকা সময় যেন নড়েই না
ক্রেন দিয়ে টেনে হিচড়ে ও তাকে যেন উপড়ানো যায়না
পোষা বেড়ালের মত গন্ধ শুঁকে শুঁকে কি করে
যেন ঠিক হাজির হয়ে যায় বেড রুমের ওম নিতে
নাইটিংগেলের সুরে গালের টোল যেন
আরও বেশি করে মেতে উঠে শৈশবের পাগলামিতে..........

_______মেঘলা_দুপুর

তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে শিখেছি

তোমাকে হারাবার ভয় আমাকে তাড়া করে না
তোমার অভিমানী সুর আমাকে আর কাঁদায় না
তোমাকে না দেখার হাহাকার আর চোখের ক্লান্তি বাড়ায় না
কথোপকথনের তোমার চুপ করে থাকাও আর ভাবিয়ে তোলে না
তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে শিখেছি....

স্বপ্নেরা আর আড়মোড়া দিয়ে উঠে না
জাগায় না মনে নতুন সুর
ব্যথিত হৃদয়ে দোলা দেয় না তোমার প্রিয় মুখ
অপেক্ষায় থাকিনা মুঠোফোনের বেজে উঠায়
থাকিনা কোন যন্ত্রের ডাকবাক্সের পত্রের প্রত্যাশায়
তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে শিখেছি....

সময়ের আবর্তে নিজেকে জড়িয়ে সকল ব্যস্ততায়
হাসিমুখে করে যাই গল্প করে যাই সুখের অভিনয়
মিথ্যের মুখোশে মাতিয়ে রাখি জগত রঙ্গমঞ্চ
জানি এভাবেই কেটে যাবে দিন, নিঃসঙ্গতায় কাটবে রাত
ভালোবেসে একদিন নিথর হবো তাও তোমায় দেব না অপবাদ
তবুও বলবো তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচতে শিখেছি....

_____________সপনের ফেরিওয়ালা

আবেগ নয় !

নাগালের বাইরে না তোমার খুব কাছা কাছি ছিলাম
নিজকে প্রস্তুত রেখে ছিলাম তোমার মত করে
কপালের নীল পরনে শাদারেশমী মুখে সদা হাসি
তোমার জন্য আমার এআয়জন ছিল; ছিল তীব্র আশা
হেয়ালীর চলে চলে ঢেউয়ের তালে তালে
তোমার সঙ্গী হয়ে চলে যেতাম
ভাঙ্গা নৌকার পাটাতনে বসে সে পায়রা নদীর বাঁকে বাঁকে
কত স্বর্নালী বসন্ত ফাগুন তোমায় দিলাম
বিনিময়ে কি পেলাম!ভুল করে ও হয়নি বলা ভালোবাসি
বুজতে পারার আশায ছিলাম
তুমি নাটাই ছাডা ঘুড়ির মত রঙিন আকাশে অবাধ বিচরন করেছিলে
আমি প্রতিক্ষায় ছিলাম নীড়ে ফেরা হবে তোমার
হয়নি ।আর কোন কালে হবেনা; এ আমার হৃদয়ের সবুজ আবেগ নয়
কিছু ধব ধবে নীল সত্যর সাজানো কষ্ট নদী।

প্রিয়তমা .........

প্রিয়তমা, মনে রেখো না তুমি
অতীতের সেই সব সোনালী স্মৃতি
হৃদয়ের আঙিনায় ভালবাসার শেষ সীমানায়
খিল দিতে পার উৎসবহীন রাতে
এই জৌষ্ঠের দুপুরে আমার শান্ত বুকে
কালবৈশাখীর তাণ্ডবলীলা চালিয়ে
মুক্তির আনন্দে হাসতে পার তুমি
তবু ভুল করে যদি মনে পড়ে আমায়
উদাস চাহনীতে বৃষ্টিস্নাত রাতে
ব্যালকনিতে দাড়িয়ে বৃষ্টির মিউজিক প্লেয়ারে
অনুভূতির ক্যাসেট বাজিয়ে শুনে নিও
``তুমি যে চিরকাল রবে মোর প্রাণের চেয়ে প্রিয়।``

তোমায় ভাবি।

undefined
সবার ভাবনায় নয়,
শুধু যখন তোমায় ভাবি মায়াবিনী
মনের গহীনে সাড়া পড়ে যায়।
ভাবি তোমার মুখ,
আর অবিরাম বেজে যায় তোমার কণ্ঠস্বর
আমার মনের-ই গহীনে।
তুমিহীন তোমায় ভালবাসি,
তুমিহীন তোমায় মিশে যাই।
জানি,জানি এ ঠিক প্রেম নয়
আমার কল্পনা,
হে- মায়াবিনী।।

__________সাজ্জাদ হসাইন ধুসর

মেঘবালক , তুমি শুনছো তো !

জানো ?তোমাকে খুব ভালবাসতে ইচ্ছে করে
অনিন্দ্য প্রহরে বেলি ফুলের মালা গলায়
ছুটে যেতে ইচ্ছে করে তোমার কাছে!

নূপুরের খসে যাওয়া ঝুনঝুনি টা তোমার বুকে রেখে আসবো
ঝংকৃত হবে অহর্নিশি অমিয় অনুরাগে।

আমার হাত দুটো বন্দী হওয়ার বায়না ধরেছে ভীষণ
তোমার শক্ত মুঠোয়
যে নতুন স্বপ্ন রচিত হয় পরলৌকিক রঙে
সে অসংজ্ঞায়িত জগতে কোন কাগজ থাকবেনা
কথা দিচ্ছি!
থাকবেনা অতীতের ঘুনে ধরা মন, মৃত্যু আয়োজন!

মেঘবালক!
চলনা দুজনে নির্বাসিত হই নীলকণ্ঠ ভুবনে
প্রজাপতির উড়ন্ত নকশায় শুদ্ধতা পাক
গভীর রাতের শঙ্কিত শিহরণ ;
কারামুক্ত হোক চার অক্ষরের আদরে গড়া শব্দ !
তোমার বাহুতে অপরাহ্ণে সমর্পিত হতে হতে
বলব ''মেঘবালক, ভালবাসি তোমায়''
লাজুক শব্দেরা আমার কণ্ঠ না রাঙ্গালে
বুঝে নিও না বলা কথা..
তারপর...
পাপ পুণ্য 'র ব্যবচ্ছেদে প্রজন্মান্তরে
সঞ্চারিত হবে যুগল প্রেমের প্রাচুর্য....
মেঘবালক, তুমি শুনছো তো !

____________অনিলা জামান

Saturday, February 4, 2012

তুমি জানবে না কোন দিন

undefined
বিদায়ের রাতে আকাশ অনেক কালো ছিল
গুমোঠ কালো মেঘে ছিল ঢাকা!
দমকা হাওয়া বার বার এসে ভিড়িয়ে দিচ্ছিল
দক্ষিণের জানালাটা।
বৃষ্টির ঝাঁপটা এসে ধুয়ে দিচ্ছিল অশ্রুজল।
তাই আমার কান্না তুমি দেখনি।
দেখেছ শুধু অভিমান।

আমি শুনেছি তুমিও নাকি অনেক কেঁদেছ।
বার বার আমার নাম ধরে ডেকেছ।
তবু আমি ফিরে আসি নি।
আমি যে ফিরে আসতে পারি নি।
বলতে পারি নি তোমায় ভালোবাসি!
কোন এক অজানা আত্মাভিমান
আমায় আকড়ে রেখেছিল।
তাই অতৃপ্ত বেদনা নিয়ে অজানার পথে পাড়ি দিয়েছি।

না বলা অনেক কথা ছিল।
জানি আর কোন দিন বলা হবে না।
কোন দিন ভেজা হবে না ভালোবাসার ওই ঝর্ণা ধারায়।
অমন আবেগাপ্লুত সন্ধ্যা আর আসবে না।
আসবে না নয়নাভিরাম মিষ্টি বিকেল।
শুধু দু'চোখে জল আসবে জানি।
ঝরে পড়বে সবার অগোচরে।
তুমি জানবে না কোন দিন......


________
মৃন্ময়ী

Saturday, January 21, 2012

নিভৃতে

তুমি কখনো জানোনি
তোমার প্রতি আমার ভালবাসা
বুকের একটি নিদিষ্ট স্থানে জন্ম নিয়ে
স্থির তরঙ্গের মত সেখানেই থেমে গেছে
নিরবে, নিভৃতে ।

জেনেছি শুধু আমি, আমার অস্তিত্ব,
আমার প্রতিটি রক্তবিন্দু সহ্য করেছে
সেই থেমে যাওয়ার কষ্ট ।

হৃৎপিন্ডের চলাচল ব্যাহত হয়েছে,
হয়েছে রক্তক্ষরণ ।
তুমি জানতেও পারোনি,
জানবেও না কোনদিন ।

বাস্তবতায় উদভ্রান্ত আমি, আর আঁচড় কেটো না....

তোমার নিঃসঙ্গতা কি দুর হয়েছে? প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে!
মনে আর কোন শব্দ নেই এবার মনে হয় বদলে যাচ্ছি
অভিনয় করতে পারি না,
শব্দো বর্ণের আঘাতেও আমার ভীষণ কষ্ট হয়।
তোমার স্বপ্ন ভঙ্গে নয় বরং নিজের কারণেই
নিজের চাওয়া গুলো কে প্রতিদিন নিজ হাতে হত্যা করে
তারপর নিজ হাতে কবর খুরে দাফন করতে করতে ক্লান্ত আমি।
তোমাকে আনন্দে থাকতে দেখলে আমার কষ্ট হবে না
তোমাকে আমি কখনো পেতে চেয়েছি বা চাইনি
এ নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্ব থেকে মুক্তি আমি পাবো কিনা জানি না।

ভালবাসি তোমার সবুজ মনটাকে, বঞ্চিত কষ্টকে,
আমার ভেতরে সবুজের চাষ করি;
তাই সবুজ বিবর্ণ হতে দেখলে কষ্ট পাই,
তোমার অতীত কষ্ট ইতিহাসের সব ক'টি পাতা যদি-
আমার সবুজ কান্না দিয়ে ধুয়ে দিতে পারলে প্রজাপতি হতাম,
অকূলপাথার ভালবাসা তোমার জন্য কান পেতে উচ্ছ্বাস শোন
জেনে রাখো অক্ষতা আমার ভালবাসার মানদণ্ড নয়;
বাস্তবতায় উদভ্রান্ত আমি, আর আঁচড় কেটো না....

জানো !

কিছু বিমুর্ত স্মৃতি দিয়ে
তাসের ঘর সাজাই নিয়তই
কাশফুল ছোঁয়ার সামান্য অনুভূতির
বিশাল উপলব্ধি নিয়র পার করতে পারি সমগ্র
যৌবন ,জানো তুমি !

আকাশের নীল ধার করে মেটাতে পারি
তোমার শাড়ি দেখবার অর্বাচীন ঋণটুকু ।
জানো না তুমি! বেদনার সুখ দিচ্ছি
এক যুগ থেকে !

জানো নি তুমি ! ভালোবাসি শব্দটা না শুনেও
ভালোবাসা শব্দটা তুলে রেখেছি তোমার জন্য ।
হা হা হা আমি এখন অট্টহাসিতে ভাঙ্গতে পারি
কতগুলো বিলাসী বয়াম
এটাও জানলে না তুমি !

জ্যোৎস্না ও অগ্ন্যুৎপাত

তোমার ফর্দ গুনে গুনে আমি শুদ্ধ হবো ।
গণনা-হীন বলি দেব এক একটা স্বপ্ন
মন্ত্র আর আরতির মাঝ খানে ।
জীবনের জঙ্গল-গন্ধ অন্ধকারে -
সুখ বিসর্জনের তুমুল উল্লাস ।
জেনে রাখ ! ভালোবাসি ।

স্মৃতির লম্বা পেরেক ঠুকে ঠুকে
শুয়ে থাকি রক্তপাতের ভেতর ,
দিকপাল ক্ষমতা-লোভীদের মতন
প্রতিযোগিতা নেই দখলদারিত্বের ,
জ্যোৎস্না ও অগ্ন্যুৎপাতে আমি সমান্তরাল
জেনে রাখ পুরুষ ! ভালোবাসি ।

পাঁজরের খোঁয়াড়ে নিত্যই গুপ্ত হত্যা
নিত্যদিন প্রগলভ নির্বাসন নিজেকেই ।
না আমি লা দিভিনা কোম্মেদিয়া জন্যে -
দান্তের নিজ রক্তে ডুবে থাকা কলম !
কিছুই দেবার নেই তোমার ...দীর্ঘ অপ্রাপ্তির অন্ধকার !
জেনে রাখ ! ভালোবাসি । ।

Friday, January 20, 2012

কষ্টের দিন গুলি

তুমি কি জানো কষ্টের দিনগুলো কতটা নির্মম ?
সময় থমকে যায় দুৎখরা ঘিরে রাখে হরদম
জীবন জড়ায়ে ধরে বিষধর কালপণী
সময়ের ট্রেন চলে বিয়গলের সুরে বয়ে নিয়ে গ্লানী।

জীবনে নেমে আসে অদৃশ্য কুয়াশার জাল
নিঃশ্বাসে বিশ্বাসে মৃত্যূ নেমে আসে ভেঙ্গে যায় হাল
আলোর পথ সেযে কত দূর ডানা মেলে পিপিলিকা
অন্ধকার গিলে খায় এক জোড়া চোখ লাগে বড় একা।

আকাশ হারায় মঘের কাছে মেঘ নামে বৃষ্টি হয়ে
এক ফালি চাঁদ জোত্ছনা হারায় ঝরে পড়ে ক্ষয়ে ক্ষয়ে
যে জীবন সঁপে ছিল বিশ্বাসে ভালবেসে বেঁধে রাখি
সে ভালবাসা টেনে নিয়ে যায় মৃত্যূর দুয়ারে ডাকি।

প্রেমের দেবী প্রেম দাও মোরে শত প্রাণ আজ রাঙ্গাতে
লৌহ মানবীর পাষাণ বুকের হৃদয়ের দ্বার ভাঙ্গাতে
আজ সব নিষিদ্ধ প্রাণে প্রেমের আলপনা দেব এঁকে
যুগে যুগে সব কবিরা এ প্রেমের জয় গান যাবে লিখে।

নীল তারা

তুমি যেন বহু দূরে এক নীল তারা
বারবার ডেকে যাই,নেই কোন সাড়া
তবু ঠিক রোজ রাতে আঁধারের মাঝে
তুমি মোর শাহজাদা অপরূপ সাজে
চোখে ঢালো আলো সুধা সেই দূর থেকে
অমলিন সুখ পাই এতটুকু দেখে!
তবে যদি কোনদিন মেঘে ঢেকে যায়
ফাঁকা বুকে সাদা বিদ্যুৎ চমকায়
জেনো প্রিয় দূরে এক কিশোরীর বুকে
সেই ক্ষণপ্রভা কাঁপে অনিমিখ দুঃখে
মাঝে থাকে একরাশ গম্ভীর মেঘ
নিদারুন বিষাদিত তপ্ত আবেগ!

লাশ হয়ে ঝুলে থাকি

লাশ হয়ে ঝুলে আছি, হৃদয় ক্ষত বিক্ষত
জীবন সোপানে, ভালবাসার সমুদ্রে ব্যার্থ,
হৃদয়ের আকুতি দিয়ে চেয়েছি তোরে আপন করে
সে স্বপ্নমালা তো মুকুলেই গেছে ঝরে।

স্মৃতির পৃষ্ঠা যেন এক একটা রাত
সে পৃষ্ঠার বুকে থাকে শুধু তোর পদাঘাত,
কল্পবিলাসী আমি, স্বপ্ন ভালবাসি
লাশ হয়ে ঝুলে থাকি ভালবাসার দেয়ালে
যদি ফুল হাতে আসিস তুই আপন খেয়ালে
আজো বুঝতে পারি না তুই কি? শুধুই কল্পবিলাসী??

ভালবাসার এক রঙ্গা ঘুড়ি হয়ে উড়িস তুই নীল বিষাধের আকাশে
কোন সে গরল ছড়িয়ে দিলি তুই আমার বাতাসে?
যে অমৃত সুধা পানে আমি হই বিষে নীল
তুই তো ভাল থাকিস! কত না সাবলীল!
তবে কেন আমি ভাল থাকবো না বল??

আমি তো চেয়েছিলাম ভালবাসার এক রঙ্গা ঘুড়ি হয়ে উড়তে
আমি তো চেয়েছিলাম তোরে জ্যোস্নাতে ভিজাতে
আমি তো চেয়েছিলাম যাব তোরে নিয়ে জ্যোস্না স্নানে
আমি তো চেয়েছিলাম ভালবাসা দেব তোর মনে
আজ আমি ক্লান্ত। খুব ক্লান্ত অশ্রু ক্ষরণে
কেন তুই ফিরে আসিস বার বার স্মরণে
তুই তো ভাল থাকিস! কত না সাবলীল!
তবে কেন আমি ভাল থাকবো না বল??

প্রাপ্তি

চলে যাবার সময় হটাৎ তোমার পিছু ফিরে তাকানো ...
স্পষ্ট দেখতে পেলাম তোমার প্রাপ্তি ... চোখেঁর কোনের চিকচিক জল ।
আর ঘুটঘুটে অন্ধকারের সাথে মিশে যাওয়া তোমার চুল ...
আমাকে নিয়ে গেল দুর থেকে দুরত্বে।
কখনোই অনুভব করি না ...
কষ্টগুলোর অবাধ বিচরন ... যেন তন্দ্রাচ্ছন্ন আমি...
দু'চোখের কোনে জলের অস্তিত্ব নির্বাক...
তাই এখনো খুজে বেরাই ... আমার প্রাপ্তি ।

( গতকাল তোমার মন খারাপ ছিলো ...
যখন শুনলাম ... বুকের ভেতরটা দুমরে মুচরে উঠলো... মনটা তখন থেকেই খারাপ ... মনে হচ্ছিল তোমার মন খারাপের দিনে আমি কেন সেচ্ছাচারির মত ভাল ছিলাম ... তোমার কষ্টটা কেন খোদা আমাকে দিলেন না ...
তোমার মুখের একটু হাসির জন্য আমি হয়তো বিশ্বসংসার তন্য তন্য করে ১০৮টি নীলপদ্ম খুজে আনতে পারবো না ...তবে তোমার মুখের একটু হাসির জন্য রাতের পর রাত ঠায় দাড়িয়ে থাকতে পারবো ....
কোথায় ?
কোথায় আবার ..
জায়গাটা কোথায় বলনি তো এখনো... )

জোনাকি তুমি নেই

তুমি নেই তাই আমি ভালো আছি
আরো কাছাকাছি তুলো মেঘেদের ঘেষাঘেষি গা
ঘাম মেখে নেওয়া ফিরিয়ে দিতে কেউ নেই আর
তুমি নেই তাই করি চিৎকার
ভীষণ খুশিতে তিনফুট লাফ,বৃষ্টির দলে এলোমেলো নাচ
শহরের সব সাদা মেয়েদের চেয়ে চেয়ে দেখি ইচ্ছেমতন
সুযোগ পেলেই রিক্সা আরোহী বড় আপুদের চোখ টিপে দেই
বুক টিপে দেই লোকাল বাসের ব্যস্ত সুযোগে
যা ইচ্ছে তাই লিখতে পারি-বিবেচনাহীন অর্থছাড়া
শ্রাবণের শেষ বাদল ধারায়
ভিজি না এখন;ঘরের ভেতরে কাঁথামুড়ি দিয়ে
প্রবল অলস,ল্যাপটপ খুলে সাদা রমণীর অঙ্ক দেখি
শিল্পের কলঙ্ক দেখি

তুমি নেই তাই রাত হলে কোন ব্যস্ততা নেই
সুযোগ পেলেই
নেটে চ্যাটে বসি খুব সুইট সুইট ছোট আপিদের
সুযোগ পেলেই
খাতা খুলে গুনি দুই তিন তিন-চার দুই এক
তুমি নেই তাই জুতোর ভেতরে জেগেছে পেরেক
দুপুর রোদের এলোমেলো হেটে,কাগজ অফিস
প্রেসের দোকান,সম্পাদকের রাগী ফ্যন্টাসি-মরে গেছে সব।

তুমি নেই তাই তোমার বুকের তীর্থে আমার
মুখ রাখবার অধিকারহীন সময় আমাকে স্বস্তি দিয়েছে

তুমি নেই তাই কোন দায় নেই
দায় এড়াবার কোন বাহানা,বাজে অজুহাত
একা জেগে থাকা বিচ্ছিরি রাত
হঠাৎ হাওয়ায় উড়ে গেছে দূর কর্পুর হয়ে।

তুমি নেই তাই অনেক প্রিয় নিকোটিন চুমু
ইচ্ছে মতন ঠোঁট রাখে ঠোঁটে
লাল লিপস্টিক,লাল ল্যাম্পপোস্ট
ভীষণ সোহাগে মাঝরাত প্রেম একা জেগে উঠে
খুঁজে বের করে খুচরো কয়েন,ব্যবসায়ী লো
খুঁজে বের করে সস্তা বোতল,একলা মাতাল
খিস্তি-খেউর,অশ্লীল হাসি
আর কারা যেন মুঠো করে ভাঙে কাঁচের চুড়ি;-স্বপ্নবদল,
গাঢ় তৃষ্ণায় গলায় ঢালে প্রিয় ফেলিডল!।।


____________-ভুতের আছড়

Sunday, January 8, 2012

কত রাত মদির হইছি~

আসমান জুইড়া যে চাঁন রুপে ঝকমক করতাসে
তার চেয়েও আরো বেশী উজ্জ্বল ঝকমইকা
চুমকী আলো ছড়াইছোস তুই আমার মনে
আমার মনে সারা দিবানিশি জ্বলে এই আগুন
আমি পুড়ি – পুড়ি
আবার পুড়ি,
তবু শুধুই পুড়তে ইচ্ছা করে;
তোর আগুনে পুইড়া মরার স্বাদ হইসে আমার-

তুই যহন প্রত্থমবার শাড়ী পইড়া আইছিলি
দুইজনে নয়াগঞ্জের মেলায় গেসিলাম যেইবার
তহনো এমন লাগসিলো
তোর দিকে চাইতে পারি নাই
মনে হইসিলো সুরুজটা ঠিক মাথার উপর উঠসে
চোখে খালি ধান্ধা;

নদীর ভাঁজে ভাঁজে আমি তোর
গায়ের কামিনী গন্ধ পাই
হেইদিন বেতুসলতার বনে তুই যহন খুব কাছে আইছিলি
ঠিক একই রকম গন্ধে দিনভর মাতাল আমি
কত খেলা খেলি তোর লগে-

________নীলসাধু

Thursday, January 5, 2012

চেয়েছিলাম রোদ্দুর হও...

হৃদয়ের সহজাত লুকোচুরিতে রোদ্দুর হও চেয়েছিলাম ;
সময়ের নীলাভ ঘূর্ণিপাকে তুষার ঝড় হলে
স্তব্ধ পাথর ভেঙে ভেঙে শক্ত সমর্থ ঢেউ হলে
দৃশ্যমান জলরাশি দিগন্তমুখী সমীরণ ছুঁয়ে ছুঁয়ে
সফেদ কাশবনে মৃদু হিল্লোল তুললো কুন্তল রোলে ;
অজস্র প্রবহমান বিভার সঞ্চারী ;
সুষমা মেঘের রূপোলী জল গড়ে গড়ে
অভিমানী দাতাকর্ণ হলে উচ্ছ্বসিত সমুদ্র কোলে ।


চক্রাকারে বাঁধতে চাইলে...

বেলাভুমির নৈশপুরের জলদস্যু হলে
দুর্ধর্ষ শিকারী হলে হরিত বুনো পিঙের ;
তোমার ইচ্ছেমুঠোয় ঝাপাঝাপিতে তার অহর্নিশি
চাইলে অসংখ্য সুরলহরী রিনিঝিনি ঝর্ণা নামাও
স্তব্ধতায় চুপটি করে বসিয়ে রাখো গোধূলিরাঙা চক্ষু নিয়ে;
প্রচণ্ড বাধ্যগত পঙ্খী তোমার; আর
তোমার রহস্যপুরী দুঃসাহসিক সৌন্দর্য দেখে আমি কূল পাইনে ...

___________পাহাড়ী

অপেক্ষা......

undefined


একদিন তোমায় দেখতে গিয়েছিলাম
নির্জন কোন এক জোছনা ভরা রাতে
নির্লজ্জের মত ঘন্টার পড় ঘন্টা দাঁড়িয়ে
তোমার জন্য অপেক্ষা করেছি
তুমি তো পাষানী ছিলেনা !
তাহলে কেন অভিমান করেছিলে ?
তোমার আশায় সেদিন ভোরের রবি দেখেছিলাম
ধলদিঘীর পাড়ে কাটিয়েছিলাম অনেক বেলা
তোমার পথপানে অনন্ত অপেক্ষায়॥


___________জসিমু্দ্দীন মারুফ

'উপহাস..''

undefined

অনেকদিনপর আজ কাদঁলাম্--
নির্বাক চোখে দিগন্তে তাকিয়ে থেকে,
শুধু অশ্রু বর্ষন করলাম!
চিৎকার করে এখন আর কাদঁতে পারি না,
চার বছরের বুনিত স্বপ্নগুলো আজ,এক মুহূর্তের অভিশাপে ভেঙ্গে গেলো।
হাসি পাচ্ছে,নিজের ভাগ্য দেখে পরিহাসের হাসি--
নিজেকে খুব ঘেন্না লাগছে,এতোটা খারাপ আগে কখনো ভাবিনি নিজেকে।
আঠারোতে পা দিয়ে আজ আমি হতবাক!!
কি পেয়েছি নিজের জন্য,কি পাইনি এই ছোট্ট জীবনে..
হিসেব কষতে গিয়ে দেখলাম--
না পাওয়ার পাল্লাটার ভারে আমি মুষরে যাচ্ছি!

এখন আমি জীবন থেকে বিরতি চাই--
হাপিয়ে গেছি,ক্লান্ত হয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ছি বার বার।
এখন আমি স্বপ্ন দেখতে ভয় পাই,
কেউ স্বপ্ন দেখালে মনে হয় আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করছে হয়ত!
হাসি পায়,খুব হাসি পায় নিজের ভাগ্য দেখে!
আঠারোতে দাড়িয়ে পিছন ফিরলে--
সেই ৫/৬ বছরের আমিকে দেখতে পাই,
যে কিনা ছোট্ট ছোট্ট পায়ে আলোকিত করতো ঘর,
যার দু'চোখে ভরা স্বপ্ন শুধুই অনুপ্রেরনা দেয়।
আর সামনে তাকালে বর্বরতায় ভরপুর এক জীবন দেখা যায়,
যে জীবন গ্রাস করে নেয় সব স্বপ্ন!ভয় হয়,ভীষন ভয় হয় আমার!!
আর বর্তমান??হাঃ হাঃ হাঃ হাসি পায়,খুব হাসি পায়
উপহাসের হাসি,নিজের প্রতি ঘেন্না হয়!!


____________ইলা

বাসি ফুলগুলো.....

ফুলদানিতে বাসি ফুলগুলো..
মনে করিয়ে দেয় এই তো সেদিন
ফুলগুলো দিয়ে বলেছিলে.......
হয়ত শুকিয়ে যাবে ফুল,
ঘ্রাণও আর ভেসে বেড়াবে
না বাতাসে।

তবু মনে রেখো এই কথাটি
আমার ভালোবাসা কোনদিন
শুকিয়ে যাবে না, ভালোবাসার
ঘ্রাণও থেকে যাবে চিরকাল
মনে পড়তেই বাসি ফুলগুলোকে
বুকে জড়িয়ে ঘ্রাণ নিতে থাকি.....

________জান্নাতী

কান্না, বৃষ্টি আর একটা প্রজাপতি !

কি আশ্চর্য! তুমি আমাকে মিথ্যে বলেছিলে? তুমি সাদা প্রজাপতি ভালবাসো না?
ওটার শুভ্র ডানার আলতো স্পর্শে তুমি পুলকিত হও না?

আচ্ছা, নিছক এক ডালি মিথ্যে কথার খেয়ায় তুমি আমাকে কেন ভাসিয়ে দিলে? একবারও কি ভেবে দেখছ যে, এই একলা আমি নিঃসঙ্গ তরী টি বাইতে বাইতে অজুত ক্রোশ দূরের কোন সলিল পথের বাঁকে নিতান্তই নিস্তেজ আত্মায় নির্বাক নিরব সুরে নির্মীলিন হয়ে যাবো.. নিরালায় জানবে না কেউ ই !

ইন্দ্রধনুর সাতরাঙা পালক গুলো থেকে বিচ্ছুরিত আলোকের রশ্মি গুলো কখনোই কিন্তু চোখ ধাঁধিয়ে দেয় না.. তারপরও রঙধনুর রূপে নিজেকে রাঙিয়ে তুমি কেমন করে আমাকে গ্রাস করে নিয়েছিলে.. আজও যার সুপ্ত বেদনার সুর হৃদয়ের তানপুরাটায় ক্ষণে ক্ষণে করুণ সুরের মিছিলে বেজে উঠে !

স্তব্ধ এক রাত্রির নিস্তব্ধ মায়ার বুক চিরে হঠাৎ ই তুমি বলেছিলে, “পাশেই আছি”।
কি নির্মম তাই না? এখনও তুমি পাশেই আছ, কিন্তু যার পাশে, সে আমি নই।
শুকনো হাসিতে খিলখিল করে তনু মন তাই উচ্ছ্বল হয়ে উঠতে চাচ্ছে, আচ্ছা আমি কি তাদের বাঁধা দিবো?

অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে তোমাকে পরখ করে নেবার অসম্ভব ক্ষমতা আমি স্রষ্টার কাছ থেকে আদায় করে নিতে পারিনি.. তাই তোমার অন্তরাঙ্গে প্রবেশ করাও আমার আর হয়ে উঠেনি.. বাইরের স্বতঃস্ফূর্ত ভালবাসায় আমি তাই অস্থির হয়েছিলাম.. ভুল করে মিথ্যে মায়ার ধূম্রজালে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছিলাম.. প্রায়শ্চিত্ত কি তবে আমার জন্যই নিশ্চিত নিয়তি !!

হৃদয়ের ভ্রমে ক্রোধ আর উন্নাসিক উগ্রতা না হয় বিসর্জন ই দিলাম.. কিন্তু তোমার মিথ্যে অভিনয় কি কোনদিন ও স্মৃতি থেকে বিসর্জিত হবে?
তুমি জানতে যে আমি সত্যি ই তোমাকে ভালোবাসি, কিন্তু আমি জানতাম না- তুমি আমাকে মিথ্যে ভালোবাসার রাজটীকা পড়িয়ে দিচ্ছো !

তুমি যখন চেয়েছিলে তখন আমি একটা সাদা প্রজাপতি এনেছিলাম তোমার জন্য, ওটা আর তোমাকে দেওয়া হয়নি॥ তুমি কি জান – ওটার ডানা এখন আমার রক্তে অনেক লাল হয়ে গেছে। আমি খুব দুঃখিত, তোমার সাদা প্রজাপতি আর তোমাকে দেওয়া হলো না, তুমি তো লাল প্রজাপতি ঘৃণা করো, তাই না মেয়ে?

____________নিঝুম অরণ্য

Sunday, January 1, 2012

বিবর্তনের পথ

undefined

স্থলচর

অনেক খুঁজেও
কোন রাস্তার দেখা মেলেনা আজ।

কেবলি পথ ভুল হয়ে যায়..
ভুল পথে ধাবমান হই ঝলকানো আলোয়
হুঁশ হারিয়ে ছুটি ত্রস্ত পায়ে
নেশা ধরানো চ্ছটার পিছু পিছু
এক প্যাঁচানো পথে
কাল্পনিক কোন রথে।

বুঝতে পারি, এ জ্বর নয় অন্য কিছু
অন্য কোন শাখাপ্রশাখাময় ভাবনা যতন
ঘিরে আছে ঘোর লাগানো নেশার মতন।

বনভূমে, আমি চলেছি প্রাচীন পথের খোঁজে।
বৈকালিক ছায়ার ছুড়ে দেয়া প্রশ্নের তীরগুলো
সম্ভোগে এক হায়ারোগ্লিফিক্স হয়ে ধরা দেয়
দূরে দূরে উড়ে বেড়ায় অচেনাভাবে
প্রবেশ করতে দেয়না ভেতরে..

বড্ডো আনমনে করে তোলে, ক্বচিৎ দাঁড়ালে
অপসৃয়মান হয়ে জুড়ে বসে ভাবনার আড়ালে।


_______আশরাফুল কবীর

তোমার জন্য...

undefined

আচ্ছা,আমি কথা বলতে গেলে তুমি আমাকে চুপ করিয়ে দাও কেন ......?
উচিত কথা বলি বলে.....নাকি নিস্তব্ধতায় খুঁজে পেতে চাও বলে....?
একেবারেতো মুখে আঙ্গুল দিয়ে,ইশারা করে খুব বলছ চুপ থাকতে....
নাহ,পারবনা চুপ করতে....একশবার কথা বলবো.....
জানি ঘরে ফিরে এলেই রাজ্যের জিজ্ঞাসা নিয়ে এঘর ওঘর করে খুজবে আমায় চোখে এক রাশ আকুতি নিয়ে.....
মুখেতো তোমার কথা ফুটবেনা জানি সেতো আমি ভালো করেই....
খালি পারো আমার সাথেই জেদ দেখাতে...........
আচ্ছা জেদ না হয় কর সে ঠিক আছে.....কিন্তু আমাকে যে ১৫ টা চিঠি লিখার কথা ছিল তা কবে দিবে বলোতো...?
মাত্র তো দিলে ৫ খানা....আরো কি ১০ দিন বসে থাকতে হবে....?
আমি কিন্তু বসে থাকতে পারবনা.....আর কত অপেখ্হা করব বলো...
সারাদিনেত সময় ই দাও না আর রাত্রি তে থাক তুমি ক্লান্ত....
বড্ড ফাকিবাজ হয়ে গেছ তুমি....অলসতায় ও কম যাও না.....
ওহ আরেকটা কথা বলে রাখি.....আমার চুল গুলো কিন্তু দিনে দিনে পাতলা হয়ে যাচ্ছে....বুড়ি হয়ে যাচ্ছি কিনা...
খোপাও করতে পারিনা ঠিক মত....চুলে আটকানো ক্লিপ গলে গলে পরে যায়....
তুমি না বলেছিলে ফুলের মালা কিনে আনবে খোপায় পরাবে বলে....?
দেখো আবার বেলী ফুল কিনে এনোনা কিন্তু.....তীব্র গন্ধে আমার মাথা ধরে যায়...
কাঠালী,হাসনুহেনা হলেই চলবে......ইশ শখ কত গন্ধ নিতে চাও আবার....
কাঠালী,হাস্নুহেনার সুবাসে আমার গন্ধ তুমি আলাদা করে পাবেতো..নাকি বারবার ছল করে বলবে ফুলের গন্ধ আর আমার গন্ধ একাকার হয়ে গেছে....?
ওহ ভালো কথা..তুমি না বলেছিলে গন্ধ নিয়ে তোমার কিসের যেন এক তত্ত্ব আছে তোমার......?
বললেনাত.......বড্ড ফাকিবাজ হয়েছ তুমি....ফসকে ফসকে যাও বারেবারে...

__________মেঘলা_দুপুর