আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥ ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে, মরি হায়, হায় রে— ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥ কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো— কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে। মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো, মরি হায়, হায় রে— মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি॥ তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিলে রে, তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি। তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে, মরি হায়, হায় রে— তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি॥ ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে, সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে, তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে, মরি হায়, হায় রে— ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি॥ ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে— দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে। ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে, মরি হায়, হায় রে— আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ ব’লে গলার ফাঁসি॥ আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। Lyrics by: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর Music by: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Thursday, September 29, 2011

অপেক্ষায় রেখে আমাকে...


এই বৃষ্টি ভেজা রাত আবার ,
ফিরিয়ে এনেছে আমার যত ফিকে স্বপ্নগুলো ,
মাতাল ঝড়ো হাওয়ার বেশে ,
কল্পনার ধুলোপড়া স্বপ্নগুলো ,
এক চমকেই সামনে চলে আসে ।


স্বপ্নভরা দু’চোখে যেন আমার অবাক
কৌতহল ।
আমি অবাক নয়নে তাকিয়া থাকি
তোমার পানে ,

অদ্ভুত সুন্দর লাগছিল তোমার
দু’চোখের পাশে এসে
পরা দুষ্ট চুলে ...!

বারে বারে আনমনে তোমার
আঙ্গুল গুলো পরিচালিত হচ্ছিল
অবাধ্য ঐ চুলগুলোর শাসনে ...!


আকাশটা আজ যেন
ঠিক একই রকম মেঘলা
খানিক পরপরই আলোকিত
হচ্ছে পৃথিবী প্রচন্ড আলোয়


এই বিদ্যুতের মতই তুমি এসেছিলে
আমার জীবনে একদিন
এক ঝলকে।
আর সেই তার মতই হারিয়ে গেছো চিরতরে
অপেক্ষায় রেখে আমাকে।

_______মেহবুব সৈকত

Wednesday, September 28, 2011

প্রশ্ন

সেই মানুষটা তুমি না হলে, জিজ্ঞেস করতাম-
জীবনে কতটুকু শিখেছো তুমি?
অচল মুদ্রা নিয়ে কতদিন পথ চলা যায়,
জানো কি তুমি?

সময়ের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে
কত যুগ সময় লাগে,
আছে কি তোমার জানা?
অভিমানী ক্যাকটাস
কেন তার গায়ে কাঁটা জড়িয়ে রাখে,
জানো কি তুমি?

পিতৃঘাতী শব্দের শরীর কবিতা-
কবি কেন তাকে ধীরে ধীরে বাড়তে দেয়
আছে কি তোমার জানা?
দুঃখ কেন কোনও এক কবির সাথে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে; অথচ বার বার হেরে যায়,
জানো কি তুমি?


কত কোঠি ঠোকর খেয়েও মুনিয়া পাখি
বেদনার আকাশ নীলে আশ্রয় খোঁজে,
আছে কি তোমার জানা?
মানুষ যা ভাবে তা বাস্তবে সফল হয় নি
কিন্তু অদৃশ্য এক কল্পজগতে সম্ভব হয়,
কেন সম্ভব হয়,
জানো কি তুমি?

Tuesday, September 27, 2011

সেই আমি


এইবার চোখ খোলো
দেখো আমাকে
আমি তোমার চোখে প্রেম এঁকেছিলাম
আমি সেই-সেই তোমার আমি
কায়ায়- মায়ায় সেই আমি

দেখো হাত দুটি আমার
আমি এই হাতেই তোমাকে ফুল দিয়েছিলাম
দেখতে পাও? বুঝতে পার?
দেখো আমার নাক-মুখ-আমি সেই তোমার আমি
সেই আমি
দেখো এই দুটো ঠোট
তোমার ঠোটে সুখে অসুখে এঁকেছিলাম প্রেম
মনে আছে?
সেই রাতে-সেই তারাভরা রাতে
সেই নিস্তব্দ রাতে
আমি তোমার হয়েছিলাম-
মনে আছে?
এই তো সেই চুল যে চুলে তুমি বুলিয়ে দিতে পরম আদর
এই তো সেই চোখ যে চোখে তুমি দেখাতে স্বপ্ন
এই তো সেই আমি -তোমার আমি
মনে পড়েনা?
জানি তুমি আর দেখবেনা আমায়
জানি মরে গেলে সবাই চোখ বন্ধ করেই রাখে
জানি তুমি ও তাদের ব্যাতিক্রম নও
তবুও যদি খুলে ফেলো চোখ
দেখবে তোমাকে কোলে নিয়ে বসে আমি
তোমার সেই আমি।

Monday, September 26, 2011

ভালবেসে ছুঁয়ে দাও হাত দুটি মোর


শত শত পথ, সাথে কত শত মত
এরই মাঝে চলে যায় জীবনেরই রথ।
ভুলগুলো শুধরে নিয়ে, কষ্ট গুলো ভুলে গিয়ে
থাকে সেথা মাঝে মাঝে ভাললাগা হাত
শুধু ভালবেসে ছুঁয়ে দাও হাত দুটি মোর
কেন হাত খানি ধরে থাক রাত্রি প্রহর।।

সূর্যকে সাথী করে, কখনও পথের পরে
যাও যদি ভুলে মোরে, মনে কোরো না।
রাত্রির আঁধারেতে, কষ্টময় বিদায়েতে
দু’ফোটা চোখের জলে, ধুয়ে ফেলো না।

মনে যদি পড়ে কভু, গুন গুলো ভেব শুধু
দোষ গুলো মনে করে কষ্ট পেয় না।
মনে মনে ভেবো শুধু, প্রানে প্রানে পেয়ে যাবে
কোথায় কেমন আছি সেই ঠিকানা।।

_______আল-ইমরান

আমার তুমি


আজও কি আমায় মনে পড়ে
তোমার ওই হৃদয়ের তরে।
দক্ষিণা বাতাসের শীতল হাওয়ায়
চুলগুলো উড়িয়ে দিয়ে যায়।
যখন জমা হয় অশ্রু চোখের কোণায়
চলে আস তুমি মোর ভাবনায়।
আমি কি ছিলাম তোমার
হৃদয়টা কেড়ে নিলে আমার।
চেয়েছি কাঁটা,দিলে ফুল
তোমায় ভালবেসে করিনি ভুল।
তুমি আমার জীবন,তুমি আমার মরন
আমাকে রাখিও স্মরন।

Saturday, September 24, 2011

ছুঁয়ে যাওয়া


আমি স্বপ্নের মধ্যে বাবুদের বাড়িরে ছেলে
সেজে গেছি রঙ্গালয়ে,
পরাগের মতো ফুঁ দিয়ে উড়িয়েছি দৃশ্যলোক
ঘামে ছিল না এমন গন্ধক
যাতে ক্রোধে জ্বলে উঠতে পার। নিখিলেশ, তুই একে
কী বলবি? আমি শোবার ঘরে নিজের দুই হাত পেকেরে
বিঁধে দেখতে চেয়েছিলাম যীশুর কষ্ট খুব বেশি ছিল
কিনা;
আমি ফুলের পাশে ফূল হয়ে ফূটে দেখেছি, তাকে ভালোবাসতে পারি না।
আমি ফুলের পাশে ফূল হয়ে ফূটে দেখেছি, তাকে ভালোবাসতে পারি না।
আমি কপাল থেকে ঘামের মতন মুছে নিয়েছি পিতামহের নাম,
আমি শ্মশানে গিয়ে মরে যাবার বদলে,
মাইরি, ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।

নিখিলেশ, আমি এই-রকমভাবে বেঁচে আছি, তোর সঙ্গে
জীবন বদল করে কোনো লাভ হলো না আমার -একি নদীর তরঙ্গে
ছেলেবেলার মতো ডুব
সাঁতার?- অথবা চশমা বদলের মতো
কয়েক মিনিট আলোড়ন? অথবা গভীর রাত্রে সঙ্গমনিরত
দম্পতির পাশে শুয়ে
পুনরায় জন্ম ভিক্ষা? কেননা সময় নেই,
আমার ঘরের
দেয়ালের চুন-ভাঙা দাগটিও বড় প্রিয়। মৃত গাছটির পাশে
উত্তরের
হাওয়ায় কিছুটা মায়া লেগে ভুল নাম, ভুল স্বপ্ন থেকে বাইরে এসে
দেখি উইপোকায় খেয়ে গেছে চিঠির বান্ডিল,
তবুও অক্লেশে
হলুদকে হলুদ বলে ডাকতে পারি। আমি সর্বস্ব বন্ধক দিয়ে একবার
একটি মুহূর্ত চেয়েছিলাম, একটি …..,
ব্যক্তিগত জিরো আওয়ার;
ইচ্ছে ছিল না জানাবার
এই বিশেষ কথাটা তোকে। তবু ক্রমশই
বেশি করে আসে শীত, রাত্রে
এ-রকম জলতেষ্টা আর কখনও পেতো না, রোজ অন্ধকার হাত্‌ড়ে
টের পাই তিনটে ইঁদুর না মূষিক? তা হলে কি
প্রতীক্ষায়
আছে অদুরেই সংস্কৃত শ্লোক? পাপ ও দুঃখের কথা ছাড়া আর এই অবেলায়
কিছুই মনে পড়ে না। আমার পূজা ও
নারী-হত্যার ভিতরে
বেজে ওঠে সাইরেন। নিজের দু’হাত যখন নিজেদের ইচ্ছে মতো কাজ করে
তখন মনে হয় ওরা
সত্যিকারের। আজকাল আমার
নিজের চোখ দুটোও মনে হয় একপলক সত্যি চোখ।এরকম সত্য
পৃথিবীতে খুব বেশী নেই আর।

বিষন্ন অন্ধকার


বিব্রত লাশ পড়ে আছে পরম বিস্ময়ে
সবকিছু কেমন যেন বদলে যাচ্ছে হালের দুঃসময়ে
কিসমত,একবার কাঁদে ফের চেয়ে দেখে
বউয়ের বিব্রত লাশ,শোকের নগরী সারা বাড়ি
ইমার্জেন্সী সারাদেশে, কিভাবে বলি নগ্ন সত্য
শালার মানবতা: লোভের ঘুণে খেয়েছে তাকে।

একখান ছেড়া থান কোনমতে লজ্জায় জড়িয়ে
সারাদিন সুফলা করত কাজকাম
টপটপ ঘামের বৃষ্টি ঝরিয়ে
অভাবের সংসার,খানাপিনা জুটত না
দুদিন পর আধমুঠো সাদা ভাত ও
লঙ্কা মরিচ দিয়ে ক্ষুধার জ্বালা মিটত না
সুফলার কষ্টের শিশিরে বিকেলের মাট ঘাট বিষন্ন অন্ধকার
দুঃখের বৃষ্টিতে ঠাঁইহীন অথৈ জলাধার

কামনার শকুনেরা যণ্ত্রনায় পিষে মারবে তাকে
এহেন সম্ভাবনা ছিল না, তবে ছেড়া থানে
ঢাকত না তার মায়াবী লজ্জা।
তাই কী সে কামনার বর্বর শিকার?
রাত গভীরে সে নিজেকে সপে দিত খাটে নয় পাটিতে
চারপাশে ভাঙ্গা বাঁশের বেড়া,দড়িতে রাখা স্বামীর
পরনের ছেড়া লুঙ্গি, ঘরের এক কোণায় কাস্ত,লাঙ্গল

কিসমত, সে রাতে ফেরে নি
সুযোগ বুঝে হায়েনাদের আক্রমণ
সুফলার আর্তচিৎকার কেউ শুনে নি!
হাতমুখ ছিল বাঁধা
নির্যাতনের বুলডেজার শেষ করে দেয় তার সবকিছু
রক্তাক্ত,বিভৎস শরীরে সে
পড়ে আছে ঘরের মাঝামাঝি
কিসমত শোকে কাঁদে,
বারবার ফ্যালফ্যাল চেয়ে দেখে
সোহাগিনী প্রিয়তমার নিথর দেহ।
ইমার্জেন্সী চলছে, তবু মুখ থেকে বেরিয়ে এল ঘৃণাসহ
শালার মানবতা, লোভের ঘুণে খেয়েছে তাকে।


_______মজিব উল্লাহ্

সবাই ভালো আছে


সাদা মেঘ জমে জমে কালো হয়েছে
আকাশের ঠিকানাটা বদলে গিয়েছে
হয়তো-চিরন্তন শৈলীকাবিন প্রেমিক হয়েছে
কিংবা সময়ের কষ্টিপাথরে দামী হয়েছে
তাই কবি আজ প্রকৃতির মতোই আদি নির্বাক।

কোনো এক বর্ষণমুখর তিনতলা ঘরে
হয়তো যৌনরসের তাড়নায় মেতে আছে কেউ,
পাপের বর্ণনা করি আর আমি পাপী!
আসলে পাপ করিনি-
শরীরী পেমের জয়গানে এ কেমন কথা কবি?

যখন সমস্ত বিস্ময়ে ফেটে পড়ে আকাশ
তখন মহুয়া ফলের রসে মানবীয় স্বর্গে বাস!
জলের ঝড়ো আঘাতে প্রকৃতি পবিত্র হয়েছে
আত্নার মিলনে যেন-তিনতলা ঘর আজ
আশ্চর্য শান্তি পেয়েছে।

এখন হলুদ রঙে আকাশ সেজেছে
রঙধনুর ছড়া নতুন ফুলে ভরেছে
তাই সৃষ্টির মাঝে সবাই বেঁচে আছে;
সবাই ভাল আছে।


_____ওমর ফারুক

Thursday, September 22, 2011

এখন শুধু খুঁজি


স্বপ্নগুলো রয়ে যায় স্বপ্ন হয়ে
শুধু ফিরে আসে দুঃস্বপ্ন হয়ে;
অমাবস্যার মত-
হয়ে যায় সবকিছু অন্ধকার।
তাই এখন শুধু খুঁজে বেড়াই
শান্তির একটি ঘর।
যেখানে থাকবেনা বিশ্বাসঘাতকতা,
ক্ষনে ক্ষনে ধোকা পাবার পোকা।
সত্যের বলীদান মিথ্যের বাহাদুরী
আসবে না আলো-বাতাস।
রবে না মানুষের কোলাহল
আর থাকবে না দরজা-জানালা।

জল জোছনা


হেটে চলেছি একা,
প্রখর জোছনা আলোকের নিচে কংকর পথে,
মায়াবী এক জগত যেন সামনে এসে দাঁড়ায়,
রুপালী ঝলমল আলোয় চেনা জগত অচেনা হয়ে যায়, মাঝে মাঝে আবার, বাশঁঝাড়ের ঝিকিমিকি আলোয় পথেরা আড়াল হয়,
আর আমি তাদের সাথে,
একাত্বতা নিয়ে হেটে যাই,
রাস্তার কোনে কংক্রিট এর পুলে এসে দাঁড়াই,
ইকারাসের ডানার মতই দু’হাত প্রসারিত করে,
তাকিয়ে থাকি, অবাক জোছনার দিকে,
একটু তাকিয়ে দেখি,
চারিপাশে অথৈজলে ঝলমল করেছে
আকাশের চাঁদের মতই আরেকটি চাঁদ,
মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি,
সেই দিকে,
সেদিকে ছড়িয়ে আছে অবাক,
‘জল জোছনা’

_____'মাসুম মেহবুব সৈকত'

শুধু তুমিই ছিলে না ..........

শুধু তুমিই ছিলে না

নদীতে জল ছিল
সায়ন্তনী পবন ছিল
গেরুয়া বসনে সাধু ছিল
কোন সাধ্বী ছিল না ।

যাপিত জীবন ছিল
গৃহকোনে সুখ ছিল
চোখেতে কাজল ছিল
বোধের অনল ছিল না ।

বাতাসে মদিরা ছিল
বুকেতে প্রেম ছিল
তৃষিত নয়ন ছিল
শুধু তুমিই ছিলে না ।

Sunday, September 18, 2011

দৃষ্টির সন্ধানে...


নিরন্তর আমার এই পথ চলা,
উড়ন্ত পাখির মত নিজেকে মেলে ধরা।
ছুটে গিয়ে দীঘির জলে নিজেকে বিলীন করা,
ভালোবাসি আমার এই অপরূপ ধরা।

সন্ধ্যে হতেই অধীরে অপেক্ষা সন্ধ্যাতারার,
চারিদিকে ঝেঁকে আসে সুদর্শনের বাহার ।
চুপটি করে বেরিয়ে পড়ি মাঠের আইল ধরে
নীরবে আলেয়ার পিছু পিছু ছুটি রাতের আধাঁরে।

আকাশ জুড়ে তারার মেলা, খেলছে অবিরাম
মুদ্ধ নয়নে আড়ি পেতেছি, নাই যে বিরাম।
বকা-ঝকার থোড়াই করি, আজ যে আমি স্বাধীন
প্রাণ জুড়িয়ে দেখবো কত আজ, নিগূঢ় ভাবনাহীন।

মাকড়শা জাল বুনে, আমি দেখি আঁখি জুড়িয়ে
পিঁপড়েরা ছুটে খাবারের সন্ধানে, পথ মাড়িয়ে।
বাবুই দেখি বাসা বুনে খড়কুটো কুড়িয়ে
দৃষ্টি আমার মেলে দিই ঐ দিগন্ত পেরিয়ে।

ভোরের আলো ফোটে, শুনতে পাই পাখিরা জাগে কলরবে
আমার আলো আর ফোটেনা, কাঁদছি আমি নীরবে।
শুধু স্বপ্নেই আমার এদিক সেদিক ছুটে চলা
আর নীরব অশ্রুধারায় নিজেকে মেলে ধরা ।


_______বিষাদ নীলিমা

আমার যতো ভাবনা


নিজের সঙ্গে নিজের দূরত্ব বাড়ছে যেন প্রতিদিন
একটু একটু করে, যেতে যেতে অনেক দূর থেকে
গোধূলির রঙে নিজের পান্ডুর ছবি দেখে মনে হয়
এতো আমি নই, আঁৎকে উঠি আতঙ্কে হঠাৎ করে!

মধ্য রাতে যখন দূরের সবগুলো বাতিঘর নিভে যায়
যখন আকাশ ভেঙ্গে ঝড়ের- বৃষ্টির মাতামাতির চলে
যখন মাতাল ঢেউ তছনছ করে দেয় নদীর দুই তীর
তখন খুব নিষ্পৃহ মনে হয়, চেনা খুব দায় নিজেকে।

দিনরাত যেন অন্ধকারেই পথ চলি আমি আজকাল
যেন ভোরের আলো আর দেখা দেবে না কোনদিন
এমনই দ্বিধা আর শংকিত একজন পথভোলা মানুষ
আমাকেই পরিহাস করে, ‘অদ্ভূত অপদার্থ বলে!

আমি আমাকেই হারিয়ে ফেলেছি যেন অন্ধকারে
বৃষ্টিভেজা দিনে কিংবা কোজাগরি জ্যোৎস্না রাতে
কে যেন ইঙ্গিতে আমাকে ডেকে নিয়ে যায় দূরে
আমি তাকে দেখিনি, আমাকেও চিনি না সেখানে!

অসম খেলা

দেখেছো কখনও
হাসির শব্দে আকাশ ফেটে যায়!
দেখেছো কখনও
কান্নার রোল কাননে কুসুম ফোটায়!

না-কি শুনেছ কখনও
মায়ে করে ক্ষুন আপন বাছারে!
শুনেছ কখনও
নেউলেরে নাগ জড়ায় আদরে!

তুমি দেখনি,
তুমি শোননি।

তাই হাসছো এমন করে! হিঃ হিঃ হিঃ
অথচ আমি দেখেছি আরও
অসম কত খেলা
হাতে নাই কড়ি দু-পয়সা
বসিয়েছে তবু মেলা!

Thursday, September 15, 2011

আমি ডুবে যেতে চাই তোর মাঝে

কাননিকা জুড়ে অজস্র বুনোফুলে আমি তোর ছায়া দেখি
খজ্যোতি যেমন টিপটিপ করে জ্বলে নিভে
তেমনি আমার বুকে তুই জ্বলতে থাকিস অবিরাম;
আমি ব্যাথাতুর কপিঞ্জল হয়ে
ঘুরে বেড়াই
জনপদ থেকে জনপদে।

কোন দুরদেশে তূই;
কোন কুহেলী মায়ায় জড়িয়েছিস আমায়,
আমার ব্যাথার নদী;
আমি তোর ভালবাসার ঝর্নাধারায় স্নান করতে চাই
অবিরল ভিঁজে যেতে চাই;

আমি সব শ্রান্তি পেছনে ফেলে
কঞ্চুলী সরিয়ে তোর কবোষ্ণ বুকের গন্ধ নিতে চাই;
কষিত ভালোবাসার ছায়া দেখতে চাই।

অবিরাম শ্রাবন ধারা বয়ে যাক -
আমি ডুবে যেতে চাই তোর মাঝে!

Wednesday, September 14, 2011

কথা দাও .........


পথ ভুলে কভু যদি গিয়ে উঠি
তোমার হৃদয় আঙ্গিনায়
কথা দাও ফিরিয়ে দেবে না।
নিঃসঙ্গ ভিক্ষুক আমি
মাঝপথে হাত বাড়িয়ে
যদি দু'আনা ভিক্ষা চায়
কথা দাও তুমি দেবে।

তৃষ্ণাতুর প্রাণে তোমার কাছে
যদি এক বিন্দু জল চায়
কথা দাও বিন্দু জলে আমার তৃষ্ণা মিটাবে।
ক্লান্ত হৃদয়ে তোমার কাছে
কখনো যদি আশ্রয় চায়
কথা দাও আশ্রয় দিবে।

অশান্ত মনে কখনো যদি
এক মুঠো শান্তি চায়
কথা দাও অশান্ত মনে শান্তি দেবে।

কাঙ্গাল প্রেমিক হয়ে
যদি তোমার কাছে প্রেম চায়
কথা দাও প্রেম আদরে
প্রাণ আমার ভরাবে।
নিদ্রাহীন দু'টি আখি
যদি সুখের ঘুম চায়
কথা দাও শান্তির ঘুম পাড়াবে।
দৃষ্টির খেলায় অন্ধ হয়ে
কখনো যদি তোমার কাছে
পথের সন্ধান চায়
কথা দাও আমায় সঠিক পথ দেখাবে।


__________নিটারসন

আমার জীবন .................

আমার জীবন আমি ছড়াতে ছড়াতে
এসেছি এখানে,
আমি কিছুই রাখিনি-
কুড়াইনি তার একটিও ছেঁড়া পাতা,
হাওয়ায় হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছি শিমুল তুলোর মতো
সব সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, স্মৃতি,
আমি এই হারানো জীবন আর খুজি নাই
সেই ফেলে আসা পথে;
ছেঁড়া কাগজের মতো ছড়াতে ছড়াতে এসেছি আমাকে।
পথে পড়ে থাকা ছিন্ন পাপড়ির মতো
হয়তো এখানো পড়ে আছে
আমার হাসি ও অশ্রু,
পড়ে আছে খেয়ালি রুমাল, পড়ে আছে
দুই এক ফোঁটা শীতের শিশির;
এখনো হয়তো শুকায়নি কোনো কোনো অশ্রুবিন্দুকণা,
বৃষ্টির ফোঁটা
চঞ্চল করুণ দৃষ্টি, পিছু ডাক,
হয়তো এখনো আছে সকালের মেঘভাঙা রোদে,
গাছের ছায়ায়
পদ্মাপকুরের স্থির কালো জলে,
হয়তো এখনো আছে হাঁসের নরম পায়ে
গচ্ছিত আমার সেই হারানো জীবন
সেই সুখ-দুঃখ
গোপন চোখের জল।
এখনো হয়তো পাওয়া যাবে মাটিতে
পায়ের চিহ্ন
সেসব কিছুই রাখিনি আমি
ফেলতে ফেলতে ছড়াতে ছড়াতে
এখানে এসেছি;
আমি এই জীবনকে ফ্রেমে বেঁধে রাখিনি কখনো
নিখুঁত ছবির মতো তাকে আগলে রাখা হয়নি
আমার,
আমার জীবন আমি এভাবে ছড়াতে ছড়াতে এসেছি।
আমার সঞ্চয় আজ কেবল কুয়াশা, কেবল ধূসর
মেঘ
কেবল শূন্যতা
আমি এই আমাকে ফ্রেমে বেঁধে সাজিয়ে রাখিনি,
ফুটতে ফুটতে ঝরতে ঝরতে আমি এই এখানে
এসেছি;
আমি তাই অম্লান অক্ষুণ্ন নেই, আমি ভাঙাচোরা
আমি ঝরা-পড়া, ঝরতে ঝরতে
পড়তে পড়তে
এতোটা দীর্ঘ পথ এভাবে এসেছি
আমি কিছুই রাখিনি ধরে কোনো মালা, কোনো ফুল,
কোনো অমলিন স্মৃতিচিহ্ন
কতো প্রিয় ফুল, কতো প্রিয় সঙ্গ, কতো উদাসীন
উদ্দাম দিন ও রাত্রি
সব মিলে হয়ে গেছে একটিই ভালোবাসার
মুখ,
অজস্র স্মৃতির ফুল হয়ে গেছে একটিই স্মৃতির গোলাপ
সব সাম মিলে হয়ে গেছে একটিই প্রিয়তম নাম;
আমার জীবন আমি ফেলতে ফেলতে ছড়াতে ছড়াতে
এখানে এসেছি।

......................... মহাদেব সাহা

Tuesday, September 13, 2011

তবু স্বপ্ন বুনি


অমাবস্যার রাতে চাঁদকে
খোঁজা বোকামী ছাড়া কিছু নয়
যে কষ্ট দিয়ে চলে যায়
তাকে মনে রাখার মতোই।

স্বপ্ন হারিয়ে যায়,
তবু আমরা বুনি নতুন স্বপ্নের বীজ
সেই স্বপ্ন হয়ত একদিন ভেঙ্গে যাবে
আর আমরা নির্বোধেরা
আবার স্বপ্নের বীজ বপন করি
স্বপ্নের মাঝে বাঁচতে চাই বলে।

মরণ তো জীবনে একবারই হয়
বিশ্বাসঘাতকতার আঘাতে বার বার
আমরা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করি,
তার পরেও আমরা বেঁচে থাকি
নতুন বিশ্বাসের ভরসায়,
নতুন জনমের আশায়।

একটা হৃদয়কে কতোবার আর খন্ডিত করা যায়
যতোবারই খন্ডিত হোক না কেন
এই হৃদয় একটাই থাকে,
ভালবাসা হয়ত বহুবার সেই হৃদয়ে কড়া নাড়ে
শুধু সময়ের কাছে হেরে যায় ভালবাসার সত্যিকার অর্থ।

Monday, September 12, 2011

**বিদীর্ণ বুকের পাঁজর**


বিদীর্ণ বুকের পাঁজরে,
ভালবাসা নামের এক একটি পেরেক ঠুকে
বক্ষ পিঞ্জরে চলে নিঃশ্বাসের গোলামী।
বিমূর্ত ছায়ার অদৃশ্য কোন লালিমায়
আপ্লুত আবেগ বরফে ঢাকা শতদল বর্ষা মেঘে
অজানা পথিক চলে দুরের কোন চেনা গন্তব্যে,
জীবাশ্ম এই পথে রেখে অসংখ্য পদচিহ্ন,
মমি করে যেথা কফিনে ভরা
আমার অদৃশ্য আবেগ।।

নির্ঘুম কুহকের চিৎকারে,
সুবিশাল নিঝুম অরণ্য থেকে
দলবেঁধে উড়ে যায় দোয়েলের ঝাঁক
উড়ে যায় বিষাদ নীলিমা ছেড়ে বিষণ্ণতার ঘরে।
সৈকত বালিতে যাযাবর জোনাক হয়ে,
ঝিঁঝিঁ পোকার বাগানে হানা দেয়
একদল মরুভূমির জলদস্যু।।

আলপিন ফোটানো যন্ত্রণার এক নির্ঘুম সকাল,
পরিণত হয় শ্রাবণ ঝরা সজল বিকালে।
পলাশের গন্ধে ছুটে নামে রিনঝিন মেঘরুদ্র।
মনের গহিনে চাঁদের বুড়ি মত
উঁকি দেয় কোন এক বনসাই মেয়ে...
যেখানে ভোরের প্রথম আলোয়,
ধ্যানমগ্ন একজন নীলসাধু আমায় সুধায়
কেন এই কবিতা তোমার....
উত্তরে বলি------
এই মন যে আমার ইচ্ছেঘুড়ি
মন যা চায় তাই লিখে ফেলি।।

______আল ইমরান

শুধু বিশ্বাসটুকু ফিরিয়ে দাও...


শতভাগ শুদ্ধ মানুষ খুঁজতে অরক্ষিত হৃদয়ে
বড্ড নির্মম ভাবে আঁচড় কেটেছো তুমি।
তাই তো প্রতিনিয়ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে আমার ভেতরে
অথচ তুমি একাই রয়ে গেলে!
খেয়াল করেছো কখনও কতটা ক্লান্ত তুমি?
মানুষ কখনও পূর্ণ হতে পারে না;
এই সত্যটাকে মাড়িয়ে কেন শুদ্ধ মানুষ খোঁজো?
চোখ তুলে আমাকে দেখ, আকাশ দেখ
হাত বাড়াও আমাকে ছোঁয়া যায় আর আকাশ?
তবু কেন তোমার দৃষ্টি আকাশে?
তবে কি আমি তারা হবো?
যদি বলো তাই হবো, আকাশে বানাবো বাড়ি.....
তুমি ঠায় চেয়ে থেকো, শুধু বিশ্বাসটুকু ফিরিয়ে দাও-
তুমি আমাকেই ভালবাস।
অথবা চলো প্রস্তর ভুমিতে বৃষ্টির বন্দনা করি
বৃষ্টিতে ভিজে মাটি হই প্রত্যাবর্তন করি মাটিতে,
তবে আর কারোরই দু:খবোধ থাকবে না।

Sunday, September 11, 2011

একটি কবিতা

কবিতার রাজরাণী
স্বপ্নে দেয় হাতছানি
এ শূণ্য বুকে
কেন জানি কোন ঝোকে
এসেছিল ফাগুন রাতে
এলোমেলো এ জীবনটাতে
নিঃসঙ্গে হয়েছিল দোসর
কেটে যাক বেদনার প্রহর
ঝলমলে আলোয় ভরে যাক
শূণ্য মনের উঠোন,আর থাক
কাচের গ্লাসে ভরা উপচানো মদ
সময়ের পিঠে বেড়ে উঠা বিপদ...
নতুন করে নিরিবিলি এ বিকেলে
কবিতার কথা মনে এলে
ভুলে যাই অতীতের দুঃখগাথা
দু একটি পঙতি,ঝড়ে পড়া একটি বৃক্ষলতা
নীরবে বলে দেয় আমার অতীত
ঘাসের মাঠে কুয়াশা জমে নি,কমেছে শীত।

সে দিন সে এসেছিল'


চৈত্রের শেষ রাত এবং বৈশাখের প্রথম দিনে,
ওকে আমি বলেছিলাম,
শ্রাবণের প্রথম বৃষ্টিকণা আমি তোমাকে দেব।
আমার চোখের দিকে তাকিয়ে,
স্নিগ্ধহাসি হেসে মাথা দুলিয়েছিল,
হাত নেড়ে মৌণ্য বিদায় বলে চলে গিয়েছিল।
আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম পলাশ গাছে হেলান দিয়ে। বৈশাখ মাসে কি পলাশ পাওয়া যায়?
আমি জানি না।
শ্রাবণের ঠিক শুরুতে, সূর্য যখন উঠছিল,
সে দিন সে এসেছিল, হাতে ছিল একটা পলাশ।

______কবি আব্দুল

সৃষ্টির স্রষ্টা


যেতে হবে বহুদূর,
পারি দিতে হবে কন্টকাপূর্ণ শ্বাপদসংকুল!
মুক্ত মনে, দৃপ্ত পানে।

এ পথে আছে যাতনা,
দুঃখ, বিরহ, ব্যথা-বেদনা

আছে ছিন্নহীন মানুষের মর্মহীন কথা
এরা হিংসায় মরে,অপদস্থতায় গর্ববোদ করে
এরা তোমার সৃষ্টিকে নিয়ে ব্রঙ্গ করে
তোষামোদীই এদের পেশা?

ঝেড়ে ফেলে দাও এদের কথা
সৃষ্টি কর, সৃষ্টিই তোমার আশা
সৃষ্টির স্রষ্টা কখনো পিছু হঠে না।

______বদরুল ইসলাম

ভালবাসায় কাটে প্রণয়ের পুরো রাত~


অন্ধকার বিমূর্ত এক রাত
চাঁদ তার পুরো আলো এখনো ছড়ায়নি,
দূরের জেলে পাড়া থেকে ভেসে আসছে
মারফতী গানের কলি
খঞ্জনী ঢোলের শব্দ -
রাতের পোকারা কত কথায় মত্ত;
পুরনো এক শশ্মান ঘাট ঘেসে
শিমুল গাছ ছুয়ে বসে আছি আমরা -

একটু দুরেই নদী
ঘাটে কয়েকটি খেয়া নৌকা বাধা
মাঝিরা কেউ নেই, মিটমিট করে জ্বলা হারিকেন ঝুলছে শুধু;
নির্বাক আমরা
হাতে রাখা হাত
একটু উষ্ণতা বিনিময়
একটু করে গায়ের গন্ধ পাওয়া,
মৃদু বাতাসে ফিনফিনে কয়েকটা চুল
আমার মুখে এসে লাগছে;
রাতের নীরবতা দেখছি
নদীর ছলাৎ ছলাৎ শব্দ শুনছি
কানে ভেসে আসছে গ্রামের বাউলদের গানের সুর
আমরা তবু নির্বাক।

অনেক পরে যুবতী নারীর মতোই
পুর্নিমার আলো ঝলমল করে উঠলো যেন,
রুপালী আলোয় তার মুখখানি দেখি
দেখি তার ঠোট
চোখ
ভ্রুযুগোল
গ্রীবাদেশ
আমার চোখে মুগ্ধতা; মগ্নতা খেলা করে
প্রগাঢ় ভালবাসায় ডুবে যাওয়া
আমাদের দেখে একা চাঁদ
পাহারা দেয় এক ফালি চাঁদ।

নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে আমি বলি
কিছু বলবে না?
না
কিছুই না?
না
তাহলে?
তাহলে কি?
সে চাপা হাসি হাসে
আমি দ্বিধায় পড়ি
কে বেশি সুন্দর- সে নাকি ঐ চাঁদ;
সে হাসে
রাত হাসে
চাঁদ হাসে
ভালবাসায় কাটে প্রণয়ের পুরো রাত ~

___________নীলসাধু

Friday, September 9, 2011

চাদ হয়ে রব


তোমার আকাশ যদি না ঢাকে মেঘ,
তবে আনমনে চেয়ে দেখ-
আমি হয়ে রব রুপোলি চাদ;
শুক্লপক্ষের মায়াভরা নিশীথে ।
হাসি মুখ আমার ঢেকে দিতে, যদি লাগে
গ্রহণের কালো ছায়া, কলঙ্কদায়ী কেউ
যদি এসে হাসে, রক্ত হিম করা
জ্যান্তব হাসি, তবু অটল রব আমি !
হেসে যাব স্নিগ্ধতা ভরে,
ছড়াবো শান্ত ধবল আলো
কালো রাতের বুকের মাঝে ।

মায়াভরা পরিবেশ, আবছা আলোয়
ভরে ওঠা চারপাশ, আমি
অবাক চোখে দেখব, চরকা কাটছে
বুড়ো দাদুটা, গুটুর গুটুর করে ।
জমিয়ে আড্ডা দেবো পুরাকালের
চরকা বুড়ির সাথে, বলব তাকে
কাজ নেই আর চরকা কেটে;
ঘুমাও তুমি, আমি আছি ।
সুনসান নিরবতা ! আমাতে মুগ্ধ তুমি
চেয়ে থাকবে তখন অপলক । গল্প চলবে
আমাদের সমস্ত রাত্রিভর । একাকী
নির্জনে ভাসবে আমাদের
ভালবাসার সপ্তডিঙ্গা ।

ভালবাসার খেলা


অনেক বেদনার বিবর্ণ রূপের মাঝে
যদি তুমি আমায় দেখ,
ভাবনার চোখ তুলে নিমেষে
ভালবাসি বলে যেও!
আমি কোনো শিল্পী নই
তবু সেদিন তোমার ছবি আঁকব;
সেদিন দুচোখ ভরে তোমায় দেখব
হয়তো সকালের রোদ্দুর হয়ে যে ভাবনাগুলো
আর না বলা কথাগুলো মনের অজান্তে
আহ্বানে কোমল হয়ে হয়ে
শুধু ভালবাসি বলে যায় নিরবে।
পৃথিবীর সুবর্ণ দিনগুলি শেষ হতে চলেছে
ভালবাসার খেলা আজ দেহ বৃত্তির সাথে;
স্বপ্নেরা দেয়ালের আর্ত শব্দে শব্দে কাঁদে
হয়তো আমার মতো অনেকেই বেঁচে আছে
এমন ভালোবাসার আপেক্ষিক সত্যের মাঝে;
হয়তো চাঁদের অমাবস্যা-হয়ে গেছে অনেক আগে।

__________ওমর ফারুক

খন্ডিত ভালোবাসা


শেষবার যখন লিখেছিলে আমায়
সোনামীর মতো ভেসে গিয়েছিলো চোখ আমার
অল্প কয়েকটা শব্দের যে এতো জোর থাকে
তা আমার অত্যাবধি অজানাই ছিলো।
এভাবে যে ভেঙ্গে দিতে পারে একটা জলজেন্ত মানুষকে
সাধারণ কিন্তু কঠোর কয়েকটা মাত্র শব্দ।
তোমার সব কথাইতো রেখেছি আমি...
সবটুকুই...তবে এমন কি করলাম আমি
যে তুমি আমাকে ছাড়া একবিন্দুতেই পাগল হয়ে যেতে
আজ সেই তুমিই বলছো ভুলে যেতে তোমাকে...!!!

তোমার বিশ্বাস হবে কিনা জানিনা
যতবার তোমার শেষ কথাটুকু রাখতে চেয়েছি
ততোবার মন তীব্র প্রতিবাদ করেছে।
দুরন্ত আকাশটা হঠাত করেই বিষন্ন হয়েছে
যতবারই আপোষ করতে চেয়েছি তোমাকে ভুলে যাবার সাথে
ততোবারই তোমার স্মৃতি ঘিরে ধরেছে আমাকে হায়ানা হয়ে।
আমি প্রতিনিয়ত এক হারমানা নাবিক হয়েছি
তোমার খন্ডিত ভালোবাসার কাছে।

কি আশচর্য... আজ যেখানে আমি
অস্তযামী সুর্যের মত ক্লান্ত হয়ে ডুবে যাচ্ছি পৃথিবীর কোণে
আর তুমি কিনা দিব্বি ভালোই আছো...
সুখের প্রহর গুণছো, গাইছো, শুনছো, ভালোই আছো।

একটা সুখের হরিণ ধরতে... শুধু একটা হরিণ
তারপর তোমার সব কিছু থেকে মুক্তি
বলেছিলাম তুমি পারবে ধরতে... জানিনা এখন
তুমি ধরেছো কিনা... জানারই বা অপেক্ষা করলে কই...!!!
বলেছিলাম দুটো জিনিস চাইবো তোমায় কাছে
একটা না হয় নাইবা জানলে আজ শুধু একটা শুনো
শুধু একটা সওদা করবে আমার সাথে
আমার ক্ষুদ্র যতটুকু সুখ আছে তোমার কারনে
সেটুকু তুমি নিয়ে নাও তোমার ব্যাথার দামে...
কি... দিবে না আমায় তোমার সবটুকু দুঃখ???
নিজের অস্তিত্ত বলে যতটুকু ছিলো সেতো
হারিয়েছি অনেক আগেই তোমার নীলাভ আকাশে।

আমার তো এখন পাহাড় ঘেরা দুঃখ জীবন
একলা বিকেল, ঘন তমসার রাত, থেমে থাকা প্রহর
যেখানে ব্যাথাগুলো বেড়ে যায়
একটা কিনলে একটা ফ্রি হারে।

তুমি ভালো থাকো, সুখী থাকো
আমার জীবনের বইটা না হয় থাকুক দুঃখ ভরা পাতায়
সুখের মলাটে বাধাঁ হয়ে।

Tuesday, September 6, 2011

মৃত্যুর পরে ............


পাবে পাবে, আমাকে পাবে
কোন একদিন বসন্তসমীরণে
ঝরা বকুলের বনে;
আবার ঝরব ধরণীর ঘরে
মরণের পরে-
মালতীরূপে।
সেদিন উতলা প্রাণে ‘এস এস’ বোলে
ডাকব তোমায়
প্রেমানন্দ ভূতলে;
বাঁধা-বিঘ্ন ছিন্ন করে দিয়ে
গোলাপ হয়ে ফুটব আবার
ওই মালঞ্চে;
তুমি মালিনী রবে সেথায়-
সযতনে আমায় গেঁথে নিবে খোপায়?

দেনাপাওনা ............

বলো,কী দিবো তোমায়?
দেনাপাওনার এই সরল সুদকষায়
পাবে শুধু তুমি এই আমায়
যেতে যদি চাও চাইনিজ রেস্তোরায়
পরতে চাও যদি সোনার নেকলেস গলায়
শপিং করতে যাও যদি বাণিজ্য মেলায়
বেদনাহত আর করো না আমায়
সঞ্চয় নেই,পড়বো আমি দেনায়
মূলধন নেই কোন আর এই দেহ ছাড়া
ছলনার আশ্রয় নেই না কবিরা
সবকিছু মেনে নিয়ে দাও যদি আশা
দেহ চাইলে দেহ পাবে,আদরে ভালোবাসা।

পৃথিবীটাই তোমাকে দিয়ে দিলাম


পৃথিবীটাই তোমাকে দিয়ে দিলাম তুমি থাকো সুখে,
লিখবো না আর কোন লেখা জেনে রেখ প্রিয়ে
প্রেমের মমতায় ফুলের মালায় গেঁথে ছিলাম তোমারি নাম,
বুকের ফ্রেমে বেঁধেছিলাম তোমার ঐ ফুলের মতো পবিত্র মুখ।

আজ পৃথিবীটাই তোমাকে দিয়ে দিলাম,
লেখার জগত থেকে বিদায় নিতে চাই ওগো প্রিয়তমা,
জেনে রেখ তোমায় নিয়ে আর কখনো কাব্য-কবিতা লিখব না,
ভালোবাসা, আমার বুকের ভালোবাসা শুধু তোমাকে দিয়েছিলাম।

গানে গানে, কবিতায় কবিতায় তোমাকে নিয়ে গেয়েছি না কত,
তুমি বুঝলে না,বুঝতে চাইলে না কি ছিল গানের কথন,
প্রেমেরই লাল গোলাপে এঁকেছি কতবার তোমারই হাসি মাখা ছবি,
আজ আমি একা, সামনে আমার শুধুই ধুঁ ধুঁ মরুভূমির মতো এক পৃথিবী।

স্বপ্নের ঘোরে ভালবাসার

স্বপ্নের ঘোরে ভালবাসার সব বর্ণিল রঙগুলো যখন বাস্তবতায় ধূসর হয়,
এলোমেলো সবকিছুকে মেলাতে তখনও ব্যস্ত হইনা আমি,
সৃষ্টির নতুন কিছুর খোঁজের সেই পূর্বাপর ব্যাকুলতা ঠিক আর অনুভুত হয়না্‌...

সময়ের খুব চেনা কোন এক প্রহরে
অবাক নিজেকে বড়ই অচেনা মনে হয়...
তারপর সেই রহস্যময় প্রহরের হাতছানি
আরও একবার আমাকে স্পর্শ করে যায়,
যেখানে সব অনুভূতি থমকে দাড়ায় নীরবে, নিস্তব্ধতায়;
হয়তো সত্ত্বার আত্মার ধ্বনি শুনতে পায়...

অজানা কোন এক ভয় বোধকরি এখনও তাড়িয়ে বেড়ায়,
জীবনেরই কোন এক মায়া যেন এখনও তবু জীবনের পথে ফেরায়...

জীবনের অংকগুলো ঠিক বোঝা হয়ে ওঠেনা আমার,
বিচলিত মনকে সৃষ্টির রহস্য এখনও আচ্ছন্ন করে রাখে,
ভালবাসার শিশিরের সেই করুণ আর্তনাদ এখনও
প্রতিক্ষণে কর্ণকুহরে বাজে,
অভিশপ্ত সেই অনুভূতি আরও একবার তখন
স্রষ্টার প্রতিটা সৃষ্টিকে নাড়া দিয়ে যায়,
শুধু শিশিরের আর্তনাদগুলো
সেই চিরচেনা সুর নিয়ে আমার কাছে ফিরে আসে...
আমার আপন হয়ে, খুব বেশি আপন হয়ে...

Sunday, September 4, 2011

বিষাদ ছুঁয়েছে

বিষাদ ছুঁয়েছে আকাশ
শিশির জলে স্নান করছে ঘাস
চারদিকে পিন পিন নীরবতা
গাঢ় যামিনীর প্রগাঢ়তা
হবে কী আর বাসর
তারাভরা রাতে জ্যোছনার সাথে?
অভিমানী চাঁদে বসে নি আসর
বিজয়ের উল্লাসে এই মেঠোপথ হাসে।
তত্ত্ব আসে কুয়াশার খামে`মনে নাই?`
চন্দ্র-আকাশের হয়নি মিতালী
বিষাদ ছুঁয়েছে তাই।

Friday, September 2, 2011

স্বপ্নের মৃত্যু


আজ কাক ডাকা ভোরে
আমার স্বপ্নের মৃত্যু হল।

খারাপ লাগেনি তেমন
আবার
খুশিও হয়নি খুব।

অ-নে-ক পুরানো স্বপ্ন
লালন করেছিলাম খুব যতনে
বিষয়বস্তু ছাড়া উন্মাদ
হতাম তাঁকে নিয়ে।

স্বপ্নের প্রিয় পুষ্প টগর,
টগর আমার সম্মুখে
অবহেলা-অনাদরে প্রস্ফুটিত।
স্বপ্ন টগরেক আমার কাছে
উপস্থাপন করেছিল
স্বর্গীয় ফুল হিসেবে।

তারপর থেকে টগর
আমার কাছে বিস্ময়
আমার আবেগ
আমার বেঁচে থাকা।

তাই তো কোন এক ভোরে
টগর ঝরে পড়েছিল
আমার উঠোনে
স্বপ্ন ইতি টেনেছিল
আমার জীবন থেকে।

প্রয়োজন নেই ,,,,,,,,,,

যখন খুব করে মনে পড়ে,
মনে পড়ে
ও হাত ছুঁয়েছে হৃদয়
যখন খুব করে পেতে চাই,
কাছে পেতে চাই
কেন বলো ছুঁয়ো না আমায়।

আমি যেন সেই
হারানো কুসুম তরে
দহনে পোড়ানো অজানা প্লাবন
বাজে কেন বুক ভরে।

মেঘ ছুতে বারি আর
কিছু কী অজানা তোমার
হৃদয়ের দেনা ধার
সব বুঝি ফুরালো আবার।

বাড়ে জ্বালা আর দীর্ঘায়ত
ভুলের আঁচলে বেধে
স্বপ্নের ঘোলা জল চিরে
ফেলে দেই সাত নরি হার
প্রয়োজন নেই তা আমার।

অশ্রুসিক্ত ভালোবাসা

ভালোবাসবে বলে আমায়
দিয়েছিল একটি তাজা গোলাপ
সেটি সুরভিত গন্ধ ছড়িয়ে
মনকে খানিকটা দোলা দেয়।
মনের ঘরে হানা দিয়ে
সে খুঁজে পেল একজন যুবতীর
নগ্ন মানচিত্রে চষে বেড়ানো
ভ্রমরের যৌথ পর্নোগ্রাফী
আর ষোড়শীর একটি ছবি
চমৎকার সাজে হৃদয়ের আয়নায়
অবিকল তার মত অবয়বের
সে পড়ে গেল দারুন দোটানায়।
যে দেখতে হুবহু তারই মত
অথচ লুকিয়ে আছে হৃদয়ে সযত্নে কত!
পেল সে আরও কিছু কালো দাগ
সিগারেটের ধোঁয়া ফুসফুসে
সে আর পেল না কিছু!

তার হৃদয়ের উপলব্ধি ছিল কম
হয়েছিল তাই তার দৃষ্টিভ্রম
পায় নি সে খুঁজে আমার মনে
আমার অমূল্য স্মৃতি,ভালোবাসা
আমার বুক থেকে খসে যাওয়া
লক্ষ্মী জননী,যাকে আমি
এই ধরিত্রীর বুকে খুঁজে ফিরি নিশিদিন
শত ডাকেও মা আমার নীরব হয়ে থাকে
যার কথা মনে পড়লে
আমার দুচোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে যায়
যার দেওয়া অদৃশ্য সাহস ও উৎসাহে
আমি কবিতা লেখার স্বপ্ন দেখি
সেই আমার মাকে, সে খুঁজে পায় না
জানি না, কোন উপলব্ধিহীনতায়?