আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥ ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে, মরি হায়, হায় রে— ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥ কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো— কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে। মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো, মরি হায়, হায় রে— মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি॥ তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিলে রে, তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি। তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে, মরি হায়, হায় রে— তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি॥ ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে, সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে, তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে, মরি হায়, হায় রে— ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি॥ ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে— দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে। ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে, মরি হায়, হায় রে— আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ ব’লে গলার ফাঁসি॥ আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। Lyrics by: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর Music by: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Saturday, June 30, 2012

রাতের মিলন

রাত্রির অভিসারে
তোমাকে খোঁজে পাই স্বপ্নের ভীড়ে
তুমি স্পর্শহীন আলোকের মতোই
রাত্রির আধাঁর তাড়িয়ে
আমাকে সঙ্গ দাও।

কষ্টরা হামাগুড়িতে পালাতে গিয়ে-
আহত হয় নির্জন প্রান্তরে,
জীবন জীবনের সাগরে পাল তুলে
ছুটে চলে অনির্দেশ যাত্রায়।

হাওয়ায় হাওয়ায় ঢেউ তুলে
যৌবনের উন্মাদনায়
অশান্ত সাগরে সঙ্গমের নেশা
শান্ত প্রেয়সীর চুম্বনে, আলিঙ্গনে
রাত্রিরা পর্দা ফেলে স্বপ্নীল ভোরের।

দু’চোখে স্বপ্নরা আরো ভীড় করে
মুহুর্তরা আরো কাছেতে ডাকে
মিলনের সাত মোহনা খোঁজে .....

সৃষ্টির ঘোর গ্রহনে তলায় অপূর্ণতা।


_____________

ডেকে যায় রূপোলী রোদ্দুর

undefined
অদ্ভুত ছোট দুটো হাত, দুটো পা, পিটপিট করা চোখের পাতায় আদো আদো কাঁপন । অপার আঁধারি
মায়া হতে একরাশ আলোর সামনে এসে পড়লো । তখনও বিস্ময় ! ঘোর কাটে না যেন । মায়ের ঊষ্ণ
ও'মে জিরিয়ে নিলো কিছুক্ষন । কি সে তার কান্না ! সজোরে জানিয়ে দিলো -"ঐ আঁধারি মায়ায় ভাল ছিলাম আমি" ।


দুপুর গড়িয়ে নামলো বিকেল । আজ সে অনেক বড় হয়ে গিয়েছে । আর অনেক নিঃসঙ্গ যেন । মাঝে মাঝে ভাবে ---

সময়ের গতিটা যদি পেছনে ফিরিয়ে দেওয়া যেত
পথ ভুলে কিংবা মনের অজান্তে
চলে যেত অনেক দূরে;
যেখানে এক নিষ্পাপ বালিকা
পাড়ার সাথীদের খুঁনসুটি আর
বোনদের আড্ডায় হেসে কুটিকুটি মধ্যদুপুরে;
জোছনা রাতে জানালা-খোলা আকাশ পেরিয়ে
চাদের বুড়ির গল্প শুনতে শুনতে ঘুম চোখে
হাতছানি দেওয়া কতদূর বহুদূর।

বইয়ের কালো অক্ষর ঘোলাটে হয়ে এলে
আম্মু বলতেন" রাত জেগে পড়তে হয় না" ।
মিষ্টি অভিমান- খুব ভাল লাগত বলেই না
নিত্য রাত জেগে পড়ত ; লক্ষ্মী মা ।
টেবিল থেকে টেনে মুখে তুলে দিত খাবার
তারপর সোজা ঘুম; আহা কোথায় হারালো সেসব??

অথবা আরও দূরে
যেখানে ছয় বছরের খুকী
আম্মুর ছায়ায় ছায়ায় , আব্বুর আদরে
পড়ুয়া ভাইয়ের সোহাগ আর
বোনদের বকার ভিড়ে ।
ভাত-ঘুমে মায়ের পাহারা
সাথীদের খেলার আহ্বান
মন আনচান --আরও কত কি !

সন্ধ্যা হামাগুড়ি দিতে দিতে রাত এনে দিল--

সেই ...সেই মেয়ে আজ
ইট -পাথর - সুরকির দেয়ালের মাঝে
রাত জাগা ঘুম চোখে শুনতে পায়
ডেকে যাওয়া রুপোলী রোদ্দুর ।



__________________পাহাড়ী

হৃদয় কর্তন করতে তুমি অদ্বিতীয়!



তুমি আমার হৃদয় স্পর্শ করেছিলে
তোমার মোহনীয় রূপের কোমল নীরবতায়।
তোমার আদেশই ছিল আমার ইচ্ছা
যতক্ষণ পর্যন্ত তোমার দৌড় ছিল আমার ভালবাসায়।
আমি নিজেকে বলতে শিখেছিলাম
তোমার আমি কিম্বা আমি তোমার,
প্রত্যাশিত আমাকে পেলেই ভুলে যেতে
অন্য শত ব্যস্ততা!
আজ তুমি ভুলে থাক আমায়
ছুটে চল অতি দ্রুতগামী, ক্রমাগত ভুল ঠিকানায়!
অথবা তোমার আপন নীরবতায়, ইচ্ছা এবং কল্পনায়!
আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম-
হৃদয় কর্তন করবার সেরা অস্ত্রটি তোমার কাছে!!
তুমি আমার হৃদয় কেটে ফেলেছিলে অন্যত্র এবং জীবন!

আমি যখন প্রিয় বন্ধুদের সামনে
মিথ্যে হাসির ভান করি
আমি শঙ্কিত থাকি নিজেকে নিয়ে এবং ভীষণ!
এটা শুধু অভিনয় মাত্র
আর আমি এক রঙ্গ মঞ্চ!
দিনে রাতে আমি অসংখ্যবার ফিরে যায়
আমার তাৎপর্য-হীন ভণিতায়
কিন্তু কিভাবে!
কিভাবে পারি এই ছদ্মবেশ ধারণ করতে
আমার দুটি চোখ কি পারে!!
এ জেনেও -
হৃদয় কর্তন করতে তুমি অদ্বিতীয়!!

আমি কিভাবে পারি চিরতরে নিরাময় হতে
আমি গভীর ভাবাবেগে চমকিত হয়
তুমি সর্বদা আমার জীবন বিদীর্ণ করে
হৃদয়কে করেছ প্রয়োজনীয় খন্ডে চূর্ণ!
আমি অনাবরত চেষ্টা করেছি
সেই কষ্টের দুর্গ থেকে বেরিয় আসতে
আমার ভিতরে প্রচণ্ড কষ্ট অনুভূত হয়েছে,
তবু ব্যর্থতার বিদীর্ণ কষ্ট বারংবার
তোমাকেই চেয়েছে
এ কথা জেনেও
হৃদয় কাঁটতে পার তুমি এক নিঃশ্বাসে
আমি কিভাবে চিরতরে নিরাময় হব!
আমি গভীর ভাবাবেগে চমকিত হয় এবং দেখতে পায়
তুমি আমার জীবন বিদীর্ণ করে
হৃদয়কে করেছ কঠোর পদাঘাৎ!



____________আরমানউজ্জামান

জীবন যেমন

undefined
বেঁচে আছি বলেই তো মনে হয়,
এর চেয়ে বেশি কিছু প্রয়োজন
থাকার কথা তো নয়।

হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খাওয়া
তারপরে সামলে নেয়া
যেন সে প্রতিদিনেরই ঘটনা।
উঠে দাঁড়াতে পারছি আবার,
এই তো যথেষ্ট;পথ চলা থামানোর
কথা তো আর না।

জীবনের সাথে অভিমান,
ক্ষোভ, আক্ষেপের আস্ফালন;
ফলাফল শূন্যে শেষ।
কি দরকার এসবের তবে,
লাভের খাতায় বরং
শূন্যই থাকবে বেশ।

দিনভর তোষামোদের পর
শুনতে হয়, আরও চেষ্টা কর।
নিজের রাস্তা চেষ্টাতেই গড়ি,
দিনভর হাত কচলিয়ে মরি,
জীবনের এই বিচিত্র সৌন্দর্য!

তাই বেঁচে থাকার সুখে,
নয় সুখের মুখোশে
কণ্ঠ ছিঁড়ে চিত্‌কার করি
হর্ষে, আমোদে
নয়ত বিষাদে।
জীবনের এই তো শেষ নয়,
বেঁচে থাকার জন্যই
তাই বেঁচে থাকতে হয়।


____________ছদ্মবেশী

Thursday, June 28, 2012

হৃদয় কর্তন করতে তুমি অদ্বিতীয়!

undefined

তুমি আমার হৃদয় স্পর্শ করেছিলে
তোমার মোহনীয় রূপের কোমল নীরবতায়।
তোমার আদেশই ছিল আমার ইচ্ছা
যতক্ষণ পর্যন্ত তোমার দৌড় ছিল আমার ভালবাসায়।
আমি নিজেকে বলতে শিখেছিলাম
তোমার আমি কিম্বা আমি তোমার,
প্রত্যাশিত আমাকে পেলেই ভুলে যেতে
অন্য শত ব্যস্ততা!
আজ তুমি ভুলে থাক আমায়
ছুটে চল অতি দ্রুতগামী, ক্রমাগত ভুল ঠিকানায়!
অথবা তোমার আপন নীরবতায়, ইচ্ছা এবং কল্পনায়!
আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম-
হৃদয় কর্তন করবার সেরা অস্ত্রটি তোমার কাছে!!
তুমি আমার হৃদয় কেটে ফেলেছিলে অন্যত্র এবং জীবন!

আমি যখন প্রিয় বন্ধুদের সামনে
মিথ্যে হাসির ভান করি
আমি শঙ্কিত থাকি নিজেকে নিয়ে এবং ভীষণ!
এটা শুধু অভিনয় মাত্র
আর আমি এক রঙ্গ মঞ্চ!
দিনে রাতে আমি অসংখ্যবার ফিরে যায়
আমার তাৎপর্য-হীন ভণিতায়
কিন্তু কিভাবে!
কিভাবে পারি এই ছদ্মবেশ ধারণ করতে
আমার দুটি চোখ কি পারে!!
এ জেনেও -
হৃদয় কর্তন করতে তুমি অদ্বিতীয়!!

আমি কিভাবে পারি চিরতরে নিরাময় হতে
আমি গভীর ভাবাবেগে চমকিত হয়
তুমি সর্বদা আমার জীবন বিদীর্ণ করে
হৃদয়কে করেছ প্রয়োজনীয় খন্ডে চূর্ণ!
আমি অনাবরত চেষ্টা করেছি
সেই কষ্টের দুর্গ থেকে বেরিয় আসতে
আমার ভিতরে প্রচণ্ড কষ্ট অনুভূত হয়েছে,
তবু ব্যর্থতার বিদীর্ণ কষ্ট বারংবার
তোমাকেই চেয়েছে
এ কথা জেনেও
হৃদয় কাঁটতে পার তুমি এক নিঃশ্বাসে
আমি কিভাবে চিরতরে নিরাময় হব!
আমি গভীর ভাবাবেগে চমকিত হয় এবং দেখতে পায়
তুমি আমার জীবন বিদীর্ণ করে
হৃদয়কে করেছ কঠোর পদাঘাৎ!


____________________আরমানউজ্জামান

Tuesday, June 26, 2012

মেয়ে তুমি জাগো...

মেয়ে তুমি জাগো
আমি তোমার বন্ধ দরজায় কড়া নাড়তে চাই
নিবিড় কাষ্ঠে এঁকে দিতে চাই মুক্ত পারিজাত।
সে কোন সংরক্ষিত আসনের দোহাই দিয়ে নয়,
চাকুরী কিংবা উচ্চপদে কোটা নিশ্চিত করেও নয়।
মনের গভীরে আলো জ্বালিয়ে আমি তোমার
বদ্ধ পৃথিবীর দ্বার খুলে দিতে চাই।

হাতের পুতুল কেড়ে নিয়ে তুলে দিতে চাই বন্দুক
সাজানো খেলাঘর ধুলোয় মাড়িয়ে তোমার হাতে
তুলে দিতে চাই আমার খেলনা গাড়ি, উড়োজাহাজ।
পুতুলের মত নয়, তোমায় দেখতে চাই সাহসী বীরঙ্গনা রূপে।
বদ্ধ সংসারে আবদ্ধ নয়; তোমাকে দেখাতে চাই উন্মুক্ত আকাশ।

বিজ্ঞাপনের পণ্য করে নয়, রূপালী পর্দায়-
তোমার মায়াবী কায়া উন্মুক্ত করেও নয়।
উদ্ভট পোশাকে, নতুন ফ্যাশনে তোমার
অবিন্যস্ত তণু রাস্তায় দেখিয়ে নয়।
এসো, তোমার সুপ্ত মেধায় ভালবাসার জল ঢালি।
তুমি জাগো, ভাবনায় চেতনায় পরিপূর্ণ প্রস্ফুটিত হও ।

অবলা প্রেমিকা রূপে আমার বাহু শৃঙ্খলে বন্দী, বগল চাপা
নিয়ত আবেগাপ্লুত তরুনীর উন্মুক্ত হাসি দেখতে চাই না,
মাথা নিচু করে নয়, আমার কাঁধে কাঁধ রেখে চল।
নির্জন পার্কে বসে সুরসুরিতে খুনসুটি নয়,
এসো জীবনের পথে, এসো তোমার সাথে পাঞ্জা লড়ি।

তোমায় অন্ধকূপে বন্দী করে দিতে চাই না
বিলাসী অন্ন, জমকালো বস্ত্র, অট্টালিকা সুখ।
চাকুরীতে কোটা নয়, সংরক্ষিত কোন আসন নয়,
নয় কোন অনুগ্রহের লজ্জা।
হাত বাড়িয়ে আছি- তুমি উঠে এসো...... উঠে এসো
আমার ঐন্দ্রজালিক ভাবনার মূর্তিমান প্রতিমা হয়ে,
এসো সাজাই নতুন পৃথিবী- পারস্পরিক শ্রদ্ধায়,
গভীর ভালবাসায়। বন্ধু হয়ে, সহযাত্রী হয়ে......


_____________অনিন্দ্য অন্তর অপু

Sunday, June 24, 2012

উপমা

উপমা তোমায় কি দিবো আজ?
সব কিছু ছাড়িয়ে গেছ তুমি-
আমার আকাশের চাঁদ হয়ে
হাসছো তুমি আলো ছড়িয়ে,
তারাগুলো তোমায় ঘিরে - এলোমেলো হয়ে থাকে।
আজ এই দিনে নতুন সাজে
সেজেছ তুমি তোমার জন্মদিনে,
এই গান আজ আমার তোমার জন্মদিনের উপহার।।

প্রজাপতিরা সব উড়ছে - ঘুরছে
সুবাসিত সেই ফুল খুঁজছে,
মৌমাছিরা পথ হারালো
মুখে মধু নিয়ে ফুলটি কোথায় গেল?
ওরা বোকা, কেউ জানেনা - সেই ফুল তো আর বাগানে ফোটে না।
আজ এই দিনে নতুন সাজে
সেজেছ তুমি তোমার জন্মদিনে,
এই গান আজ আমার তোমার জন্মদিনের উপহার।।




____________________ফারহানা জামান লিজা

রক্তাক্ত হৃদয়


 


হৃদয়ের মাঝে প্রবল রক্তক্ষরণে
আন্তঃঅলিন্দ, আন্তঃনিলয় পর্দাটা
বুঝি ছিড়েই গেল, এতটা প্রবল
আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা যে
ছিল না........। বাহ্যিক অটল মূর্তিটা
দেখে কেউ কল্পনায় আঁকতেও পারেনি,
ভাবতেও শিখেনি অন্তরাত্না যে পুড়ে
পুড়ে ছারখার।

কতদিন রইবে এই বাহ্যিক খোলসটা?
জানে না কেউ..........।




____________জান্নাতী

আশান্বিতা

ভালোবাসার নীলকন্ঠে আমি কখনই সাধতে চাইনি অচেনা সূর-
গাঁথতে চাইনি স্মরণের মালা ভুলে যাওয়া ফুলের গুচ্ছ কুঁড়িতে
আষাঢ়ের ধ্রুপদী আমায় টেনেছে বারবার তোমারই বিশাল বুকে
কখনো ঝুমঝুম বর্ষার আলিঙ্গনে ,কখনোবা মেঘের ধূসর গর্জনে।

আমি শুনেছি বাতাসের গুঞ্জনে তোমারই না বলা সব কষ্ট-ব্যাথা
আমার হৃদয় গহিনে তোলপাড় করেছে হাওয়ার ছন্দভরা উত্তাল
আমি পরশ পেয়েছি তোমারই গভীর নিঃশ্বাসের প্রাণময় মায়ায়
কদম ফুলের প্রথম সুবাসে যখন মেতেছে অনাদর যাযাবর মন
উদাসী জানালা খুলে স্মৃতির ভেলায় ভেসেছি নিয়ে নিঃস্ব সময় !

সোদামাটির হিন্দোলে বাজে নুপুরের ধ্বনি-প্রহর কাটে নিরাশারই
দোলায়। অপেক্ষায় দেখি সূর্য উঠা ভোর মিতালীর ছায়াতলে,লুহাওয়ার
টানে অবিরাম ছুটে চলে; দুচোখ খুঁজে ফিরে স্নিগ্ধভরা কৃষ্ণচূড়ার দোর
নতুন সাজে সেজেছে ধরণী প্রেয়সীর দিঘীজল-আমি সেই পানে চেয়ে
থাকি মুগ্ধতার বাণী শম্বরে ভাসিয়ে; জানি আমি পাব তোমায় কোন
এক স্তব্ধক্ষণে ,অনন্তের সানায়ে আবার না হয় নতুন করে ।



_____________সেলিনা ইসলাম

নিরালাপে নারীলাপ

তুমি লতা হও
জড়িয়ে থাকো আমার জানালার পাশে থাকা কামিনী।
সারারাত মোহিত থাকি আমি কামিনীর কামঘ্রানে।

বৃষ্টি হও ইলশেগুড়ির মতো
সারাদিন ঝর ঝর করে ঝরো আমার উঠানে,
শিশুর মতো খেলা করো জমে থাকা কাঁদাজলে।

শুভব্রত হও, হৃদয়ের কাছে যাও
উপাসনা করো প্রভুর।

পার্বনের উৎসব হয়ে জ্বল জ্বল করে জ্বলো কৃষাণের চোখে
শিল্পীর রং-তুলি হয়ে ফোটে ওঠো নতুন সৃষ্টিতে, ক্যানভাসে।
মৃদু বাতাস হও
বয়ে যাও ঝির-ঝির
পুকুর পাড়ের বাশঝাড়ে।

করুণা করো
অনুরোধ শুনো
শুধু রঙ বদলিয়ো না ।।


_______________ডাঃ এনামুল হক এনাম

Sunday, June 3, 2012

প্রিয়স তুই

দেখেছিস প্রিয়স আজকের সন্ধ্যা তাঁরা?
আকাশের পূর্ব কোণে জ্বলছে মিটিমিটি-
জানিস তো প্রিয়স-
ভোরবেলা তার নাম হয় সুখতাঁরা-
সন্ধ্যা গণনে যে জানায় আঁধারের নিমন্ত্রণ
আবার ভোররাতে বলে যায় আলোর গল্পগাঁথা।
যেভাবেই তাকে ডাকিস না কেন
নিরুপম অস্তিত্ত্বতে সে একজনই।
তবু প্রিয়স বুঝি আমি সব-
তুই এখন অন্য আকাশের চাঁদ!

প্রিয়স দেখ ওই কালপুরুষ?
তীর ধনুকের মত!
ওই তীক্ষ্ণ ফলাতে বেঁধেছি হৃদয় জানিস তো!
কেটে টুকরো টুকরো হয়ে
সে বইয়েছে রক্তের বন্যা!
তবু তাই দিয়ে এঁকেছি কপোলের টিপ
প্রিয়স তুই কি দেখেছিস তো?
জানি তুই দেখবি না!
তুই যে এখন অসময়ের অমরীচিকা-




____________দীঘি

Saturday, June 2, 2012

মেয়ে একটু দাড়াও

এই মেয়ে, এই মেয়ে; এই....... শোন, একটু দাড়াও।
আহা ওদিকে নয়, এদিকে নয়, কোন দিকেই নয়;
আমি বিবেক বলছি, আমায় তুমি দেখতে পারবে না।
তুমি পার্কের ঐ বেঞ্চিটার উপর বস তো,
হাত থেকে ব্যাগের বোঝাগুলো নামাও, একটু স্থির হও।

ভয় পেয়ো না, তোমার অন্য দু’প্রেমিকের মত
আমিও তোমায় ভালবাসি, খুব ভালবাসি।
তোমায় আজ পরীর মত লাগছে। কপালে কালো
একটা টিপ পড়েছ দেখছি; অদ্ভুত মানিয়েছে তো তোমায়।
আচ্ছা, তোমার কি মনে আছে তোমার প্রথম প্রেমিক
সেই কিশোরী বয়স থেকেই পরম মমতায়
তোমার চুল বেঁধে কপালে টিপ পড়িয়ে দিত।
গলা জড়িয়ে কত্ত আদর নিতে তুমি, তোমার পায়ের নূপুরের
নিক্কণ ধ্বনিতে কত্ত খুশি হত তোমার প্রথম প্রেমিক।
ক’দিন আগেও তো জ্বর বাধিয়ে বিছানায় ছিলে তুমি,
তোমার প্রথম প্রেমিকের অস্থিরতা তুমি দেখ নি?
রাত জেগে কে তোমার মাথায় জলের পট্টি দিয়েছিল?

যে প্রেমিক গত বাইশ বছর ধরে নিঃস্বার্থহীনভাবে
তোমায় ভালবেসে এসেছে।
তোমার শৈশব, তোমার কৌশর, তোমার নিষ্পাপ যৌবনে
যে প্রেমিক তোমার কপালে প্রতিদিন চুমু খেয়ে এসেছে,
তোমার সব আল্লাদ, সব আবদার যে হাসিমুখে মিটিয়েছে।
সেই বাইশ বছরের প্রেমিককে ফেলে এক বছরের
প্রেমিকের হাত ধরে তুমি পালাতে পার না। পার কি?
প্রথম প্রেমিকের চেয়ে তোমার এই নতুন প্রেমিক
তোমাকে বেশি ভালবাসতে পারবে কি?
তোমার নতুন প্রেমিকের এত্ত বড় বুক আছে কি
যেখানে একই সাথে পাবে আদর, স্নেহ, মমতা আর ভালবাসা?

মনে রেখ মেয়ে, পৃথিবীর সব পুরুষ তোমাকে ফেলে
যেতে পারে; পৃথিবীর সব পুরুষকে তুমি ঘৃণা করতে পার।
কিন্তু হাজারটা আঘাত দিলেও তোমার ঐ প্রথম প্রেমিক তোমায় ফেলে যাবে না,
উনিই একমাত্র পুরুষ যাকে তুমি ঘৃণা করতে পারবে না।
শত আঘাত, শত লাঞ্ছনা শেষে তুমি ওর বুকেই ফিরে আসতে চাইবে।

আহা কাঁদছ কেন? উঠছ কেন? উল্টো পথে চললে যে?
যাও। ফিরে যাও। আমার মনে হয় তুমি ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছো।
কোন বাবা চায় না তার হাতে গড়া প্রাণের প্রিয়তমা কষ্ট পাক,
বাবা সন্তানদের কাছে খুব বেশি কিছু চায় না।
একটু ভালবাসা চায়, একটু শ্রদ্ধা চায়, একটু সম্মান চায়,
আর একটু বিশ্বাস। এগুলো কি খুব বেশি চাওয়া???




____________অনিন্দ্য অন্তর অপু

আরো কিছু দূর

মানুষের কতো যে অভিলাষ অপূর্ণ থেকে যায়,
কতো না গোপন সাধ মনে কাঁটা হয়ে বিঁধে রয় ।
কাঁটাবিদ্ধ মানুষ তবু ঘুমায় অকাতরে,
ঘুমের বিষ তার স্নায়ুকে অবশ করে দেয়
কখনো স্বপ্নে আকাঙ্ক্ষাগুলো ডানা মেলে ওড়ে-
প্রশ্নাতীত ভৌগোলিক সীমানার বাইরে
আকাশের দরজা খুলে...

মিছেমিছি দুঃখ করো না তুমি-
আমার না হয় কিছু সাধ
অপূর্ণই রইলো পড়ে,
না পাওয়ার বেদনা রইলো
পরম পাওয়ার কামনা হয়ে,
শুধু শুধু পথচাওয়া, কান পেতে বসে থাকা--
অসম্ভবকে বরণ করার নীরব তাড়না
আমাকে তাড়িয়ে না হয় নিলো
জীবনের শেষপ্রান্ত অবধি !
তবু তো একটা মানে দাঁড়ায়
খাওয়া-পরার বাইরে জীবন আরো কিছু দূর
হেঁটে তো যায়।
স্মৃতির দংশন নয়, নতুন ভালোবাসার খোঁজে
তৃষিত এ মন--


সব দুঃখ-বেদনা ছাড়িয়ে আমাকে সামনে
যেতে দাও
আরো কিছু দূর...........



______________আয়েশা আহমদ

কোনদিন আর

কোনদিন আর আসবনা বলে
আবার এসেছি এই
তারাভরা নক্ষত্রের তলে;
ফিরে আসতেই-
ভাবলাম একবার তোমাকে
ভালবেসে যাব শেষ বারের মত
ভাল করে দেখ চেন কি আমাকে?
বুক চিরে দেখ সেই ক্ষত
মুছে গেছে কিনা এই প্রাণ থেকে!
অনেক আঁধার পেরিয়ে অনেক এসেছে আলো
তবু তুমি ভালবেসে গেলে অচেনাকে
সেদিনও আমারে আজও আমারে বাসনিকো ভাল।

আমার প্রাণের মত ঘাসের প্রাণ আজ
মাঠের কুয়াশার মত হৃদয়
দিনমান হারায়ে গেলে বুঝি আকাশের সাঁঝ
এ পৃথিবীর সবটুকু আলো শুষে লয়;


জীবনের সত্য পাখিদেরও আছে
ক্লান্তির নিঃশ্বাসে দহে তারও প্রাণ
মাটির রক্তে আজ নদী মিশে গেছে
তবু তুমি জাগনিকো, শোননি হেমন্তের শেষ আহ্বান।।



________________কালপুরুষ